বিশ্ব শ্রবণ দিবস আজ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৫৭ এএম, ৩ মার্চ ২০২৩ শুক্রবার
‘কর্ণ ও শ্রবণসেবা সকলের তরে, আসুন করি বাস্তবায়ন ঘরে ঘরে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব শ্রবণ দিবস।
আমাদের পাঁচ ইন্দ্রিয়ের একটি হচ্ছে শ্রবণেন্দ্রিয়। কান দিয়ে আমরা শুনি অথচ গুরুত্ব দিই কম। আর এই কানে শোনার যত্নে বরাবরই আমরা উদাসীন। এর ফলে বধিরতা পর্যন্ত হতে পারে। কানের যত্ন সবারই নেওয়া উচিত। তবে শিশু, বৃদ্ধ ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের বিশেষ সতর্কতা নেওয়া দরকার। বিশ্বে ৫ শতাংশের বেশি মানুষের কোনো না কোনো মাত্রায় শ্রবণহীনতা রয়েছে।
সমীক্ষায় দেখা যায়, আমাদের দেশের প্রায় ৯ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ যেকোনো মাত্রার বধিরতায় ভুগে থাকেন। একটু সচেতন হলে এড়ানো যায় কানের অনেক রোগ।
রাজধানী ঢাকা শহরে শব্দদূষণ জনসাধারণের মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতার অন্যতম কারণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি তিন বছরের কম বয়স্ক শিশু কাছাকাছি দূরত্ব থেকে ১০০ ডিবি মাত্রার শব্দ শোনে, তাহলে সে তার শ্রবণ ক্ষমতা হারাতে পারে। শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর অন্যান্য উপাদানগুলো হলো—মোবাইল ফোন, হেডফোন ও টেলিভিশনের উচ্চ শব্দ; কলকারখানার শব্দ এবং উচ্চমাত্রার চিৎকার ও হইচই।
এমন পরিস্থিতিতে আজ ৩ মার্চ শুক্রবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব শ্রবণ দিবস-২০২৩।
দিবসটি উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে স্পিচ অ্যান্ড হিয়ারিং সোসাইটি অব বাংলাদেশ। সংগঠনটি স্বাভাবিক শ্রবণ ক্ষমতা রক্ষায় ১৪ দফা সুপারিশ করেছে।
তাদের সুপারিশসমূহের মধ্যে হাইড্রলিক হর্ন বন্ধ করা, আবাসিক এলাকার জন্য শব্দের গ্রহণযোগ্য সর্বোচ্চ মাত্রা ৫৫ ডেসিবল ও বাণিজ্যিক এলাকার জন্য ৭০ ডেসিবল বাস্তবায়ন করা, উচ্চ শব্দের মধ্যে কর্মরতদের ক্ষেত্রে ইয়ার প্লাগ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা, পাঠ্যসূচিতে শব্দদূষণ রোধের বিষয়ে সচেতন করা; পাবলিক প্লেসে মাইক কিংবা স্পিকার ব্যবহারে শব্দের মাত্রা ৫৩ ডেসিবলের মধ্যে রাখার জন্য আইন প্রণয়ন করা উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশে ট্রাফিক পুলিশে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ যারা সারাদিন অধিক শব্দের মধ্যে রাস্তায় কর্মরত, শব্দদূষণের প্রভাবে অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার পাশাপাশি তাদের শ্রবণের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এতে তাদের শ্রবণ ক্ষমতাও কমতে থাকে। একপর্যায়ে ব্যক্তি একেবারে বধিরও হয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশের পরিবেশ অধিদপ্তরের জরিপ অনুসারে দেখা যায়, উচ্চ শব্দ জনসাধারণের মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতার অন্যতম কারণ। এটি উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ হৃদস্পন্দন, মাথাব্যথা, বদহজম ও পেপটিক আলসার সৃষ্টির কারণ, এমনকি গভীর ঘুমকেও ব্যাহত করে শব্দদূষণ। যে কোনো ব্যক্তি যে কোনো স্থানে আধঘণ্টা বা তার অধিক সময় ধরে ঘটা ১০০ ডিবি বা তার অধিক শব্দদূষণের ফলে বধির হয়ে যেতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতানুসারে, সাধারণত ৬০ ডিবি শব্দ এক জন মানুষকে সাময়িকভাবে বধির করে ফেলতে পারে এবং ১০০ ডিবি শব্দ সম্পূর্ণ বধিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
এসএ/