ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

৬ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বন্ধ, বন্ধের পথে আরও ১২টি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৪১ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ বৃহস্পতিবার

শিক্ষা কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত না করায় দেশের ১৮টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। এর মধ্যে চারটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখার পাশাপাশি অন্য দুইটির অস্থায়ী ক্যাম্পাসে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত না হলে ১ এপ্রিল থেকে আরও ছয়টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে কমিশন। ১ জুলাই থেকে বাকি ছয়টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বন্ধ করা হবে বলে হুঁশিয়ার করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার ইউজিসির জারি করা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। 

জানা গেছে, সাময়িক সনদের মেয়াদ উত্তীর্ণ এবং নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে সব কার্যক্রম স্থানান্তরিত হতে ব্যর্থ হওয়া ১৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে এ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কমিশন।

নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের নির্দেশ দেয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, আশা ইউনিভার্সিটি ও ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত না হওয়া পর্যন্ত সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে ইউজিসি। নির্ধারিত সময়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে সব কার্যক্রম স্থানান্তর ও ক্যাম্পাস নির্মাণে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দেশের চারটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। 

ইউজিসি জানিয়েছে, স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়া অস্থায়ী ক্যাম্পাসে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে। তবে, এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে পরিচালিত প্রোগ্রামগুলো যথারীতি চালু থাকবে।

ইউজিসি আরও জানিয়েছে, স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সব কার্যক্রম স্থানান্তরে ব্যর্থ হলে ১ এপ্রিল থেকে ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ হবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি, সিটি ইউনিভার্সিটি, দ্য মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি। 

কমিশন বলছে, স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর ও ক্যাম্পাস নির্মাণের বিষয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি বিবেচনায় এ ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সম্পূর্ণ কার্যক্রম স্থানান্তরে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সব কার্যক্রম স্থানান্তরে ব্যর্থ হলে ১ এপ্রিল থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়া সব অস্থায়ী ক্যাম্পাস বা ভবনগুলো অবৈধ বলে বিবেচিত হবে।

ইউজিসিসি জানিয়েছে, স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম স্থানান্তরে ব্যর্থ হলে ১ জুলাই থেকে আরও ছয়টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ হবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, গ্রিন ইউনিভার্সিটি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি এবং দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটি। 

ইউজিসি বলছে, স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর ও ক্যাম্পাস নির্মাণের বিষয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি এবং লিখিত অঙ্গীকার বিবেচনায় স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সম্পূর্ণ কার্যক্রম স্থানান্তরে এ ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়কে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সম্পূর্ণ কার্যক্রম স্থানান্তরে ব্যর্থ হলে এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ১ জুলাই থেকে সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। একইসঙ্গে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়া সব অস্থায়ী ক্যাম্পাস বা ভবনগুলো অবৈধ বলে বিবেচিত হবে।

ইউজিসি আরও জানিয়েছে, সাময়িক সনদের মেয়াদ উত্তীর্ণ ও স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়নি এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের জন্য গত ১১ এপ্রিল বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন নির্দেশনা দেয়। ওই পত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরে ব্যর্থ হলে ১ জানুয়ারি থেকে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি থাকবে মর্মে বলা হয়েছিলো।

উল্লেখ্য, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১২ বছরের মধ্যে নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে সব কার্যক্রম স্থানান্তরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়া আইনের ১২(১) ধারায় ‘কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে বা, ক্ষেত্রমত, নবায়নকৃত সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে সনদপত্রের জন্য আবেদন করিতে ব্যর্থ হলে, অথবা সনদপত্র প্রাপ্তির জন্য ধারা ৯ এর কোন শর্ত পূরণে ব্যর্থ হইলে, এ সাময়িক অনুমতিপত্র বা, ক্ষেত্রমত, নবায়নকৃত সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদ অবসানের সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও শিক্ষা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ করিতে হইবে’ বলে উল্লেখ রয়েছে।

এমএম/