ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষ্যে তুরাগ তীরে নিরাপত্তা জোরদার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০৫ পিএম, ১২ জানুয়ারি ২০২৩ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৮:২৭ এএম, ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ শুক্রবার

মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ ‘বিশ্ব ইজতেমা’ উপলক্ষ্যে টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার (প্রথম পর্ব উপলক্ষ্যে টঙ্গীতে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার পাশাপাশি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

পুরো ইজতেমা ময়দানকে তিনটি সেক্টরে ভাগ করে আগত লাখ লাখ মুসল্লিদের নিরাপত্তার লক্ষ্যে ইজতেমার ময়দানসহ আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ইজতেমা মাঠের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবার থেকে ৫ হাজার ৩০ জন পুলিশসহ র‌্যাব, সাদা পোশাকধারী বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য ও আনসার সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।

এছাড়া মুসল্লিদের নিরাপত্তার প্রয়োজনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরাও প্রস্তুত থাকবে। নিরাপত্তা জোরদার করতে র‌্যাবের কমিউনিকেশন উইং, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে ১৯টি প্রবেশপথসহ চারপাশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তিন শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে।

এছাড়াও থাকছে মেটাল ডিটেক্টর, নাইটভিশন গগল্স, বাইনোকুলার, বোম্ব ডিসপোজাল টিম, এন্টিটেরোরিজম ইউনিট, হেলিকপ্টার-নৌ টহল, কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি), ফরেনসিক টিম, সাইবার পেট্রোলিং, ডুবুরি দল, স্টাইকিং ফোর্স, এলআইসি, পিএইচকিউ, এপিসি, জলকামান।

এর পাশাপাশি যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্সের সদস্যরা পুরো ময়দান জুড়ে কড়া নজরদারি থাকবে। প্রতিটি খিত্তায় বিশেষ টুপি পরিহিত ও সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা সদস্যরা অবস্থান করবেন। তারা কোনো প্রকার সন্ত্রাসী তৎপরতার ইঙ্গিত পেলে বিশেষ সংকেতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তৎক্ষণিক অবহিত করবেন। আকাশপথ, স্থলপথ, নৌপথ ও রেলপথ  কঠোর নজরধারীর আওতায় থাকবে। আকাশ পথে টহল দিবে র‌্যাবের হেলিকপ্টার।

এদিকে, জিএমপি কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম জানান, ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে। সিসিটিভি ক্যামেরা, ওয়াচ টাওয়ার ও রুফটপ থেকে পুরো ইজতেমা ময়দানের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করা হবে। এ ছাড়া বিশেষায়িত টিমসহ প্রতিটি খিত্তায় সাদা পোশাকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। অগ্নিনির্বাপণের জন্য প্রতি খিত্তায় এবার দু’টি করে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রাখা হবে। তুরাগে নৌ টহল থাকবে।

তিনি আরও জানান, বিশ্বইজতেমা ময়দান ও আশপাশে ১৪টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ রয়েছে পুলিশের। র‌্যাবের হেলিকপ্টারে টহল থাকবে। এ ছাড়া ডগ স্কোয়াড টিম, মোবাইল পেট্রোল টিম, বোম ডিসপোজল টিম থাকবে।

এদিকে, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিনের উদ্ধৃতি দিয়ে "দি লাইফ সেভিং ফোর্স বাহিনী'' ঢাকা জোন-৩ এর উপ-সহকারি  পরিচালক  এবং টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. সফিক বাসসকে জানান,  এবারের বিশ্ব ইজতেমা সফল ও স্বার্থক করার লক্ষে টঙ্গী তুরাগ নদীর সুবিশাল  ইজতেমা ময়দানকে ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারলেস ফ্রিকোয়েন্সির আওতায় আনা হয়েছে।

তিনি জানান, ইতিমধ্যে টঙ্গীর তুরাগ পাড়ের বিশ্ব ইজতেমায় আগত দেশি বিদেশি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অগ্নিনিরাপত্তার জন্য ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পুরো ময়দানকে ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারলেস ফ্রিকোয়েন্সির আওতায় আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, অগ্নি দুর্ঘটনা মোকাবেলায় ময়দানের প্রতিটি খিত্তায় ফায়ার এক্সটিংগুইসার, ফায়ার হুক, ফায়ার বিটারসহ দু’জন করে ফায়ার ফাইটার দায়িত্ব পালন করবেন। ইজতেমা  মাঠের বিভিন্ন স্থানে ফায়ার সার্ভিসের ৩৬১ জন কর্মকর্তা ও ফায়ার ফাইটার মোতায়েন থাকবে।

তিনি  জানান, টঙ্গীর  তুরাগ নদীসহ ময়দানের চারপাশে ১৪টি পোর্টেবল পাম্প প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও ময়দানের বিভিন্ন স্থানে ৪টি পানিবাহী গাড়ি, রোগী পরিবহনে ৫টি এ্যাম্বুলেন্স, সহজে বহনযোগ্য স্পীড বোট, পিকআপে ডুবুরীদল, বেশ কয়েকটি টু হইলার, ১৩টি জেনারেটর  এবং  লাইটিং ইউনিট মোতায়েন থাকবে।

ময়দানে ফায়ার কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও টঙ্গী, উত্তরা ও জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনগুলো স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে।

ইজতেমার প্রথম চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর একটানা চার দিন মুসল্লিদের আসা যাওয়া করার ক্ষেত্রে বিরতি দিয়ে এরপর ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় পর্ব। উভয় পর্বেই আখেরি মোনাজাত অনুষ্টিত হবে বলে জানিয়েছেন ইজতেমা আয়োজক কমিটি।

সূত্র: বাসস

এসবি/