ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

নতুন একটা ইট ধারণ করার অবস্থায় নেই ঢাকা (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪৮ এএম, ১৫ জানুয়ারি ২০২৩ রবিবার

বায়ু দূষণে গেল কয়েকবছর ধরেই শীর্ষে ঢাকা। এর কারণ হিসেবে অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ, অনিয়ন্ত্রিত খোঁড়াখুড়ি, কাজের দীর্ঘসূত্রিতাসহ রয়েছে বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়হীনতা। বিষেশজ্ঞরা বলছেন, ঢাকাকে দূষণমুক্ত ও বসবাসযোগ্য করতে হলে প্রয়োজন দ্রুত সময়ে উন্নয়ন কাজ শেষ করা।

শীতকাল এলেই রাজধানীজুড়ে চলে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে রাস্তা খোঁড়াখুড়িসহ নানান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। কেটে রাখা রাস্তার ওপর দিয়েই চলে নানা পরিবহন। এতে ধূলায় ধূসর হয়ে ওঠে আশপাশের এলাকা।  

রাস্তায় চলাচলকারী ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, একবার রাস্তা খুঁড়লে তা আর সহসা ঠিক করা হয় না।

পথচারীরা জানান, রাস্তার স্পেস ছোট, চলাফেরা করতে কষ্ট। কয়েকদিন কাজ করার পর বন্ধ রেখে অন্য কাজ করে। এতে ধূলাবালি বাড়ছে, সেই সঙ্গে যানজটও দেখা দিচ্ছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য বলছে, সবচেয়ে অস্বাস্থ্যকর বায়ু তিলোত্তমা নগরীখ্যাত এই ঢাকায়। এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে এর মান ৩৮১। সংস্থাটি বলছে, এটি বছর জুড়ে থাকে ৩৪৫ থেকে ৪০৪ এর মধ্যে। এয়ার কোয়লিটি ইনডেক্সে ৩৭৭ স্কোর নিয়ে ২য় স্থানে রয়েছে রাজশাহী। আর ৩য় স্থানে গাজীপুর, এর স্কোর ৩৭৫।  

পরিবেশবিদরা বলছেন, অপরিকল্পিত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, ঠিকমত রাস্তার ধূলাবালি পরিষ্কার না করা এবং কাজের দীর্ঘসূত্রিতা দূর করা না গেলে বায়ু দূষণ কোনভাবেই কমানো সম্ভব নয়।  

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন-পবা’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবাহান বলেন, “সিটি কর্পোরেশন রাস্তা মেরামত করে আবার কোথাও কোথাও নতুন ফুটপাত করে। ঢাকা ওয়াসা তার ড্রেনেস-স্যুয়ারেজ লাইনের কাজ করে। এগুলো করতে গিয়ে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর পড়ে থাকে।”

নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, নির্মাণ বিধিমালা না মানা, এমনকি রাস্তা খোঁড়ার নিয়ম না মানার ফলে ধূলা-দূষণ কমছে না ঢাকায়। এর সঙ্গে রয়েছে খোলা জায়গার অভাবসহ নজরদারীতে গাফিলতি ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিরূপণ না করা। 

নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, “ব্যক্তিগত কনস্ট্রাকশন থেকে শুরু করে সরকারি কনস্ট্রাকশন, কোথাও কোনো ধরনের মেনে চলার বালাই নেই। ঢাকা শহরের যে কোনো রাস্তায় গেলে দেখা যাবে বালুগুলো খোলা পড়ে আছে। পরিকল্পনাবিদ হিসেবে আমি বলবো, এই শহর আরেকটা নতুন ইট ধারণ করার মতো অবস্থায় নেই।”
 
এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, রাস্তা খোঁড়ার সঙ্গে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভাবে ধূলা দূষণে ভোগেন নগরবাসী। 

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সিইও মো. সেলিম রেজা বলেন, “ওয়াসা, ডেসকো, ডিপিসিডি যাই বলুন আসলে পানি লাগবে, বিদ্যুৎ লাগবে। নগরীতে চাপ বাড়ছে, বহুতলবিশিষ্ট ভবন হচ্ছে। সুতরাং আন্ডারগ্রাউন্ডের পাইপতো বড় করতে হবে। এখন কেটে রাতের মধ্যে তো রাস্তা পাকা করতে পারবো না। কয়েকটা দিন সময় লাগবেই। অনেকগুলো ছোট ছোট ফ্যাক্টর একসঙ্গে হলে সময়টা বেড়ে যায়।”

ধূলা দূষণের ফলে শিশুসহ বয়ষ্করাও শ্বাসকষ্টের মত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

এএইচ