ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৮ ১৪৩১

মর্যাদায় পিছিয়ে প্রাথমিকের সহকারি শিক্ষকরা (ভিডিও)

রিয়াজ সুমন, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫৪ এএম, ১ মার্চ ২০২৩ বুধবার

শিক্ষায় এগিয়ে থেকেও মর্যাদায় অনেকের চেয়ে পিছিয়ে প্রাথমিকের সহকারি শিক্ষকরা। এখন যারা সহকারি শিক্ষক হচ্ছেন, তারা যোগ্যতায় স্নাতক বা স্নাতকোত্তর। পাচ্ছেন ১৩তম গ্রেড। কিন্তু স্নাতক বা এর কম যোগ্যতায়ও কয়েকটি পেশায় দেয়া হচ্ছে ১০তম গ্রেডের মর্যাদা। 

২০১৯ সালের নিয়োগবিধি অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক পদে নারী-পুরুষ উভয়ের নিয়োগ যোগ্যতা দ্বিতীয় শ্রেণীর স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি। পদমর্যাদা ১৩তম গ্রেড।  

অথচ একই শিক্ষাগত যোগ্যতায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক পদে দেয়া হচ্ছে ১০তম গ্রেড। আবার নার্স, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব; তারাও পাচ্ছেন ১০ম গ্রেড। অর্থাৎ বেশি বেতন-ভাতা। 

শিক্ষাগত যোগ্যতায় পিছিয়ে না থাকা সত্ত্বেও কেন ১০তম গ্রেড পাবেন না প্রাথমিকের সহকারি শিক্ষকরা? এমন প্রশ্ন তুলছেন তারা। 

প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক সমন্বয় পরিষদের সমন্বয়ক মু. মাহবুবর রহমান বলেন, “সর্বসাকুল্যে আমরা ১৭ হাজার ৬৫০ টাকা পাই। সেখানে বিএফ কর্তন হয় ১শ’ ১০ টাকা। ১৭ হাজার ৫৪০ টাকা দিয়ে আমাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। অথচ দেশ উন্নয়নশীল কাতারে স্থান পেয়েছে। কিন্তু আমাদের রাখা হয়েছে সমাজের নীচু স্তরে।”

গ্রেড-বৈষম্য দূর করতে ২০২১ সালের ২৯ ও ৩০ নভেম্বর যথাক্রমে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ২০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষকরা। 

দাবি বাস্তবায়নে গত ১০ নভেম্বর হাইকোর্টেও রিট করেন শিক্ষকরা। ১৪ নভেম্বর সহকারি শিক্ষকদের পদমর্যাদা কেন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার নির্দেশ দেওয়া হবে না, এই মর্মে রুল জারি করেন আদালত। 

শিক্ষার মান বৃদ্ধির স্বার্থে গ্রেড-বৈষম্য দূর হওয়া উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।   

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, “আমরা এখনও তাদের সুযোগ-সুবিধাগুলো উন্মুক্ত করতে পারিনি। বেতন-ভাতা এবং মর্যাদা উন্নতমানের বা উঁচুমানের না হওয়ার কারণে মেধাবিদের আকৃষ্ট করতে পারতে পারিনি প্রাথমিকের শিক্ষায়।”

এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বলছেন, শিক্ষকদের মান-মর্যাদা আগের চেয়ে বাড়িয়েছে বর্তমান সরকার। 

সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, “একসময়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ১৬তম গ্রেডে ছিলেন। তার মানে আমার সমাজ, আমার সরকার, আমার রাষ্ট্র এবং নাগরিকদের ডিমান্ডের প্রেক্ষিতে তাদের গ্রেড উন্নত হয়েছে। সুতরাং অনেক এগিয়েছে এবং আমরা একটা সম্মানজনক অবস্থায় এসেছি।”

সময়ের প্রয়োজনে সরকার যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানান সচিব।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, “যদি প্রয়োজন হয় সামনের দিকে আরও ভিন্নভাবে চিন্তা করার সুযোগ আছে।”

এএইচ