স্থায়ী বসবাসের জন্য কেমন দেশ ফিনল্যান্ড?
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:২৩ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার
বাল্টিক সাগরতীর অবস্থিত স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশ ফিনল্যান্ড। একপাশে সুইডেন, অপর পাশে রাশিয়ার সীমান্ত। অসংখ্য হ্রদ আর ঘন সবুজের দেশ ফিনল্যান্ড। ৭১ ভাগ বনভুমির দেশটি সবুজ সোনা নামেও পরিচিত।
মজার বিষয় হল, দেশটির মেরু অঞ্চলে মে থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রায় সবসময় দিন থাকে। "মধ্যরাতের সূর্যের" এই দিনগুলিতে ফিনল্যান্ডের নয়নাভিরাম উপকূলীয় এলাকাগুলিতে হাজার হাজার লোক নৌকা নিয়ে বেড়াতে আসে। ইউরোপের সুন্দরতম দেশগুলোর একটি ফিনল্যান্ড।
এবারে আসি কীভাবে দেশটিতে স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করা যায় সে বিষয়ে। যেকোনো দেশে স্থায়ী বসবাসের জন্য যাওয়ার সহজ উপায় হল স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করা।
ফিনল্যান্ডের ৮টি বিশ্ববিদ্যালয় সারা বিশ্বের রাঙ্কিং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে। এরমধ্যে জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় আর্কেডা ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্স, হেলসিঙ্কি স্কুল অব বিজনেস, হ্যাম ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্স, কাজানি ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্স, সাতাকুন্তা ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লাইড সায়েন্স, ল্যাপিনরান্ট ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি। প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়েই ইংরেজি পাঠদান কর্মসূচি রয়েছে।
পড়াশুনার জন্য ইউরোপের যে দেশগুলোতে টিউশন ফি ছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা যায় তাদের মধ্যে একটি ফিনল্যান্ড। এখানে মাস্টার্স প্রোগ্রাম দেড় থেকে ২ বছরের হয়ে থাকে। আর এই প্রোগ্রামে আপনাকে সম্পন্ন করতে হবে ১২০ ক্রেডিট। আপনাকে অবশ্যই ৪ বছরের মধ্য মাস্টার্স কোর্স শেষ করতে হবে। আর ডক্টোরাল কোর্সে সময় দেওয়া হয়ে থাকে ৩ থেকে ৬ বছর। মাস্টার্স বা ডক্টোরাল কোর্সে আবেদন করতে আপনার নূন্যতম IELTS স্কোর ৬.৫ থাকতে হবে।
তবে বাংলাদেশে ফিনল্যান্ডের দূতাবাস না থাকায় কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়। বাংলাদেশি নাগরিকদের ফিনল্যান্ড যেতে হলে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে অবস্থিত ফিনল্যান্ডের দূতাবাসে আবেদন করতে হয়।
তবে প্রথমে আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ করে কোন প্রোগ্রামে পড়াশুনা করতে ইচ্ছুক সেটি নির্ধারণ করা।
নির্ধারিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে আপনি অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এর উপর ভিত্তি করে আপনাকে দেওয়া হবে অফার লেটার। এই প্রকৃয়ায় অনেক সময় বছর খানেক সময় লাগতে পারে।
এই আবেদনের জন্য আপনার লাগবে সর্বশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র, ভাষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র অর্থাৎ আইইএলটিএস। এছাড়া লাগবে আপনি যে প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে আছেন সেখানকার রিকমেন্ডেশন লেটার। এজন্য আপনাকে একটি মোটিভেশন লেটার নিজে লিখে দিতে হবে। দিতে হবে পাসপোর্টের ফটোকপি।
এই আবেদনের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনাকে অফার লেটার পাঠাবে। এবারে সেই অফার লেটারের কপিসহ দিল্লির ফিনল্যান্ড দূতাবাসে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
এজন্য নির্ধারিত ভিসা ফর্ম ডাউনলোড করে স্পষ্ট অক্ষরে প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী দিয়ে পূরণ করতে হবে। সঙ্গে জমা দিতে হবে শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট ও মার্ক-শিটগুলোর মূল কপি, জন্ম-নিবন্ধন, ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার সনদপত্র, ব্যাংক সার্টিফিকেট ও তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্টের মূল কপি। আবেদনপত্র এবং অন্যান্য কাগজপত্রের ২ সেট ফটোকপি, ভিসার জন্য নির্ধারিত সাইজের ৪ কপি ছবি, সম্প্রতি তোলা ৩৬×৪৭ মি.মি. আকারের ১ কপি রঙিন ছবি জমা দিতে হবে। এর সাথে লাগবে সর্বশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র, রেফারেন্স লেটার ও পাসপোর্টের ফটোকপি।
এছাড়াও যা দরকার হতে পারে— ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের নিজ নামে খোলা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৬,০০০ ইউরো সমপরিমাণ অর্থ জমা রাখা প্রয়োজন হতে পারে, সকল দলিল অবশ্যই একজন নোটারি পাবলিক কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে।
এছাড়া বিস্তারিত তথ্য পেতে ভিজিট করতে পারেন দিল্লিতে অবস্থিত ফিনল্যান্ড দূতাবাসের ওয়েবসাইটের এই লিঙ্কে। https://finlandabroad.fi/web/ind/frontpage
এসবি/