ইউএনও-চেয়ারম্যানের বিশৃংখলায় পণ্ড আইন শৃঙ্খলা সভা
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১২:১২ পিএম, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ বুধবার
কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলা পরিষদ হলরুমে মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভা পণ্ড হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত চক্রবর্ত্তীর সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের হট্টগোলের কারণে মাঝপথে শেষ হয় সভা।
অফিস না করেই বাস ভবনে বসে বিভিন্ন প্রকল্প ভাগ বণ্টন, ফাইলে স্বাক্ষর করা নিয়ে ইউএনও-ইউপি চেয়ারম্যানরা মুখোমুখি অবস্থান নেন। এতে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।
কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, “ইউএনও অমিত চক্রবর্ত্তী মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভা চলাকালে সবার উপস্থিতিতে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তুই বেশি কথা বলিস। রুম থেকে বের হয়ে যা। মারার জন্য তেড়ে আসেন, গালি গালাজ করেন। এ সময় আনসার সদস্যদের হুকুম দেন, আমাকে গ্রেফতারের জন্য।”
মোহনগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, “টিআর-কাবিখাসহ সরকারি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে ইউএনও স্বেচ্ছাচারিতা করেন। তিনি অফিস না করেই তার বাস ভবনে বসে অফিস করেন এবং সকল ফাইলে স্বাক্ষর করেন। এলাকার সাধারণ মানুষ ইউএনওর সঙ্গে দেখা করতে এসে না পেয়ে ফেরত যান।”
সরকারের মুজিব শতবর্ষের গৃহ নির্মাণ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ করেন ইউপি চেয়ারম্যানরা। এছাড়া মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভায় উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা নিয়মিত অফিস না করার বিষয়টি তুলে ধরলে ইউএনওর সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যানদের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভায় উপস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই সরকার বলেন, “ইউএনও অমিত চক্রবর্ত্তী ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে খুবই খারাপ আচরণ ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। আমরা ইউএনও’কে থামানোর অনেক চেষ্টা করেছি। এরপরও তিনি থামেননি। উল্টো তিনি মাসিক সভা শেষ না করেই বের হয়ে যান।”
মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভার সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “ইউএনও কাজটি মোটেও ঠিক করেননি। সভা থেকে বের হয়ে যাওয়ার অনেক পরে সভা স্থগিত করা হয়।”
এই বিষয়ে রাজীবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত চক্রবর্ত্তী বলেন, “আমি কোন কটাক্ষ করি নাই। এটা চেয়ারম্যানের মনগড়া কথা। চেয়ারম্যানরা আমার সঙ্গে কোনো সমন্বয় করেন না। তাদের ডেকে ও চিঠি দিয়েও অফিসে হাজির করতে পারি না। ফলে সরকারের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মসূচি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। এই বিষয়গুলো মাসিক সভায় তুলে ধরলে কোদালকাটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।”
এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ বলেন, ঘটনা শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এএইচ