নকল পোশাক রপ্তানির অভিযোগ দুই দেশের (ভিডিও)
মেহেদী হাসান, একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:২৮ এএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার
বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের বিরুদ্ধে বিশ্বখ্যাত ব্রান্ডের নকল পোশাক রপ্তানির অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের দুটি প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ দপ্তর ইউএসটিআর। সত্যতা মিললে শাস্তি বা কঠোর সতর্ক বার্তা দিতে পারে সংস্থাটি।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ। পশ্চিমা ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের ক্রয়াদেশের বিপরীতে নির্দিষ্ট পরিমাণ পোশাক উৎপাদন করে দেশের কারখানাগুলো। যেখানে পোশাকের ডিজাইন অনুমোদন করে ক্রেতা প্রতিষ্ঠনগুলো। ডিজাইনের কপিরাইটও সংশ্লিষ্ট ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের।
অভিযোগ উঠেছে, দেশের কিছু কারখানা একই পণ্য ভিন্ন ক্রেতা বা ভিন্ন দেশেও রপ্তানি করছে। ধরা যাক, যুক্তরাষ্ট্রের একটি ব্রান্ড বাংলাদেশি কোনো কারখানায় দুই লাখ পিস শার্টের ক্রয়াদেশ দিয়েছে। কিন্তু ওই কারখানা একই পণ্য আরও এক লাখ পিস তৈরি করে সেগুলো অন্য দেশে বিক্রি করছে।
আমেরিকান অ্যাপারেল এন্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন ও ফরাসি একটি প্রতিষ্ঠান এমন অভিযোগ দাখিল করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসটিআর-এ। দাবি করা হচ্ছে, চীন, তুরস্ক এবং আরও কিছু দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও নকল পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। ইউএসটিআর এই অভিযোগ খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নিয়েছে ।
ব্যবসায়ী নেতা ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এই অভিযোগ গুরুতর। হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই বাংলাদেশের।
বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “আমরা শক্তিশালী অবস্থানে আছি, যে কোনো দেশের যে কোনো ব্রান্ডের কাজ করার অবস্থান আমাদের আছে। নকল নয় অরিজিন্যাল অর্ডার নেওয়ার অবস্থান আমাদের আছে, আমরা করছি সেগুলো। এ অবস্থায় নকল পণ্য যারা তৈরি করছে বা রপ্তানি করছে তারা দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে। সরকারকে অনুরোধ করবো এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।”
অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “সর্বাত্মক চেষ্টা করতে হবে যে, আমরা যেন কোনো প্রকারের দণ্ডনীয় কিছু পেয়ে না যাই এটার কারণে। শুরুতেই এর মূল উদপাটন করতে পারলে এই সমস্যা থেকে আমরা বের হয়ে আসবো এবং ভবিষ্যতে এটা আর প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করবে না।”
অভিযোগ সত্য হলে কঠোর সতর্কবার্তা ও শুল্কবৃদ্ধির তৈরি মতো ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তবে বাংলাদেশ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এ নিয়ে সংকট তৈরি হবে না বলে আশা করছেন বিশ্লেষকরা।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এটা নিয়ে এসেছে। তাদের সঙ্গে বসতে হবে যে আমরা সঠিক কার্যকর প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনা করতে যাচ্ছি এবং আগামীতে এটা আর হবে না। এধরনের একটা নিশ্চয়তা তাদেরকে দিতে হবে। আশা করা যায়, প্রথমবার যেহেতু অভিযোগটা এসেছে হয়তো আমাদেরকে কোনো শাস্তির মধ্যে ফেলবেনা।”
গত বছর ৪৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ। যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেই রপ্তানি হয়েছে ৯ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলারের। যা মোট পোশাক রপ্তানির ১৯ দশমিক ৮২ শতাংশ।
এএইচ