ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৮ ১৪৩১

দূর হচ্ছে বঞ্চনা, প্রাথমিক শিক্ষকদের পদোন্নতি চূড়ান্ত (ভিডিও)

রিয়াজ সুমন, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:০৬ পিএম, ২ মার্চ ২০২৩ বৃহস্পতিবার

প্রাথমিক শিক্ষকদের বঞ্চনা দূর হচ্ছে। চূড়ান্ত হয়েছে পদোন্নতি বিধিমালা। শিক্ষকরা যোগ্যতা অনুযায়ী পদোন্নতি পেয়ে হতে পারবেন শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক। এছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সৃজন হচ্ছে সহকারি প্রধান শিক্ষকের পদও।

সুলতান আহমেদ, বরগুনা জেলার গৌরচন্না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ছিলেন। টানা ৩৯ বছর কর্মজীবনে পদোন্নতি জোটেনি। হতাশা নিয়ে অবসরে গেছেন ২০১২ সালে। দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে যাদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়েছেন, তদের অনেকেই এখন সমাজ ও রাষ্ট্রের উঁচু পদে।

তিনি জানান, সাড়ে ৩৯ বছর একই পদে চাকরি করেছি। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, আমাদের কোনো পদোন্নতি নাই। 

একই জেলার আয়েশা আকতার, পূর্ব ঢলুয়া আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টানা ১৭ বছর সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি করছেন। এখন পর্যন্ত পদোন্নতি হয়নি। আদৌ পদোন্নতি পাবেন কি-না, নিশ্চিত নন এই শিক্ষক।

শিক্ষক আয়েশা আকতার বলেন, “অনেক শিক্ষকই প্রায় ৩০-৪০ বছর সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি করেই অবসরে চলে গেছেন।”

এমন বাস্তবতার মধ্যে শিক্ষকতা করছেন দেশের ৬৫ হাজার ৫৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশির ভাগ সহকারি শিক্ষক।  

তবে আশার কথা, দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর প্রাথমিক শিক্ষকদের পদোন্নতি জটিলতা কাটছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত বিধিমালাও চূড়ান্ত করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। বাকি প্রক্রিয়া শেষে শুরু হবে বাস্তবায়নের কাজ। 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, “প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী বিধিমালা ইতিমধ্যে সচিব কমিটিতে অনুমোদন হয়েছে। সর্বশেষ পাবলিক সার্ভিস কমিশনেও অনুমোদন হয়েছে, এখন আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটি হয়ে আসলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে আশা করছি, খুবই অল্প সময়ের মধ্যে এটা জারি করতে পারবো।”

বিধিমালা অনুযায়ী যোগ্যতার ভিত্তিতে ১৩তম গ্রেডের প্রাথমিকের সহকারি শিক্ষকরা পদোন্নতি পেয়ে তৃতীয় গ্রেডের কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ পাবেন। অর্থাৎ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক হতে পারবেন তারা। এছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষকের পদ সৃজন হচ্ছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। 

সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, “সরকারি প্রধান শিক্ষকের একটি পদ সৃজন করার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এটার উপর কাজ চলছে।”

শিক্ষাবিদরা বলছেন, পদোন্নতির এমন সুযোগ মেধাবীদের শিক্ষকতায় আসতে আরও আগ্রহী করবে।  

গণসাক্ষরতা অভিযান নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, “একজন প্রাথমিক শিক্ষকের সবধরনের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তিনি কেন কোনো দিন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হতে পারবেননা। কারণ একটাই, তাদের জন্য সুযোগটা ওইভাবে করা হয়নি, কোনো ক্যাডার সার্ভিস নাই। পাবলিক সার্ভিসের আওতায় তাদের নিয়োগ, তাদের দক্ষতা-যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি এর সবই হতে পারে।”

তবে পদোন্নতির পাশাপাশি শিক্ষকদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে জোর দেওয়া জরুরি বলছেন বিশেষজ্ঞরা।                          

এএইচ