ডিএনএ টেস্ট কী এবং এই টেস্ট কতটা সঠিক?
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:০৪ পিএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ রবিবার
ছোটবেলা থেকে টিভির পর্দায় ডিটেকটিভ গল্প দেখে বড় হওয়া জেনারেশনের কাছে ডিএনএ টেস্ট খুবই পরিচিত। এছাড়া সকলেই মোটামুটি জানেন, এই টেস্ট আমাদের পূর্বপুরুষ, আমাদের স্বাস্থ্য সহ নানান গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জানায়। তবে বর্তমানে এই টেস্ট নিয়েও নানান প্রশ্ন তুলছে একাংশের বৈজ্ঞানিক। তাই আসুন জেনে নেওয়া যাক, ডিএনএ টেস্ট কী এবং কতটা সঠিক এই টেস্ট?
ডিএনএ টেস্ট কী
সংশ্লিষ্ট DNA Profile দ্বারা কোনও ব্যক্তিকে সনাক্ত করার কৌশলকে DNA পরীক্ষা বলে। একে DNA profiling বা genetic fingerprinting ও বলা হয়। ১৯৮৪ সালে ইংল্যান্ডে Sir Ale Jeffreys প্রথম ডিএনএ প্রোফাইলিং কৌশল প্রয়োগ করেন। বর্তমানে ফরেনসিক বিজ্ঞানীরা এ কৌশলটি প্রয়োগ করেন।
যেভাবে করা হয় ডিএনএ টেস্ট
মরদেহের পরিচয় স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব না হলে ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিয়িক এসিড) টেস্ট করেই তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে হয়। এজন্য নিহতের ডিএনএ প্রোফাইল করতে হয়। নিহতের সংখ্যা যদি বেশি হয় সেক্ষেত্রে প্রতিটি মরদেহের আলাদা আলাদা ডিএনএ প্রোফাইল করতে হয়। ডিএনএ প্রোফাইল টেস্টের এই পদ্ধতি বিশ্বজনীন স্বীকৃত।
এই টেস্টের জন্য ভিকটিম বা মরদেহের দাঁত ও হাড় নমুনা হিসাবে সংগ্রহ করা হয়। অপর দিকে ভিকটিমের পরিবার বা স্বজনের রক্ত বা মুখের লালা সংগ্রহ করা হয়। কোনও কোনও সময় দুটিই সংগ্রহ করা হয়। নিহতদের নমুনাকে বলা হয় ‘মিসিং পার্সনস স্যাম্পল’ ও স্বজনদের নমুনাকে বলা হয় ‘রেফারেন্স স্যাম্পল’। রেফারেন্স স্যাম্পল টেস্ট করতে তেমন সময় লাগে না। এগুলো একদিনের ভেতরে দেওয়া সম্ভব। তবে ভিকটিমদের স্যাম্পল টেস্ট করতে এবং তা প্রোফাইলিং করতে একটু সময় লাগে।’
কতটা সঠিক এই টেস্ট
বিশেজ্ঞের মতানুযায়ী, বেশিরভাগ সময়ই এই টেস্ট সঠিক কথাই বলে। তবে কী ধরনের ডিএনএ টেস্ট হচ্ছে তার উপরই নির্ভর করে টেস্টর রেজাল্ট কেমন হবে। টেস্টের মাধ্যমে আমরা কী প্রশ্নের উত্তর জানতে চাই, এটাও মাথায় রাখার বিষয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একটি জিন যাকে মনোজেনিক জিন বলে, সেই জিনের মাধ্যমে টেস্ট করা হলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। কারণ এই টেস্টের মাধ্যমে বোঝা যায়, কোনও অসুখের কারণে বা নিজের থেকেই জিনের মধ্যে কোনও পরিবর্তন অর্থাৎ মিউটেশন ঘটেছে কি না।
কোথায় করা যায় ডিএনএ টেস্ট
দেশে সরকারিভাবে পরিচালিত দুইটি ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরি আছে।
> ঢাকা মেডিকেল কলেজে স্থাপিত নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়াধীন ন্যাশনাল ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরিতে যে কোনো ধরনের ডিএনএর নমুনা (হত্যা, খুন, ধর্ষণ, পিতৃত্ব নির্ণয়, অজ্ঞাত লাশের পরিচয় নির্ধারণসহ) পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার জন্য নমুনা প্রতি ৫ হাজার টাকা আগাম ফি পরিশোধ বাধ্যতামূলক।
> পুলিশের সিআইডি বিভাগ। এখানে পরীক্ষা করতে হলে আগে আদালতের অনুমতি নিয়ে ডিএনএ টেস্ট করাতে হবে। আপনাকে আগে এই ব্যাপারে আদালতে কারণ দর্শাতে হবে যে আপনি কি কারণে ডিএনএ টেস্ট করতে চান। তারপর তারাই আপনার ডিএনএ টেস্ট করার ব্যবস্থা করে দেবে। এটা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা হয়।
> বেসরকারিভাবে দেশের বাইরে থেকে করাতে পারবেন। খরচ হবে ২৫-৫০ হাজার টাকা।
সূত্র: ইন্টারনেট
এমএম/