মোবাইল ব্যাংকিং: ব্যাংক এখন পকেটে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৫৯ এএম, ১ মার্চ ২০২৩ বুধবার | আপডেট: ০৩:২২ পিএম, ১ মার্চ ২০২৩ বুধবার
বর্তমান সময়ে বহুল ব্যবহৃত জনপ্রিয় ব্যাংকিং সিস্টেম হচ্ছে ‘মোবাইল ব্যাংকিং’। বেশ কিছু বছর ধরেই মোবাইল ব্যাংকিং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। এক কথায় যদি বলতে হয়- বর্তমানে ব্যাংকিং সেক্টরের মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিং একটি বিপ্লব ঘটিয়েছে। এখানে রেজিস্টারড গ্রাহকরা তাদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ব্যাংকের সকল সার্ভিস নিজেরাই অ্যাক্সেস করতে পারেন। ব্যবসায়িক লেনদেনের কাজে ব্যবহৃত হয় মার্চেন্ট একাউন্ট।
মোবাইল ব্যাংকিং বলতে মূলত মোবাইল টেলিযোগাযোগ ডিভাইসের সাহায্যে ব্যাংকিং এবং আর্থিক সুবিধাকে বুঝায়।
সহজ কথায় বলতে গেলে, মোবাইলের সাহায্যে টাকা লেনদেন করাকে মোবাইল ব্যাংকিং বলে। ব্যাংক একাউন্টের সকল কার্যক্রম মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করার সুবিধাই হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং।
অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস আসার পর থেকে মোবাইল ব্যাংকিং আরো বেশি সহজ হয়ে গেছে। এই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে যাবতীয় আর্থিক লেনদেন আপনার হাতে থাকা মুঠোফোন থেকে খুব সহজে করতে পারবেন। এই সিস্টেমের মাধ্যমে মানুষ এখন খুব সহজে দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে টাকা পাঠাতে পারেন।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের প্রথম সুবিধা হচ্ছে, আপনি যেখানেই থাকেন না কেন সর্ব অবস্থায় স্মার্ট ফোনের সাহায্যে ব্যাংকিং এর সকল সার্ভিস বা লেনদেন দিন-রাত ২৪ ঘণ্টায় নির্দ্বিধায় করতে পারবেন। দেশের মধ্যে দেশের বাহিরে যেখানে থাকেন আপনি খুব সহজেই ব্যাংকিং এর সুবিধা সবসময় পাবেন।
আপনার ব্যাংক একাউন্টে কত ব্যালেন্স আছে বা কত টাকা লেনদেন করেছেন এই সকল স্টেটমেন্ট এখন নিজের মোবাইল বা ট্যাবলেট অ্যাপসের মাধ্যমে দেখে নিতে পারবেন।
খুব সহজে একাউন্ট থেকে অন্য একাউন্টে টাকা পাঠাতে পারবেন। তবে এই সুবিধা শুধুমাত্র একই ব্যাংক একাউন্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ আছে।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আপনি যেকোন ইউটিলিটি বিল যেমন- পানি, গ্যাস, ইলেক্ট্রিক, ইন্টারনেট বিল পে করতে পারবেন।
অ্যাপ এর মাধ্যমে শপিং করতে পারবেন। যে সকল দোকানে এর মাধ্যমে পেমেন্ট গ্রহণ করে সেখানে আপনি কেনাকাটা করে পে করতে পারবেন।
মূলত কাস্টমারদের কাছ থেকে পেমেন্ট গ্রহণ করতে মার্চেন্ট একাউন্ট ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ ক্রেতাদের কাছ থেকে একজন বিক্রেতা পেমেন্ট গ্রহণ করে থাকেন মার্চেন্ট একাউন্টের মাধ্যমে।
ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার একটি অংশ হচ্ছে মার্চেন্ট একাউন্ট। ব্যবহারকারীদের একাউন্টের মাধ্যমে তাদের পছন্দের দোকানে পেমেন্ট করার সুযোগ প্রদান করে মার্চেন্ট একাউন্ট। তাই সকল দোকানির উচিত মার্চেন্ট একাউন্ট খোলা ও কাস্টমারদের একাউন্ট দ্বারা পেমেন্ট এর সুযোগ করে দেওয়া। কাস্টমারের পাশাপাশি মার্চেন্ট একাউন্টের বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করতে পারেন একজন মার্চেন্ট।
গ্রাহকরা খুব সহজেই ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সকল সার্ভিস পাওয়ার সুবিধা থাকায় ব্যাংকে যাওয়া এবং দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ায় বর্তমানে প্রতিদিন হাজার হাজার সাধারণ মানুষ মোবাইল ব্যাংকিং এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন।
এছাড়াও মোবাইল রিচার্জ, ট্রেনের টিকিট, ফ্লাইট টিকেট সহ আরো অন্যান্য কাজ সহজেই করতে পারবেন।
তবে এ ক্ষেত্রে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কখনো কখনো এমন খবর শোনা যায়, হ্যাকাররা গ্রাহকদের পাসওয়ার্ড চুরি করে একাউন্ট থেকে টাকা চুরি করছে। অনেকেই গ্রাহকদের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এটি হয়, যদি কেউ গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট পাসওয়ার্ড জেনে নিতে পারে, অর্থাৎ একাউন্টের গোপনীয়তায় হারায় তখনই।
তবে এসব বিষয়ে নিজে সচেতন থাকা জরুরি। নিজে সচেতন থাকলে এমন সমস্যাগুলো এড়ানো সম্ভব।
মোবাইল ব্যাংকিং এর কল্যাণে ব্যাংকিং সিস্টেম হয়েছে আরো বেশি সহজ, এসেছে হাতের মুঠোয় যা পৌঁছে গেছে প্রত্যন্ত গ্রামেও।
বাংলাদেশ ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে।
এসএ/