বিশৃঙ্খলার মুখোমুখি নতুন শিক্ষাক্রম, পৌঁছেনি সব বই (ভিডিও)
মুশফিকা নাজনীন, একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:০৯ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০২৩ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১২:১৬ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০২৩ বৃহস্পতিবার
প্রাক প্রাথমিকে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হলো ২০২৩ থেকে। কিছু স্কুল পেলেও এখনো সবার হাতে পৌঁছায়নি পাঠ্যপুস্তক। আবার শিক্ষকদেরও নেই প্রশিক্ষণ। সবমিলে গুবলেট অবস্থার মুখোমুখি সংশ্লিষ্টরা।
চলতি বছর থেকে প্রাক প্রাথমিকে শুরু হচ্ছে নতুন কারিকুলামের ক্লাস। যদিও বহু প্রতিষ্ঠানে পৌঁছায়নি বই, মেলেনি পর্যাপ্ত শিক্ষা উপকরণ। সঙ্গত কারণেই তাই পুরোনো নিয়মে চলছে পাঠদান।
জাহানাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মঈনিহা রুবাইয়া বলেন, “নতুন কারিকুলামে বাংলা, ইংরেজি এবং গণিতের বই পেয়েছে প্রথম শ্রেণীর শিশুরা।”
ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসি বলেন, “পুরনো যে কারিকুলাম ছিল সেটা দিয়ে পড়াচ্ছি।”
পাঠপ্রক্রিয়ার অবস্থা জানতে একুশের ক্যামেরা পৌঁছায় মিরপুর জাহানাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ময়মনসিংহ সদরের শিকারীকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কথা হচ্ছিল প্রথম শ্রেণীর শিক্ষকদের সঙ্গে।
শিক্ষকেরা জানান, নতুন কারিকুলামের প্রশিক্ষণ এখনও পাননি তারা।
ময়মনসিংহ শিকারীকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শারমিন আক্তার বলেন, “আমরা এখনও প্রশিক্ষণ পাইনি। যেভাবে আগে পড়াতাম সেভাবেই পড়াচ্ছি।”
শিকারীকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহানারা ফেরদৌসি বলেন, “নতুন কারিকুলামের প্রশিক্ষণের নির্দেশনা এখনও আমাদের কাছে আসেনি।”
ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহমুদুল হাসান বলেন, “কিছুটা তো সমস্যা হচ্ছেই। নতুন কারিকুলামের কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ এখনও আমরা পাইনি।”
কথা ছিল, গেল আগস্ট থেকে শুরু হবে নতুন পাঠ্যক্রমের প্রশিক্ষণ। প্রথম পর্যায়ে ৬৫ স্কুলের ৪শ’ শিক্ষককে কর্মোপযোগী করে তোলার প্রতিশ্রুতিও ছিল।
সরকার নির্দেশিত এক শিফটে পাঠদানের কার্যক্রমও শুরু করতে পারছে না অনেক স্কুল। শিক্ষকদের অভিমত, মাঠের অবস্থা যাচাই না করে শুধু নির্দেশিত হয়ে আইন বানালে শিক্ষাব্যবস্থার ভাটা কাটবে না।
শিকারীকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সিদ্দিকুন নাহার বলেন, “শিক্ষক স্বল্পতা এবং শ্রেণী কক্ষের স্বল্পতার কারণে এক শিফট চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।”
জাহানাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন মোল্লা বলেন, “ছাত্রছাত্রীরা নিতে পারছে কি পারছেনা, সেটা শিক্ষক ভালো বুঝতে পারবেন। এর সঙ্গে যারা জড়িত নয় তারা এটা বুঝতে পারবেন না। কাজেই রুটিনটা আমাদের কাছে থাকা উচিত।”
এনসিটিবি বলছে, শিগগিরই শুরু হবে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ।
এনসিটিবি প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের সদস্য প্রফেসর ড. একেএম রিয়াজুল হাসান বলেন, “এখনও আমরা চাহিদা চাইনি শিক্ষক সহায়কগুলো ছাপানোর জন্য। চাহিদা পেলে আমরা সেটা ছাপাবো। অন্যদিকে এই শিক্ষক সহায়কগুলো এ সপ্তাহের মধ্যেই অনলাইনে আপলোড করে দিব।”
কর্মকর্তাদের দাবি, নতুন কারিকুলামে প্রথম শ্রেণির ৮৫ শতাংশ বই স্কুলগুলোতে পৌঁছেছে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণীর বই যাবে ২০২৪ সালে।
প্রফেসর ড. একেএম রিয়াজুল হাসান বলেন, “২০২৩ সালে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীতে পুরনো কারিকুলাম চলবে। মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে আমাদের এনসিটিবির কোনো বক্তব্য নেই।”
এনসিটিবি বলছে, নতুন শিক্ষাক্রমে ক্লাস ওয়ান থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত থাকছে না কোনো পরীক্ষা। ৪ মাস অন্তর প্রযুক্তির মাধ্যমে করা হবে মূল্যায়ন।
এএইচ