ঢাকা, শনিবার   ১২ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২৬ ১৪৩১

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ছিল মুক্তিযুদ্ধের মহড়া (ভিডিও)

ফারজানা শোভা, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪১ এএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:৫৯ এএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ছিল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মহড়া। গণঅভ্যুত্থানের ফলে বাঙালির জাতীয় জাগরণ ও স্বাধিকার আন্দোলনের গতি তীব্র হয়। ১৯৬৯ সালের এই দিনে তৎকালীন পাকিস্তানের স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে প্রধান আসামি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব আসামিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। 

ঔপনিবেশিক পাকিস্তানি শাসন-শোষণ ও বঞ্চনা থেকে বাঙলার মানুষকে মুক্ত করতে ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ৬ দফা ঘোষণা করেন বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। 

স্বাধিকার আন্দোলনকে নস্যাৎ করার হীন উদ্দেশ্যে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। মামলায় বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দেশব্যাপী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা দুর্বার ও স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন গড়ে তোলে।

আন্দোলন মোড় নেয় পাকিস্তানি সামরিক শাসন উৎখাতের দাবিতে। ৪ঠা জানুয়ারি সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ৬ দফাকে অন্তর্ভুক্ত করে ঐতিহাসিক ১১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করে। সেই আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন আসাদ। পরে ১৭ জানুয়ারি ছাত্রনেতারা সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দিলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খান আন্দোলন দমনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে।

২০ জানুয়ারি গুলিবিদ্ধ হন আসাদ। তার রক্তমাখা শার্ট নিয়ে তাৎক্ষণিক মিছিলে বের করে ছাত্ররা। ২১, ২২, ২৩ জানুয়ারি শোক পালন করে সারাদেশ। আন্দোলন পরিপূর্ণ গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়।

৬৯-এর ২৪ জানুয়ারি সান্ধ্য আইন ভঙ্গ করে সাধারণ জনতা মিছিল বের করে। সেই মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণে শহীদ হন নবম শ্রেণীর ছাত্র মতিউর রহমানসহ ২ জন।

আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক রাশেদ খান মেনন বলেন, “আসাদের মৃত্যু ছিল একটা রাজনৈতিক মৃত্যু।  অর্থাৎ একজন রাজনৈতিক সচেতন ছাত্রকর্মী যে নিজেকে বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত ছিল, এমন একজন ছাত্রকর্মীর মৃত্যু। স্বাভাবিকভাবেই প্রচণ্ডভাবে আলোড়ন তুলেছিল। আসাদের মৃত্যু অগ্নিশলাকার মধ্যে আগুনটা ঢেলে দিল। ২৪ জানুয়ারি ঢাকা শহরে এমন কোনো মানুষ ছিলনা যারা রাস্তায় নামেনি।”

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে প্রধান আসামি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব আসামিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী।

মহান স্বাধীনতা অর্জনের পূর্বপ্রস্তুতি স্পষ্ট করেছিল এই গণঅভ্যুত্থান। 

রাশেদ খান মেনন বলেন, “ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান না হলে ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ সম্ভব হতো না। গণঅভ্যুত্থান ছিল মুক্তিযুদ্ধের ড্রেস রিয়ার্সাল। এই প্রথম আমাদের দেশের শ্রমিকরা রাজনৈতিক আন্দোলনে সামিল হলো, কৃষকরাও প্রথম রাজনৈতিক আন্দোলনে সামিল হলো এবং এটাই ক্ষেত্র প্রস্তুত করলো ৭১’র মুক্তিযুদ্ধের।”

এএইচ