বন্ধন ট্রেন এলেই স্টেশনের দখল চোরাচালানীদের হাতে (ভিডিও)
জামাল হোসেন, বেনাপোল থেকে
প্রকাশিত : ১২:৫৮ পিএম, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার
খুলনা থেকে কলকাতাগামী বন্ধন এক্সপ্রেসে বেড়েছে চোরাচালান। দুর্ভোগে পাসপোর্টধারী যাত্রী। ভূক্তভোগীদের অভিযোগ, এভাবে চলতে থাকলে আভিজাত্য হারাবে আন্তর্জাতিক রেলের এ ট্রেন।
এ দৃশ্য কোন বাজারের নয়। আন্ত:দেশীয় ট্রেন বন্ধন এক্সপ্রেসের চোরাচালানের চিত্র।
কলকাতা থেকে বেনাপোল পৌঁছাতেই মৌমাছির ঝাঁকের মতো স্টেশনের দখল নেন বিভিন্ন বয়সের চোরাচালানী। এমনকি ট্রেনের নিচেও জটলা পাকায় কেউ কেউ। যে কারণে, ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে যাত্রীরা পড়েন বিপাকে। সুযোগ পেলেই ব্যাগপত্র লুটে নিয়ে মুহূর্তেই লাপাত্তা চোরাচালানীর দল।
যাত্রী সেজে প্রায় ৩ শ’র মতো চোরাচালানী আসা-যাওয়া করছে এই রুটে। বেনাপোলে যাদের পরিচয় লাগেজ পার্টির সদস্য হিসেবে। কোটি কোটি টাকার কম্বল, অস্ত্র, মাদক, শাড়ি, চকলেট, সিগারেট, মোবাইল, কিসমিস, চা পাতা, ওষুধসহ আরও বহু ধরণের পণ্যের চালান আনাই এদের কাজ। রেল কর্তাদের সঙ্গে মিলে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে তা খালাসও করছে নিয়মিত।
সাধারণ যাত্রীরা জানান, “সম্পূর্ণ ট্রেনটা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে কব্জা করে চোরাচালান করছে। আমরা নামতে পারছিনা, ব্যাগ নিয়ে যাচ্ছে কারো কম্বল নিয়ে যাচ্ছে।
পুলিশ, কাস্টমস আর রেল কর্মকর্তা বাদে স্টেশনে প্রবেশের অনুমতি নেই অন্যদের। অথচ ট্রেন থামলে অনাকাঙ্ক্ষিত লোকজনের ভিড়ে যাত্রীদের চলাচলের উপায় থাকে না।
বেনাপোল রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ইনচার্জ রানা আহমেদ বলেন, “বিজিবি আছে, কাস্টমস আছে- এরা দেখাশুনা করেন। আন্তর্জাতিক গাড়ি প্লার্টফর্মে আসে বলে আমাদের লোকজন এখানে আসেন।”
জিআরপি বলছে, চোরাচালান দমনে সম্মিলিত চেষ্টা চলছে।
রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) খুলনা থানার অফিসার ইনচার্জ খবির মোল্ল্যা বলেন, “এদের রোধ করার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। বিজিবি, কাস্টমস, এনএসআই-সহ আরও অনেক বাহিনী আছে। এরপরও আমরা কিছু সুপারিশ দিয়েছি, এগুলো না হলে অবাঞ্ছিত লোকজন আসা বন্ধ করা যাচ্ছেনা।”
স্টেশন মাস্টারের দাবি, সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান বলেন, “স্বল্পসংখ্যক সদস্য দিয়ে ট্যাকেল দেওয়া সম্ভব নয়। এ বিষয়টি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ, জিআরপি, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা বলেছেন, সমস্যার সমাধান অচিরেই করা হবে।”
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতিনিয়ত অভিযান চললেও চোরাচালানীদের দমানো যাচ্ছে না।
বেনাপোল কাস্টমস হাউজের জয়েন্ট কমিশনার আবদুল রশীদ মিয়া বলেন, “সকল বাহিনীর সম্মিলিত অভিযান পরিচালনা করা বিপুল পরিমাণ পণ্য জব্দ করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, খুলনা-কলকাতা রুটে ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর চলাচল শুরু করে ৪৫৬ আসনের আন্ত:দেশীয় ট্রেন বন্ধন এক্সপ্রেস। সপ্তাহে রবি ও বৃহস্পতিবার চলছে বিশেষ ট্রেনটি।
এএইচ