ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

কলারোয়ায় কুমড়া বড়ি তৈরির ধুম

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০১:১৪ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০২৩ বৃহস্পতিবার

শীতের মৌসুমে সাতক্ষীরার কলারোয়ার বিভিন্ন এলাকায় কুমড়া বড়ি তৈরির ধুম পড়েছে। এটি একটি অনন্য মজাদার খাবার। সাধারণত তরকারিতে এই কুমড়া বড়ি দেয়া হয়। এতে তরকারির স্বাদ ও মান বৃদ্ধি পায়। 

চলমান শীতে কলারোয়ায় কুমড়া বড়ি তৈরি কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন গ্রামের নারীরা। কিছু কিছু স্থানে তাদের সাথে যোগ দিচ্ছেন পুরুষরাও। নিজেদের পরিবারের খাবারের জন্য এটি তৈরি করছেন। আবার এই শীত মৌসুমে বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে অনেক নারী ও পুরুষ কুমড়া বড়ি তৈরি করছেন। 

কুমড়া বড়ি তৈরি কাজে নিয়োজিত কয়েকজন নারী জানান, শীতকাল কুমড়া বড়ি তৈরীর ভরা মৌসুম। এ সময় প্রায় প্রতিটা বাড়িতে কমবেশি বড়ি তৈরি করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা বাজারে বিক্রি করাও হচ্ছে। 

তারা আরও জানান, কুমড়া বড়ি তৈরির প্রধান উপকরণ কলাইয়ের ডাল আর চাল কুমড়া। এর সঙ্গে দেওয়া হয় লবণসহ সামান্য মসলা। প্রতি কেজি কলাই ডালের সঙ্গে ৩ কেজির মতো কুমড়ার মিশ্রণে কুমড়া বড়ি ভালো হয়। 

প্রথমে কলাই ডাল রোদে শুকিয়ে যাঁতায় ভেঙ্গে পরিষ্কার করা হয়। সেই ডাল পানিতে ভিজিয়ে রেখে খোসা ছাড়িয়ে নিতে হয়। সাধারণত সন্ধ্যা থেকে রাতভর অর্থাৎ প্রায় ৫ থেকে ৬ ঘন্টা ডাল পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয়। পরে শিল-পাটায় সেই ডাল বাটা হয়। আর চাল কুমড়া পিচ করে কেটে কুড়ানিতে ঘষে মিহি করা হয়। 

এরপর দুটির মিশ্রণ হাত দিয়ে ফেনিয়ে কুমড়া বড়ির উপকরণ তৈরি করা হয়। এরপর মাঠ, বাড়ির আঙ্গিনা, ছাদ বা খোলা জায়গায় পরিষ্কার কাপড় বা নেটে সারি সারি বড়ি বসানোর পর সেই বড়ি ৩/৪ দিন একটানা রোদে শুকানো হয়। বড়ি শুকিয়ে গেলে পাত্রে সংরক্ষণ করা হয়। 

পৌর সদরের সাজিদা বেগম ও সালমা খাতুন জানান, ৩ কেজি কুমড়ার সঙ্গে ১ কেজি কলাইয়ের ডাল মিশ্রণে কুমড়া বড়ি ভাল হয়। আর ডাল ভালো হলে বড়ির স্বাদও ভালো হয়। এছাড়া অনেকে কুমড়া বড়ির সঙ্গে পেয়াজের মিশ্রণ দিয়ে থাকেন। প্রতি কেজি বড়ি তৈরি করতে পারিশ্রমিক হিসেবে ১০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। এতে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি আয় করা সম্ভব হচ্ছে।

অনেকে জানান, কুমড়া বড়ি তরকারির একটি মুখরোচক উপাদান। এতে তরকারির স্বাদে যোগ হয় নতুন মাত্রা। শীত মৌসুমে কুমড়া বড়ি তৈরি করে অনেক নারী বাড়তি আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন। তারা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে ইতিবাচক সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

এএইচ