ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপির প্রধান শত্রু জনগণ: শেখ পরশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩২ পিএম, ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ শনিবার | আপডেট: ০৮:৩৭ পিএম, ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ শনিবার

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না, মানবাধিকারের কথা মানায় না। আপনাদের হিংসাত্মক রাজনীতি আর সন্ত্রাসের কারণে নতুন প্রজন্ম রাজনীতি করতে চায় না। 

তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপির প্রধান শত্রু এদেশের সাধারণ জনগণ। 

শনিবার (২৮ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত শান্তি সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পরশ বলেন, এ বছরটা নির্বাচনের বছর। আমাদের রাজপথে থাকতে হবে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। শুধু নেতা-কর্মী দ্বারা আবর্ত থাকলে চলবে না, আমাদের চলে যেতে হবে সাধারণ মানুষের কাছে। গত ১৪ বছরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার যে অর্জন, সেই অর্জনের কথা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। যদি সাধারণ মানুষ উন্নয়নের সুফল না পায়, তাহলে সেই উন্নয়নের কোনো মূল্য থাকে না। যখন আমাদের সব উন্নয়নের সুফল সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারবো, তখনই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে বলে আমি মনে করি।

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, সবসময় এদেশের সাধারণ মানুষকে আপনাদের ষড়যন্ত্রের শিকার বানান, হত্যার শিকার বানান এবং আপনাদের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের শিকার বানান। যারা একাত্তরে হাতিয়ার তুলে নিয়েছিল এদেশকে স্বাধীন করার জন্য, একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আপনারা বার বার তাদেরকেই আক্রমণ করেন। আওয়ামী লীগ আপনাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে আসে বলেই আওয়ামী লীগের সাথে আপনাদের বিরোধ ঘটে।

তিনি এসময় যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যুবলীগের ভাই ও বোনেরা, আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন, আপনারা ধৈর্যশীল থাকবেন। ওদের কৌশল আমাদের সন্ত্রাস হিসাবে উপস্থাপন করা। ওরা পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া করতে চাবে। আপনারা ওদের ফাঁদে পা দেবেন না। কিন্তু রাজপথ আমরা ছেড়ে দেব না। ভুলে যাবেন না, ওরা কিন্তু দিনকে রাত এবং রাতকে দিন বানাতে বড় পারদর্শী। মিথ্যার ওপরেই এই দলটার সৃষ্টি। ওরা জাতির পিতার নাম মুছে ফেলেছিল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছিল। সুতরাং মিথ্যা চর্চার ক্ষেত্রে এই দলকে দুর্বল ভাবার কোনো সুযোগ নাই।

যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাড. তারানা হালিম প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে লে. কর্নেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যখন বাংলাদেশের জিডিপি সিংগাপুর, মালয়েশিয়ার উপরে, যখন বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ, ঠিক সেই মুহূর্তে বিএনপি-জামাত বাংলাদেশকে পিছনের দিকে নেওয়ার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র করছে। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এশিয়ার ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক তারা সবাই ভবিষ্যৎ বাণী করেছেন, বাংলাদেশ যেভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যদি এভাবে এগিয়ে যায়, তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৭তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে। আর এটা সম্ভব কেবল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে।

তিনি এসময় যুবলীগের উদ্দেশ্যে বলেন, বিএনপি-জামাত আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা নানা ধরণের মিথ্যা প্রচারণা ও গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছেন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্রতিটি জেলায়, উপজেলায়, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এবং ইউনিটে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। বলতে হবে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয় নাই, বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আপনারা শেখ হাসিনার পাশে থাকুন, নৌকার পাশে থাকুন, নৌকায় ভোট দিন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাড. তারানা হালিম বলেন, যারা স্যাংশন নিয়ে কথা বলেন, তাদের দলের প্রধান খালেদা জিয়া তৎকালীন আমেরিকার পরারাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে স্যাংশন চেয়েছেন। যাতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে, দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়, খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয়, বেকার সমস্যা বৃদ্ধি পায়, মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে এটাই হলো বিএনপির আসল চেহেরা। তারা কখনই এদেশের মানুষের ভালো চায়না। 

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অভিজ্ঞতা আছে কিভাবে অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে তোলা যায়। সামনের যে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কথা বলা হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশ তা কাটিয়ে উঠতে পারবে। আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিলে বঙ্গবন্ধুকন্যা তার দূরদর্শী নেতৃত্বে একটি উন্নত সুখীসমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবে।

সঞ্চালকের বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, এই ঢাকার রাজপথে আপনারা পোস্টার হয়েছেন, নূর হোসেন, ফাত্তাহ বাবুল হয়েছেন। তারপরেও দেশের স্বার্থে সংগঠনের স্বার্থে, বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার প্রশ্নে যুবলীগ আপোস করে নাই, যুবলীগ আপোস করতে জানে না। 

তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যেমনি করে বিগত দিনে কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে রাজপথ আগলে রেখে প্রিয়নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে মানুষের কল্যাণে, মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য আপনারা সব সময় কাজ করেছেন। আগামী নির্বাচনেও সেই সাহসীকতা আর বীরত্বের সাথে রাজপথে থাকবেন। বিএনপি-জামাতের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আবারও রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে ঘরে ফিরবেন।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. হাবিবুর রহমান পবন, মো. নবী নেওয়াজ, ইঞ্জিনিয়ার মৃণাল কান্তি জোদ্দার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, জহির উদ্দিন খসরু, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. জহুরুল ইসলাম মিল্টন, ত্রাণ ও সমাজকল্যান সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মোস্তাফিজ, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. হারিছ মিয়া শেখ সাগর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মো. আব্দুল মুকিত চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।

এনএস//