তারুণ্যের ৪০ প্রস্তুতি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৪৪ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার
জীবনে সফল হতে হলে, সুখি হতে হলে আপনাকে জানতে হবে ভালো মন্দ সম্পর্কে, ন্যায় অন্যায় সম্পর্কে। নৈতিকতার কষ্টি পাথরে যাচাই করে নিতে হবে প্রতিটি কথা ও কাজকে।
আজ আমরা তারুণ্যের ভবিষ্যত জীবন সুন্দর-সুখি করার ৪০ টি বিষয় এখানে তুলে ধরলাম....
> তারুণ্য হচ্ছে জীবনের প্রস্তুতি পর্ব। নিজেকে যোগ্য ও দক্ষ করে তোলার শ্রেষ্ঠ সময়। এসময়কে খেয়ালিপনা বা অলসতায় নষ্ট করবেন না।
> জীবনের লক্ষ্য স্থির করুন। বড় কিছু করার জন্যেই আপনি পৃথিবীতে এসেছেন−এ বিশ্বাসকে লালন করুন।
> নিজের প্রতি যত্নশীল হোন। প্রতিদিনের ব্যস্ততার মাঝে নিজের জন্য সময় বের করে নিন।
> স্বাস্থ্য-সচেতন হোন। স্রষ্টার দেয়া অমূল্য সম্পদ হলো সুস্বাস্থ্য।
> ব্যক্তিত্ব উন্নয়নের জন্যে ভালো বই পড়ুন, নিয়মিত মেডিটেশন ও কোয়ান্টাম ইয়োগা করুন।
> নিজের কাজ নিজে করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারবেন।
> স্বেচ্ছাসেবায় অংশ নিন। লেখাপড়া ঠিক রেখে সময়, মেধা ও শ্রম দিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করুন। তাহলেই জীবনে বড় কিছু করতে পারবেন।
> মুমূর্ষুর কল্যাণে আপনার ১৯ তম জন্মদিন থেকে রক্তদান শুরু করুন।
> জ্ঞান ও সংস্কৃতির ইতিবাচক চর্চা হয়−এমন অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিন। মানুষের সাথে বাস্তব সামাজিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করুন।
> পেশা নির্বাচনে অর্থ-উপার্জন ও সুযোগ-সুবিধাকে নয় বরং নিজের মেধার বিকাশ ও মানবকল্যাণে কতটুকু অবদান রাখতে পারবেন তা নিয়ে ভাবুন।
> নিজের মত প্রকাশে দ্বিধান্বিত হবেন না। হীনম্মন্যতায় ভুগবেন না। তবে অন্যের মতের প্রতিও শ্রদ্ধা পোষণ করুন।
> কোনো বিষয়ে উগ্রবাদী হবেন না। বিতর্কে জড়ানোর মতো বোকামি কখনোই করবেন না।
> অন্যের ভুল আচরণ থেকে শিক্ষা নিন। নিজের জীবনে একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করবেন না।
> প্রয়োজনে ‘না’ বলতে শিখুন।
> পরিবারের বড়দের প্রতি রাগ-ক্ষোভ-ঘৃণা পোষণ করবেন না। মনে রাখবেন, তাদের দোয়া, শুভকামনা ও সহযোগিতা জীবনের প্রতিটি বাঁকেই আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
> বংশ পরিচয়, গায়ের রং, চেহারা নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভুগবেন না। নিজেকে সম্মান করুন ও ভালোবাসুন।
> ‘আমাকে দিয়ে কিছু হবে না’−এ ধরনের নেতিচিন্তা পরিহার করুন। প্রতিদিন মনে মনে শতবার বলুন−আমি বিশ্বাসী আমি সাহসী। আমি পারি আমি করব। আমার জীবন আমি গড়ব।
> ‘আমি খারাপ’/ ‘আমি তো এমনই’-এ ধরনের একগুঁয়েমি থেকে বেরিয়ে আসুন। মনে রাখুন, ক্রমাগত প্রয়াসের মধ্য দিয়ে যিনি নিজেকে সংশোধন করতে পারেন, মানুষ হিসেবে তিনিই সার্থক।
> যে খ্যাপে তাকেই খ্যাপানো হয়। কখনো অন্যের কথায় খেপবেন না। এ ধরনের পরিস্থিতিতে শান্ত থাকাটাই হচ্ছে উপযুক্ত জবাব।
> বিলাসী পোশাক-পরিচ্ছদ ও অঙ্গভঙ্গি করে অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণের অর্থহীন চেষ্টা থেকে বিরত থাকুন। নিজের মেধা ও যোগ্যতাকে বিকশিত করুন। অন্যদের মনোযোগ তখন এমনিই আকৃষ্ট হবে।
> বিপরীত লিঙ্গের সাথে শোভন দূরত্ব বজায় রাখুন। আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন, সম্পর্ক সুন্দর থাকবে।
