ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

জনসংখ্যা কমলো চীনের, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩৭ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার

২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে জনসংখ্যা কমলো চীনের। এর ফলে বিগত ৬ দশকে প্রথমবারের মতো জনসংখ্যা সঙ্কুচিত হলো বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশটিতে। এমন পরিস্থিতিতে চীনে ডেমোগ্রাফিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

চীনে কর্মক্ষম জনসংখ্যা ক্রমেই কমছে। রেকর্ড সংখ্যায় কমে গেছে জন্মের হার। এর প্রভাব সরাসরি চীনের অর্থনীতির ওপর পড়তে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। 

২০২২ সালে চীনা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ৩ শতাংশ। গত চার দশকে যা সবচেয়ে কম। অবশ্য এই পরিসংখ্যানের নেপথ্যে জনসংখ্যার চেয়ে কোভিডের ভূমিকাই বেশি। কিন্তু চীনের জন্ম হার এবং কর্মক্ষম নাগরিকের সংখ্যার গ্রাফ যদি নিম্নমুখী থাকে, তবে অদূর ভবিষ্যতে এটাই হয়ে উঠবে অর্থনৈতিক সংকটের মূল কারণ।

চীনের সরকারি হিসেব বলছে, ২০২২ সালের শেষে দেশটির জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১৪১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার। বেজিংয়ের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) জানিয়েছে, ২০২১ সালের শেষের তুলনায় এই সংখ্যাটা সাড়ে ৮ লাখ কম। 

চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশটিতে জন্ম নিয়েছে ৯৫.৬ লাখ শিশু। বিপরীতে মৃত্যু হয়েছে ১.০৪ কোটি মানুষের। 

এর আগে ১৯৬০ সালে শেষবারের মতো জনসংখ্যা কমেছিল চীনে। সেবারই আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হয় চীন। মাও সে তুং এর কঠোর নীতির কারণেই সেই দুর্ভিক্ষ হয় বলে দাবি করা হয়।

চীনের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিই দেশটির বিপুল জনসংখ্যা। কম খরচে প্রচুর কর্মীর চাহিদা মেটাতে চীনে হাজির হয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উৎপাদনকারী সংস্থা। কিন্তু কঠোর জন্মনিয়ন্ত্রণ আইনের প্রভাবে বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই চীনে জন্মহার আগের মতো বেশি ছিল না। এই আবহে হঠাৎ জনসংখ্যা অনেকটা কমে গেলে তার প্রভাব পড়তে পারে অর্থনীতিতে। 

জনসংখ্যার বিস্ফোরণ ঠেকাতে ১৯৭৯ সালে এক সন্তান নীতি চালু করে চীন। কঠোর সেই নীতি থেকে সরে এসে ২০১৬ সালে দুই সন্তানের অনুমতি দেওয়া হয়। পরে ২০২২ সালে এসে চীনের পলিটব্যুরোতে জন্ম নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ আরও কিছুটা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানানো হয়, এখন থেকে তিন সন্তানের জন্ম দেওয়ার অনুমতি পাবেন চীনা দম্পতিরা।

এদিকে গতবছর ডাও জোনস এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে দাবি করে যে, ২০২৫ সালের মধ্যে জন্ম নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সমস্ত বিধিনিষেধ তুলে নেবে চীন। রিপোর্টে দাবি করা হয়, যেসব প্রদেশে জন্মের হার কম, সেসব স্থানে আগে এই বিধিনিষেধ তোলা হবে। পরে ২০২৫ সালের মধ্যে পুরো বিধিনিষেধ শিথিল করে দেওয়া হবে। 

বর্তমানে চীনের কর্মক্ষম জনতার সংখ্যা গত দশকগুলোর তুলনায় অনেকটাই কমে গেছে। বিপরীতে বেড়ে গেছে ৬৫ বছরের ওপরের বয়সীদের সংখ্যা। সেই কারণে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরো জন্ম নিয়ন্ত্রণের ওপর থেকে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।

এনএস//