ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

ক্যান্সার থেকে বাঁচতে চাইলে ... 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:৩৫ পিএম, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ বৃহস্পতিবার

প্রথমত, বংশগত কারণে অনেকের শরীরে ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে। দ্বিতীয়ত, জীবনযাত্রায় অনিয়মের কারণেও ক্যান্সার হতে পারে। কেউ যদি সময়মতো না খায়, পরিমাণমতো না ঘুমায় তাতে তার ওজন বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। আর এই ওজন বাড়ার ফলে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তৃতীয়ত, অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণের ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। যেমন ধরুণ যেসব খাবারে নানা ধরনের রং বা রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়, ফরমালিন ব্যবহার করা হয় এমন খাবারে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। খাবার ঠিকমতো সংরক্ষণ না করা ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাবারে ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে। সোজা কথায় সচেতনতার অভাবে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেক বাড়ে।

আমরা খাবারকে সুস্বাদু করতে টেস্টিং সল্ট ব্যবহার করছি। এটা এখন খুব কমন ব্যাপার। ক্যান্সারের জন্য টেস্টিং সল্ট অন্যতম দায়ী। আর্টিফিসিয়াল সুইটনার, প্রক্রিয়াজাত মাংস, প্যাকেটজাত খাবার ক্যান্সারের জন্য দায়ী। খাবারে আমরা যেসব কৃত্রিম রং ব্যবহার করছি তাও ক্যান্সারের জন্য ভীষণভাবে দায়ী। চিকেন নাগেট, চিপস ইত্যাদি যদি হাত দিয়ে ধরেন তাহলে দেখবেন হাতে এক ধরনের রং লাগছে। এটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ। ফাস্টফুড একবার খেলেই ক্যান্সার হয় তা নয়। আমি কাউকে খেতেও নিষেধ করছি না। মাসে দু’একবার খাওয়া যেতে পারে। কিন্তু সবসময় খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। এখন বাজারে নানা ধরনের কেক পাওয় যায়। এসব কেকে নানা রংয়ের ক্রীম ব্যবহার করা হয়। এতে হয়তো আমাদের তৃপ্তি বাড়ে। কিন্তু তা মোটেও নিরাপদ নয়, বরং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে।

চায়ে চিনি বেশি খেলে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে সুগার বাড়ে। কিন্তু ক্যান্সার তেমন না। আপনি আজকে খেলে আজকেই ক্যান্সার হবে তা কিন্তু নয়। এটা ধীরে ধীরে ট্রিগার করে। জেনেটিকভাবে যদি ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে তাহলে এসব খাবার ধীরে ধীরে তার শরীরকে আরো ঝুঁকিতে ফেলে। আমরা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ফ্রিজে খাবার রাখার সময় মেয়াদ সম্পর্কে সচেতন থাকিনা। কিন্তু মেয়াদ দেখে সংরক্ষণ করা উচিত।

আর একটা উদাহরণ দিই। বাজার থেকে আমরা মোসল্লার প্যাকেট কিনে থাকি। এসব প্যাকেটে মেয়াদের তারিখ দেওয়া থাকে। কিন্তু আমরা সেই প্যাকেট বাসায় নিয়ে বোতলে রাখার সময় প্যাকেটটা ফেলে দিই। এরপর মেয়াদের তারিখের কথা ভুলেই যাই। যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

আমরা প্রতিনিয়ত পরিবেশ ও শব্দ দূষণের শিকার হই। বাচ্চাদের মোবাইল বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। গ্রামের মহিলারা লাকড়ীর চুলায় রান্না করে। গাছ পোড়ালেও সেখানে কার্বনডাইঅক্সাইড নিঃসৃত হয়। এটা সরাসরি নাকে প্রবেশ করে। এতেও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে। এয়ারফ্রেশনার ব্যবহার বা কিটনাশক ব্যবহারেও ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকে। চুলে কলপ বা নানা ধরনের রং ব্যবহারও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। এমনকি আমরা বাসায় যে কার্পেট ব্যবহার করি সেই কার্পেটের রং ও ক্যান্সারের জন্য ঝুঁকি। কার্পেটের রং পরিবেশবান্ধব না ও আমাদের শারীরিক প্রক্রিয়ার অনুকূলে না।
 
ক্যান্সার জয়ের উপায় কী?
সবচেয়ে বড় উপায় ক্যান্সার সম্পর্কে মানসিকভাবে ইতিবাচক থাকা। অনেক সময় ক্যান্সার থাকলে ক্যান্সারের চাইতে মানসিক ভয়টাই বেশি ক্ষতি করে। মানসিক শক্তি ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। ক্যান্সার হয়ে গেলে আরোগ্যলাভের ক্ষেত্রেও মানসিক শক্তি সবচেয়ে বড় সহায়ক। সবসময় হাসিখুশী ও দু:শ্চিন্তামুক্ত থাকলেও ক্যান্সার এড়ানো সহজ। দু:শ্চিন্তা না থাকলে খাওয়া দাওয়া ও ঘুম নিয়মমত হয়। এতে ওজন বাড়েনা। ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে থাকলেও তাকে অনেকদিন পর্যন্ত প্রতিরোধ করতে পারবেন।

এ ক্ষেত্রে পাঁচটি নিয়ম মেনে চললে ক্যান্সার জয় করা অনেকটা সম্ভব। 
এক. সুষম ও নিরাপদ খাবার গ্রহণ করা। 
দুই. দু:শ্চিন্তামুক্ত থাকা।
তিন. রাতে সঠিকভাবে ও সঠিক পরিমাণে ঘুমানো। 
চার. দৈনিক কমপক্ষে ত্রিশ মিনিট হাঁটা। 
পাঁচ. সবসময় ইতিবাচক ও হাসিখুশি থাকা।
এসএ/