ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে সন্দ্বীপ ফ্রেন্ডস সার্কেল অ্যাসোসিয়েশন
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৫৪ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৪:৫৯ পিএম, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার
আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। জাতির জীবনে শোকাবহ, গৌরবোজ্জ্বল, অহংকারে মহিমান্বিত চিরভাস্বর ২১শে ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ছিল ঔপনিবেশিক প্রভুত্ব ও শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে বাঙালির প্রথম প্রতিরোধ এবং জাতীয় চেতনার প্রথম উন্মেষ।
সেদিন মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল রফিক, জব্বার, সালাম, বরকত ও সফিউররা। পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষার জন্য রাজপথে বুকের রক্ত ঢেলে দেওয়ার প্রথম নজির এটি। সেদিন তাদের রক্তের বিনিময়ে শৃঙ্খলযুক্ত হয়েছিল দুঃখিনী বর্ণমালা ও মায়ের ভাষা। আর এর মাধ্যমে বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের যে সংগ্রামের সহৃচনা হয়েছিল তা মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে।
তাই একুশ মানে চেতনা, একুশ মানে মাথা নত না করার দীপ্ত শপথ। আজ সে চেতনার দিন আজ সেই প্রাণ জাগানো সকাল আজ। একুশে ফেব্রুয়ারি তাই বাঙালির কাছে চির প্রেরণার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। একুশের প্রথম প্রহর থেকেই জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে ভাষা শহীদদের স্মরণ করে। হৃদয়ের সবটুকু আবেগ ঢেলে দিয়ে সবার কণ্ঠে বাজে অমর একুশের গান-
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি ...।
ফাল্গুনের কৃষ্ণচূড়া, পলাশের ফোঁটা ভোরে সেই ভাইহারা বেদনার গান নিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রভাতফেরি করেছে চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের তরুণদের নির্ভরতার ঠিকানা সন্দ্বীপ ফ্রেন্ডস সার্কেল অ্যাসোসিয়েশন।
'উঠো, জাগো এবং শ্রেয়কে বরণ করো' এই মহামতি মন্ত্রে দীক্ষিত সংগঠনটি মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে প্রভাতফেরি শেষে শহীদ মিনারে জাতীয় সঙ্গীত এবং ভাষার গান পরিবেশন করা হয়। এরপর শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নাট্যজন আবুল কাশেম শিল্পী, সাংবাদিক ইলিয়াস কামাল বাবু, সাংবাদিক সুফিয়ান মানিক, কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক সঞ্জয় মজুমদার, এবি কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি হুমায়ুন আকবর, এবি কলেজে শাখার সহ-সভাপতি মাইমুনা নাসিমা, সাধারণ সম্পাদক মো. পারভেজ, মুকুল, নাসরিন আক্তার, ফারজানা বকুল, আরিয়ান, আলেয়া, রাহা, সানজিদা ইসরাত, শারমিন জাহান, সাদিয়া আক্তার, সাবিহা সুলতানা, জান্নাতুল মাওয়া, শাহীনুর আক্তার, মেহেরুন নেছা আরজু, সীমা আক্তার, ফারহানা আক্তার পাপড়ি, সুমাইয়া সোহা, নাবিলা সুলতানা, জোবেদা খানম প্রীতি, রিসা জাহান ফারিন, জান্নাত ইসলাম, রেবেকা সুলতানা, তানিয়া আক্তার পপি, সাদিয়া জাহান, রুবিনা আক্তার, তামান্না আক্তার, অপু, হাবিব উল্লাহ, মোন্তাসীর, অনিক রায়, দিপু গুহ, আশিকুর রহমান, ইফতেখার আলী আরিয়ান, তন্ময় রায়, রিমন, আইমন, শিহাব, সাইমুন, তানবির হাসান, খালেদ মাসুদ প্রমুখ।
পুষ্প অর্পণ শেষে বক্তারা বলেন, একুশের ভোরে সন্দ্বীপ ফ্রেন্ডস সার্কেল অ্যাসোসিয়েশনের নেতাকর্মীদের শ্রদ্ধাঞ্জলি দেয়ার মাধ্যমে দেশের প্রতি তরুণদের মমত্ববোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে তরুণরা কখনো পথ হারাবে না।
উল্লেখ্য, সন্দ্বীপ ফ্রেন্ডস সার্কেল এসোসিয়েশন ২০০৭ সালে ১৮ অক্টোবর কাজী ইফতেখারুল আলম তারেকের নেতৃত্বে সন্দ্বীপের একঝাঁক সৃজনশীল তরুণদের নিয়ে যাএা শুরু করে। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে অনেক চড়াই-উৎরাই পার করে এক যুগের পথে পা বাড়ালো। এই দীর্ঘ পথপরিক্রমায় অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে সন্দ্বীপে শিক্ষা, সাহিত্য, সামাজিক-সাংস্কৃতিক, মানবিক ক্ষেত্রে নাগরিক বদ্বতা থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। একই সাথে ৫২ ও ৭১ এর চেতনা বুকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের কাঙ্খিত সমাজ বির্নিমানের লক্ষে সংগঠনটি বদ্বপরিকর। এছাড়া মাদক ও জঙ্গিবাদ নির্মূলের লড়াইয়ে সোচ্ছার থেকে একটি অহিংস সমাজ গঠনের সংগ্রামে শত তরুণ কাজ করে যাচ্ছে।
কেআই//