দুই গুণীজনকে রাসিকের সংবর্ধনা
রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৯:৪৯ এএম, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ শনিবার
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ারকে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে নগর ভবনের গ্রিন প্লাজায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে উত্তরীয় ও ক্রেস্ট প্রদানের মাধ্যমে গুণীজনদের সংবর্ধিত করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে রাসিক মেয়র বলেন, ‘রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদের নামে আর্ট গ্যালারি স্থাপন করতে চাই। এই মেয়াদে আর্ট গ্যালারি স্থাপন কাজের সূচনা করতে চাই। তিনি রাজশাহীকেই ধন্য করেছেন। আমরা তাকে সংবর্ধনা দিয়ে নিজেরাই ধন্য হয়েছি। কারণ এই রকম মানুষকে সচরাচর পাওয়া যায় না, সচরাচর জন্মও নেন না।’
মেয়র লিটন বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমদের যে বক্তব্য দিয়েছেন, এমন বক্তব্য আগে কখনো শুনিনি। তিনি তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে যে সকল তথ্য তুলে ধরেছেন, তা আমাদের আগামী প্রজন্মকে মনে রাখতে হবে। জয় বাংলা স্লোগান দিয়েই কিভাবে তিনি যুদ্ধে কৌশল অবলম্বন করেছেন। জয়বাংলা এখন তাঁর প্রাত্যহিক বিষয়। এই স্লোগানের মধ্যে কি যে শক্তি রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার অনেকগুলো বছর পার হয়েছে। এর মধ্যে ইতিহাস বদলে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছিল। জামাত-বিএনপি চক্র স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছিল। ইতিহাসের খলনায়ক জিয়াউর রহমান এখানে মূল ভূমিকায় ছিল। সেই অপশক্তি দেশটাকে অস্থির-বিশৃঙ্খল করেছে, তারা থেমে গেছে এটা ভাবার কোন সুযোগ নাই, কারণ তারা দেশেই আছে।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ এবং সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার ও মিসেস তৌফিকা আনোয়ার, রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট সমাজসেবী শাহীন আকতার রেণী।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘১৯৬২ সালের পর প্রথম রাজশাহীতে পা রাখলাম। রাজশাহীর আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। রাজশাহীর এই পরিবর্তনকে একজন শিল্পীর হাতের কারুকাজের সাথে তুলনা করে বলেন, এই পরিবর্তনের শিল্পী মেয়র।’
শিল্পী তার মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমরা পুরো প্রশিক্ষণ না নিয়েই যুদ্ধে নামতে বাধ্য হয়েছি। এ সময় আমাদেরকে কৌশলী হতে হয়েছে। শুধু অস্ত্র নয়, ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে পাক হানাদার বাহিনী পালাতে বাধ্য হয়েছে। যুদ্ধের ময়দানে জয় বাংলা স্লোগানটা এমনভাবে দেয়া হতো যেন মনে হতো শত শত মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে। আসলে আমরা থাকতাম ১২ থেকে ১৩ জন। দুই সপ্তাহ পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে হয়েছে। এমন সময় রাজশাহীর সন্তান এএইচএম কামারুজ্জামান প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে গিয়ে হাজির হয়ে আমাদের সাহস যোগাতেন।’
রাজশাহীবাসীর আতিথেয়তায় মুগ্ধতার কথা জানিয়ে শিাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, পদ্মা পাড়ের মতো বড় নদী তীরে যারা জন্মায় তারা অন্যরকম হয়। মনে গেঁথে গেল রাজশাহী।
মন্ত্রী পরিষদের সাবেক সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা মানে কোন ব্যক্তিকে হত্যা নয়। আবহমান বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও স্বাধীনতাকে খর্ব করার জন্য এ হত্যাকাণ্ড। যার শুরু হয় ১৯৭১ থেকে। যারাই এদেশে আগামীর নেতৃত্ব দেবার মতো ছিলেন তাদেরককেই হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সুদূর প্রসারী চক্রান্তের শামিল হয় এদেশের কিছু ব্যক্তি। এরপর স্বাধীন বাংলায় ৩ হাজার ৫০০ জন সেনাবাহিনীর সদস্য ও অগণিত মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সর্বক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে আগামীতে আবারও আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় আনতে হবে।’
এএইচ