ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

তামাক চাষে ভাটা, রবিশস্য আবাদে ঝুঁকছেন কৃষক (ভিডিও)

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া থেকে

প্রকাশিত : ০৩:৪২ পিএম, ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ সোমবার

কুষ্টিয়ায় এবার বিষবৃক্ষখ্যাত তামাক চাষে ভাটা পড়ছে। লাভ-লোকসানের হিসেব কষে তামাক ছেড়ে রবিশস্য আর ফলমূল আবাদে ঝুঁকছেন কৃষক। 

কয়েক বছর আগেও শীত মৌসুমে কুষ্টিয়ার মিরপুর ও দৌলতপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলি জমিতে আবাদ হতো শুধুই তামাকের। তবে লাভ-ক্ষতির হিসেব আর সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ দুয়ে মিলে দৃশ্যপট বদলাতে শুরু করেছে। 

মিরপুরের বারুইপাড়া ইউনিয়নের বলিদাপাড়া গ্রামের কৃষক তুহিন হোসেন কয়েক বছর আগেও তামাক আবাদ করতেন। সেই জমিতে কুলের বাগান করেছেন তিনি। তামাক আবাদে যা আয় হতো তার তুলনায় কয়েক গুণ আয় বেড়েছে তুহিনের। 

কুল চাষী তুহিন হোসেন বলেন, “তামাক চাষে আমার কোনো লাভ হয় না, বরং জমির ক্ষতি হয়। তারপর কুল চাষ শুরু করি।”

তুহিনের মতোই তামাক ছেড়ে সবজি আবাদ করছেন কৃষক ফারুক হোসেন। কমেছে পরিশ্রম, বেড়েছে আয়। 

সবজি চাষী ফারুক হোসেন বলেন, “তামাক চাষে ৬-৭ মাস পরিশ্রম করতে হয়, বউ-ছেলেপেলে নিয়ে খুব প্রেশান থাকতে হয়। কোম্পানি খরচ দিয়ে আবাদ করায়, পরে তারা ভালো মূল্য দেয়না।”

কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় বেসরকারি সেচ্ছাসেবি সংস্থা দিশার প্রচারণায় অনেক কৃষকই এখন তামাক আবাদ ছেড়ে সবজি ও ফল আবাদে ঝুঁকছেন। 

কৃষকরা জানান, তামাক চাষের চেয়ে ভুট্টায় লাভ বেশি হচ্ছে। তামাকে বাড়িতে সমস্যা, ছেলেমেয়ের সমস্যা হচ্ছে।

তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব কৃষকরা বুঝতে পেরেছেন বলেই দৃশ্যপটও বদলাচ্ছে।

মিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, “ফল, ভুট্টা, শীতকালীন সব্জি, সরিষা চাষে নিয়ে আসার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করছে। পাশাপাশি কিছু বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবি সংগঠনও কাজ করছে।”

আর তামাক আবাদ কমে আসায় স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাবও কমছে।

দিশা’র কৃষিবিদ জিল্লুর রহমান বলেন, “সারাবছর চাষের জন্য এক বিঘা জমিতে তাদেরকে বীজ, সার, ট্রেনিং এগুলো আমরা দিচ্ছি।”

গত বছর মিরপুর উপজেলায় ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে তামাক আবাদ হলেও এ বছর আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৩৯৫ হেক্টর জমিতে। যা আগের বছরগুলোর তুলনায় প্রায় ১৫ ভাগ কম। 

এএইচ