ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

রাঙামাটির নৌকা ডুবিতে নিহত জয়পুরহাটের দুই বোন

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৮:৩০ এএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ বুধবার

রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে নৌকা ডুবিতে নিহত দুই নারীর বাড়ি জয়পুরহাটে।  নিহত দুই নারী আপন বোন। বড় বোনকে বাঁচাতে ছোট বোনও হ্রদের পানিতে ডুবে মারা যান। 

নিহত পুষ্পা রানী চক্রবতী (৭০) দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলা সদরের গোপাল চক্রবতীর স্ত্রী ও চায়না রানী চক্রবর্তী (৫০) রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বগেরহাট গ্রামের বৈদ্যনাথ স্ত্রী। রতনপুর গ্রামের নিত্যানন্দ মাস্টার তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, পুষ্পা রানী ও চায়না রানী দুজন আপন বোন। কাপ্তাই হ্রদে তারা নৌকা ডুবিতে মারা যান। রতনপুর গ্রামের নিশিকান্ত বর্মণ তাদের দুলাভাই।

মঙ্গলবার দুপুরে রতনপুর হিন্দুপাড়া গ্রামে গিয়ে জানা যায়, ওই গ্রামের ৫৬ জন নারী-পুরুষ ও শিশুসহ মোট ৬৯ জন শীব চতুদর্শীতে পূর্জা-অর্চনা করতে  সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ মন্দিরে যান। গত শনিবার সন্ধ্যা ছয়টায় রতনপুর বাজার থেকে একটি বাস চড়ে রওনা দেন তারা। রোববার দুপুরে বাসটি সীতাকুণ্ডে পৌঁছায়। 

এরপর তারা সেখানে পূর্জা-অর্চনা করেন। সোমবার বিকালে ৫৬ জন নারী-পুরুষ রাঙামাটি ঝুলন্ত সেতু দেখে নৌকায় করে ফিরছিলেন। নৌকাটি ডিসি বাংলো এলাকায় এসে গাছের গুড়ির সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে নৌকা হ্রদের পানিতে ঢুবে যায়। এসময়ে পুষ্পা রানী বাঁচাতে এগিয়ে এসে চায়না রানীও পানিতে ডুবে মারা যান।

ওই নৌকায় ছিলেন রতনপুর গ্রামের সুজন চন্দ্র বর্মন। তিনি মঙ্গলবার বিকালে মুঠোফোনে বলেন, “আমরা সবাই রাঙামাটি ঝুলন্ত সেতু দেখে নৌকায় ফিরছিলাম। ডিসি বাংলোর কাছাকাছি এসে গাছের গুড়ি ধাক্কায় নৌকার তলার একটি কাঠ খুলে ভেতরে পানি ঢুকতে শুরু করে। তখন নৌকার গতি বাড়ানোর সঙ্গে-সঙ্গে নৌকার তলার আরও কাঠ খুলে যায়। মুর্হূতের মধ্যে নৌকাটি ডুবে যায়। পুষ্পা রানীকে বাঁচাতে গিয়ে তার ছোট বোন চায়না রানীও পানিতে ডুবে যায়। 

পরে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় আরও তিনজন আহত হন। তারা চিকিৎসা নিয়ে এখন সুস্থ আছেন।  রাঙামাটি থেকে রাতেই দুই বোনের লাশ তাদের স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমার বাবা বিপুল চন্দ্র বর্মণ ও মা শ্রীমতি ষষ্ঠী রানীও নৌকায় ছিলেন। আমার মা-বাবাসহ গ্রামের অন্যরা এখন সুস্থ রয়েছেন। নৌকা ডুবিতে প্রায় সবার মুঠোফোন পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে। একারণে যোগাযোগে একটু কষ্ট হচ্ছিল।

পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, রতনপুর গ্রামের সনাতন ধম্বালম্বী লোকজনেরা রাঙামাটি গিয়েছিলেন। সেখানকার ঝুলন্ত সেতু দেখে ফেরার পথে নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় দুই জন নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জেনেছি। তারা রতনপুর গ্রামে আত্মীয় বাড়িতে এসে সেখানে গিয়েছিলেন।

এএইচ