ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন আছে শুধু নেই বাস্তবায়ন (ভিডিও)

শাকেরা আরজু, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৩৭ এএম, ২২ জানুয়ারি ২০২৩ রবিবার

শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন আছে। রয়েছে উচ্চ আদালতের রায়ও, শুধু নেই বাস্তবায়ন। মাঝ থেকে মাত্রাতিরিক্ত ক্ষতি হচ্ছে জনস্বাস্থ্যের।

ঘটনা ক’দিন আগের। উচ্চ আদালতে মামলার শুনানী চলছিল। এমন সময় প্রচণ্ড শব্দ ভেদ করে এজলাস কক্ষ। বিরক্ত হন বিচারপতিসহ অন্যরা। শেষতক বন্ধ করে দেয়া হয় কোর্টের দরজা। কিছু সময়ের জন্য বন্ধও থাকে বিচার কাজ। 

অনেক আগেই হাইড্রোলিক হর্ন নিষিদ্ধ করে শব্দ দূষণ বন্ধের রায় দিয়েছিল উচ্চ আদালত। তাতে কোনো কাজ হয়নি। এবার উচ্চ আদালতে শব্দ দূষণ বন্ধে প্রাঙ্গণ জুড়ে রঙিন প্ল্যাকার্ড দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 

অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, “উচ্চ শব্দে মাইকে বক্তব্য রাখার কারণে আদালতের কাজে ব্যাঘাত ঘটে। কর্তৃপক্ষ যারা অনুমতি দিবেন তারা কোনো ওয়ার্কিং ডেতে অনুমতি দিবেন না। মানুষকে এ সম্পর্কে জানানো, অবগত করানো গেলে অবশ্য তারা এটা থেকে বিরত থাকবেন।”

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসের গবেষণা বলছে, পেশাজীবীদের মধ্যে কানের সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ভুগছেন রিকশাচালকরা। ৪১.৯ শতাংশ চালক আক্রান্ত কানের রোগে। এর পরের অবস্থানে আছে ট্রাফিক পুলিশ। 

রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, “সিটি কর্পোরেশনের মোবাইল কোর্ট বলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মোবাইল কোর্ট, যে কোনো মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে শাস্তি দিতে পারবেন। তাৎক্ষণিকভাবে যদি শাস্তি দেওয়া না হয় তাহলে এটা রোধ করা সম্ভব হবেনা।”

হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতের পাশের ১০০ মিটার পর্যন্ত নিরব এলাকা ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আবাসিক এলাকায় রাত নটা থেকে ভোর ছটা পর্যন্ত শব্দের মাত্রা থাকার নিয়ম ৪৫ ডেসিবেল। কিন্তু কে শোনে কার কথা।

আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, “২০০৬ সালে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালায় নির্দেশ করা আছে কোন জায়গায় কতটুকু হবে, আবাসিক এলাকায় কতটুকু হবে, কমার্শিয়াল এলাকায় কতটুকু হবে। এখন এটা তো চলছে না। যে মাত্রা দেওয়া আছে তার চেয়ে তিনগুণ বেশি।”

রিটকারী আইনজীবী মনির লিংকন বলেন, “সে কতটুকু শব্দ ব্যবহার করতে পারবে, হর্নের মাত্রা কতটুকু তা নির্ধারণ করা আছে।”

নির্মাণ কাজের জন্য ইট বা পাথর ভাঙা নিষেধ রয়েছে আবাসিক এলাকায়। কিন্তু মেশিনের শব্দে রাতের ঘুম হারাম অনেক এলাকায়।

কানে কম শোনা, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, খিটখিটে মেজাজ, অনিদ্রাসহ অনেক রোগের কারণ এই উচ্চ শব্দ। 

সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের চেয়ারম্যান শাজাহান কবির হুমায়ুন বলেন, “মাথা ধরা, কানে শব্দ হওয়া, খিটখিটে মেজাজ, পেটে আলসার, অনিদ্রা, মানসিক উত্তেজনার মতো সমস্যার সৃষ্টি হয়। যাতে সামগ্রিকভাবে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পরিবেশ ব্যাহত হয়।”

শব্দ দূষণ করলে যন্ত্রপাতি জব্দ করা, এক মাসের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান থাকলেও তার কোনোই বাস্তবায়ন নেই। 

এএইচ