ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

শহীদ আসাদ দিবস আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:২৭ এএম, ২০ জানুয়ারি ২০২৩ শুক্রবার

আজ ২০ জানুয়ারি শহীদ আসাদ দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এটি তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন। ১৯৬৯ সালের এদিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের রাস্তায় ছাত্র-জনতার মিছিলে সেসময়ের পুলিশ গুলি চালায়।

সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত এবং আহত হন আরো অনেক। শহিদ আসাদের এই আত্মত্যাগ চলমান আন্দোলনে যোগ করে নতুন মাত্রা।

বাঙালির স্বাধিকারের দাবিতে সোচ্চার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ জেল-জুলুম উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে আসে। পর্যায়ক্রমে আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর আকার ধারণ করে, যা পরবর্তীতে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়।

দিবসটিকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বাণী দিয়েছেন। এছাড়া, দিবসটিকে কেন্দ্র করে প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, “গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে শহীদ আসাদের আত্মত্যাগ দেশের গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।” শহীদ আসাদ দিবস উপলক্ষে আজ এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, “২০ জানুয়ারি, শহীদ আসাদ দিবস’। দেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় একটি দিন। ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি তৎকালীন পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে দেশের ছাত্র সমাজের ১১-দফা দাবির মিছিলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন ছাত্রনেতা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ওরফে আসাদ।”

শহীদ আসাদকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে শহীদ আসাদ একটি অমর নাম। ঊনসত্তরের গণআন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদের আত্মত্যাগ আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে। স্বাধিকারের দাবিতে সোচ্চার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ জেল-জুলুম উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে আসে।”

পৃথক বানীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “শহীদ আসাদের আত্মত্যাগ সবসময় আমাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে প্রেরণা জোগাবে।”

তিনি বলেন, “পাকিস্তানি শাসকদের বৈষম্যমূলক আচরণ, নির্যাতন এবং দমন-পীড়নে বাংলার মানুষ যখন দিশেহারা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ছয়-দফা তখন বাঙালির মুক্তির দিশারি হিসেবে আবির্ভূত হয়। ছয়-দফা হয়ে ওঠে বাঙালির প্রাণের দাবি।”

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘ছয়-দফার পক্ষে প্রবল জনমতের জোয়ার দেখে আতঙ্কিত সামরিক জান্তা আইয়ুব খান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করে, যা ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’ নামে সমধিক পরিচিত। বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ঘোষিত ছয়-দফা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতির স্বাধীনতা আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পরিণত হন নিপীড়িত ও নির্যাতিত বাঙালির মুক্তির মূর্ত প্রতীকে।’

১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি বাঙালি ছাত্রদের ১১ দফা কর্মসূচির মিছিলে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে জীবন দেন ছাত্রনেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র আসাদুজ্জামান। আসাদ শহীদ হওয়ার পর তিন দিনের শোক পালন শেষে ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের ছয় দফা ও ছাত্রদের ১১ দফার ভিত্তিতে সর্বস্তরের মানুষের বাঁধভাঙা জোয়ার নামে ঢাকাসহ সারা বাংলার রাজপথে। সংঘটিত হয় উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান। পতন ঘটে আইয়ুব খানের।

এদিকে, আসাদ দিবসকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সমাবেশ করবে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। ‘শহীদ আসাদ ও ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান করবে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
এসএ/