> অহেতুক আড্ডা, রাস্তায় ঘোরাঘুরি ও ভার্চুয়াল জগতে অনর্থক বিচরণ করে সময় নষ্ট করবেন না। সৃজনশীল কাজ ও সৎসঙ্ঘে ব্যয়ের জন্য প্রতিদিন কিছুটা সময় রাখুন।
> প্রযুক্তিদক্ষ হোন কিন্তু প্রযুক্তির দাস হবেন না।
> তথাকথিত স্মার্ট হতে গিয়ে কথোপকথনে অমার্জিত শব্দ ব্যবহার, গালিগালাজ, অশ্লীল জোকস বা চটুল কথা পরিহার করুন। এ ধরনের অভ্যাস ব্যক্তিত্বকে ক্ষুণ্ন করে।
> আধুনিক হোন কিন্তু ব্র্যান্ডের মোহে পড়বেন না। ট্রেন্ডি হবেন না; প্রাণিকুলে সবচেয়ে সফল ট্রেন্ডি হচ্ছে বাঁদর। ট্রেন্ড সৃষ্টি করুন। আপনি স্মরণীয় হবেন।
> পরিবর্তনকে ভয় পাবেন না। যেকোন পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করুন সাহস ও প্রত্যয়ের সাথে।
> কোল্ড ড্রিংকস, এনার্জি ড্রিংকস, ধূমপানসহ সব ধরনের নেশা ও মাদকদ্রব্য থেকে দূরে থাকুন।
> ভালো ড্রাইভিং মানে গতির ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ। নিয়ন্ত্রিত গতিতে যানবাহন চালান। গতির রোমাঞ্চকর প্রতিযোগিতা আপনার এবং অন্যের পঙ্গুত্ব বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
> চটকদার রিয়েলিটি শো-র ফাঁদে পা দেবেন না। মিডিয়ার প্রচারণায় আপনি হয়তো চোখের পলকে রঙিন ফানুস হয়ে যেতে পারেন। কিন্তু স্থায়ী সাফল্যের জন্যে প্রয়োজন নীরব সাধনা।
> ‘বাপের হোটেলে খাই/ মায়ের হোটেলে ঘুমাই’−এ ধরনের কথা বলে নির্বোধেরা। পছন্দসই চাকরির আশায় বেকার বসে থাকবেন না। কাজ খুঁজে নিন। নিজের দায়িত্ব নিজে নিন।
> সঠিক পরিকল্পনা কাজ সুসম্পন্নের অর্ধেক। যে-কোনো কাজ শুরু করার আগে যথাযথ প্রস্তুতি নিন।
> ‘কিছু টাকা পেলে ব্যবসা শুরু করতে পারতাম’− এ ধরনের আকাশকুসুম চিন্তা পরিহার করুন। ব্যবসা করতে প্রথম প্রয়োজন ব্যবসা বোঝা এবং রাস্তায় দাঁড়িয়ে বা দ্বারে দ্বারে ফেরি করে শূন্য থেকে শুরু করার সাহস। তাই পরিকল্পিতভাবে প্রাণান্ত পরিশ্রম করুন। মেধাকে সেবায় রূপান্তরিত করুন। সৌভাগ্য আপনার।
> বন্ধু নির্বাচনে বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করুন। সুসম্পর্ক যে-কারো সাথেই থাকতে পারে। কিন্তু বন্ধুত্বের জন্য প্রয়োজন চেতনার মিল ও পারস্পরিক কল্যাণকামনা।
> আহাম্মকের সঙ্গ ও ক্ষতিকর বন্ধুত্ব ত্যাগ করুন। এ-ক্ষেত্রে আবেগকে প্রশ্রয় দেবেন না।
> আত্মকেন্দ্রিকতা মেধা ও যোগ্যতা বিকাশে অন্তরায়। তাই সবার সাথে মিলেমিশে চলতে শিখুন।
> কোনো আড্ডা বা আসরে ধর্ম রাজনীতি সংস্কৃতি ইত্যাদি যে-কোনো বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন− আলোচ্য বিষয়ে আপনি কতটুকু জানেন। নিশ্চিত হয়ে বলতে না পারলে মৌন থাকুন।
> নিজের দেশ ভাষা ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সম্মান করুন। মনে রাখুন, শেকড়বিচ্ছিন্ন হয়ে কোনো মানুষই পূর্ণতার স্বাদ পায় না।
> যুগে যুগে সভ্যতার বাঁকবদল হয়েছে তরুণদের হাত ধরেই। বিশ্বাস করুন−আপনিও পৃথিবীকে দিতে এসেছেন।
> স্বাধীনতা মানে স্বেচ্ছাচারিতা বা উচ্ছৃঙ্খলতা নয়। স্বাধীনতা মানে হচ্ছে শৃঙ্খলা ও নিয়ম অনুসরণ। সুতরাং আপনি সুশৃঙ্খল হয়ে উঠতে পারছেন কিনা−সেদিকে খেয়াল রাখুন। সুশৃঙ্খল হলেই আপনি প্রকৃত স্বাধীনতা উপভোগ করতে পারবেন।
> তরুণ বয়সই নিয়মিত মেডিটেশন করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। নিয়মিত মেডিটেশন আপনাকে বিনয়ী সমমর্মী সাহসী ও আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।
এমএম/