ইনটেগ্রেটিভ মেডিসিন গবেষণায় অবদান রাখছেন ডা: মুজিবুল হক
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৪১ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ রবিবার
রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর ওষুধ, সাধারণত এই ফর্মুলায় চলে দেশের চিকিৎসা খাত। তবে অধিকাংশ সময়ই সেই রোগ পুরোপুরি নির্মূল হয় না। কারণ শুধু ওষুধে রোগ নিয়ন্ত্রণে আসে বটে, প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে না। তাই এর পাশাপাশি প্রয়োজন প্রাকৃতিক এবং বৈজ্ঞানিক উপায়ের সংমিশ্রণ এবং জীবনযাপনের সঠিক পন্থা। বর্তমানে এ ধরনের চিকিৎসা পন্থা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।
বাংলাদেশেও এ ধরনের চিকিৎসা চলছে। বিকল্প চিকিৎসার এই বিষয়টি নিয়েই কাজ করে যাছেন বাংলাদেশের চিকিৎসক ডা. মুজিবুল হক। সুদূর যুক্তরাষ্ট্রে থেকেই তিনি দেশের মানুষের সেবায় প্রতিনিয়ত কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন। তার পরামর্শ ও চিকিৎসায় এ পর্যন্ত বহু মানুষ সুস্থতার দেখা পেয়েছেন। ফিরে এসেছেন মৃত্যুর দ্বারপ্রান্ত থেকেও।
ডা. মুজিবুল হক মূলত যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল বোর্ড সার্টিফাইড ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত হোলিস্টিক ইন্টিগ্রেটিভ চিকিৎসক। তিনি চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ডাক্তার ও পেশাদারদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। যেহেতু ডা. মুজিবুল হক প্রবাসী, তাই দেশের মানুষের সঙ্গে তার বেশির ভাগ সাক্ষাৎ হয় অনলাইন মাধ্যমে। তার ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব পেজ রয়েছে, সেখানে নিয়মিত আপলোড করা হয় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ভিডিও। যা দেখে অনেকেই উপকৃত হচ্ছেন। নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই হোলিস্টিক চিকিৎসায় এসেছেন ডা. মুজিবুল হক।
তিনি বলেন, ‘আমার রোগমুক্তি এবং দীর্ঘ ২২ বছরের শিক্ষা ও গবেষণা থেকে আমি শিখেছি, প্রত্যেকটা স্বাস্থ্য সমস্যার একটা মূল কারণ থাকে এবং থাকে এর বৈজ্ঞানিক সমাধান। রোগমুক্তির জন্য শুধু প্রেসক্রিপশনের ওষুধ নয়, প্রয়োজন রোগের মূল কারণ চিহ্নিত করে তা নির্মূল করা।’
ডা. মুজিবুল হক ইনটেগ্রেটিভ মেডিসিন বা অল্টারনেটিভ মেডিসিন নিয়ে সম্প্রতি বেশকিছু আন্তর্জাতিক মানের সেমিনার করেছেন বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি শহরে। সেখানে তিনি এই চিকিৎসা পন্থার নানাদিক তুলে ধরেন।
মূলত ব্যবহৃত ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার জন্য বিকল্প মেডিসিন ব্যবহার করা হয়। রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর ওষুধ, সাধারণত এই ফর্মুলায় চলে দেশের চিকিৎসা খাত। তবে অধিকাংশ সময়ই সেই রোগ পুরোপুরি নির্মূল হয় না। এর থেকে প্রতিকারের উপায় কি তাই তুলে ধরা হয় এইসব সেমিনারে।
ডা. মুজিবুল হক বাংলাদেশে রসায়ন বিদ্যা শিক্ষা দিয়ে মূলত তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর অর্জন করেছিলেন। এরপর স্কলারশিপ নিয়ে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানকার 'উইনকনসিন মিলওয়াকি বিশ্ববিদ্যালয়' থেকে জৈব প্রাণরসায়নে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর 'ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস মেডিকেল ব্রাঞ্চ' থেকে সম্পন্ন করেছেন পোস্ট-ডক্টরাল রিসার্চ।
২০১০ সালে পিএইচডি চলাকালীন ডা. মুজিবুল হকের দেহে ধরা পড়ে এক ধরনের মারাত্মক অটোইমিউন ডিজিজ। এই রোগের চিকিৎসা নিতে গেলে উল্টো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বিপাকে পড়েন। যার কারণে বিকল্প পন্থা খোঁজেন তিনি। তখনই সন্ধান পান এক হোলিস্টিক ইন্টিগ্রেটিভ মেডিসিন চিকিৎসকের। যার পরামর্শে পূর্ণাঙ্গ সুস্থতা লাভ করেন মুজিবুল হক।
এই ঘটনায় নতুন পথ খুলে যায় ডা. মুজিবুল হকের জন্য। তাই তিনি ভর্তি হন বিখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। পাশাপাশি নাচারোপ্যাথির ওপর ‘এনডি’ শীর্ষক ডিগ্রি অর্জন করেন যুক্তরাষ্টের ন্যাচারাল মেডিসিন প্রাক্টিশনার বোর্ড থেকে। এ ছাড়া ইনটেগ্রেটিভ মেডিসিন, রিজেনারেটিভ মেডিসিন এবং ফাংশনাল ডাইগোনেস্টিক মেডিসিনের ওপর শিক্ষা সনদ গ্রহণ করেন।
এরপরই তিনি তার দীর্ঘ ২২ বছরের শিক্ষা এবং ট্রেনিং নিয়ে ইন্টিগ্রেটিভ হলিস্টিক ট্রিটমেন্ট শুরু করেন পাশাপাশি তিনি স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে মনোনিবেশ করেছেন। এভাবে ডা. মুজিবুল হক এবং তার টিম অল্টারনেটিভ মেডিসিনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষকে। বৈজ্ঞানিক ভিত্তি থাকায় এই সেবা দিনে দিনে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশ্বব্যাপী এই চিকিৎসাসেবা নিতে মানুষ আগ্রহী হয়ে উঠছে।
এসি