ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

শহীদ মিনার চত্তরে পড়ে ছিল শ্রমিকের মরদেহ

নাটোর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১২:৫১ পিএম, ২২ মার্চ ২০২৩ বুধবার

নাটোরের হয়বতপুর থেকে ফরহাদ খন্দকার (২৮) নামে এক শ্রমিকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সদর উপজেলার হয়বতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পদদেশে রক্তাক্ত মরদেহটি পড়ে ছিল। 

বুধবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। এর আগে মঙ্গলবার মধ্য রাতে স্থানীয়রা মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেয়।

পরকীয়ার জেরে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করছেন নিহতের স্বজনসহ এলাকাবাসী। নিহত ফরহাদ খন্দকার সদর উপজেলার হয়বতপুর এলাকার মৃত মোসলেম খন্দকারের ছেলে। সে হয়বতপুর বাজারের কাঁচামাল আড়তের কুলির কাজ করতেন।
 
পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, ফরহাদ খন্দকার বাড়ির পাশেই হয়বতপুর বাজারে সবজি আড়তে কুলি শ্রমিকের কাজ করতেন। মঙ্গলবার দিন শেষে রাতেও আড়তে কাজ করে ফরহাদ। রাতে কে বা কারা ফরহাদ খন্দকারকে হত্যা করে সবজি আড়তের অদুরে হয়বতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্তরে রক্তাক্ত মরদেহটি ফেলে রেখে যায়। 

বুধবার সকালে খবর পেয়ে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। নিহতের ঘার ও পাঁজরে দুটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে তার। এলাকাবাসীদের ধারণা পরকীয়ার জেরে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।

আক্কাস আলী নামে এক ব্যক্তি জানান, এলাকার ফরহাদ শিকদারের স্ত্রীর সঙ্গে ফরহাদ খন্দকারের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। কিছুদিন আগে ফরহাদ শিকদারের স্ত্রীকে ফরহাদ খন্দকার ভাগিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা সমঝোতা করে ফাহাদ শিকদারের বউকে ফিরিয়ে দেয়। কিন্তু তাদের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক ছিলই। এ নিয়ে ফরহাদ খন্দকারকে মাঝে মধ্যে শাসিয়ে যেতো খন্দকার শিকদার।  এই পরকীয়ার জেরে এই হত্যার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে তার ধারণা।

নিহত ফরহাদের স্ত্রী লুৎফুন নাহার জানান, তার স্বামী প্রতিদিন কাজ শেষে রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্ত গতরাতে ফিরতে দেরি দেখে বার বার তাকে মোবাইল ফোন করা হয়। কিন্ত তাকে পাওয়া যায়না। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে রাত দেড়টার দিকে হয়বতপুর বাজারে যাওয়ার সময় স্কুলের শহীদ মিনারের পাশে রক্তাক্ত ও মৃত অবস্থায় তাকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। 

তিনি আরও বলেন, রাতে পরপর দুইটি বিকট শব্দ শুনেছেন তারা। বেশ কিছুদিন ধরে শিকদার তার স্বামীকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিল। তিনি তার স্বামীর হত্যাকারী ফরহাদ শিকদারের বিচার দাবি করেন।

নিহতের ভাই-বোনও ফরহাদ খন্দকারের হত্যার জন্য ফরহাদ শিকদারকে দায়ী করে তার বিচার দাবি করেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান কালু বলেন, গভীর রাতে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে ফরহাদের লাশ পড়ে থাকার খবর পান। তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুর্ব বিরোধের জেরে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি ধারণা করছেন। এই হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তদন্ত সাপেক্ষে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে বিচার দাবি করেন তিনি।

নাটোর সদর থানার ওসি নাছিম আহমেদ বলেন, হয়বতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশে তার রক্তাক্ত মরদেহটি পড়েছিল। রাতে কে বা কারা তাকে হত্যা করে ওই স্থানে ফেলে রেখে গেছে। কি কারণে কারা এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। তবে নিহতের ঘার ও পাঁজরে দুইটি আঘাত বা ফুটো চিহ্ন রয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।  

এটি গুলিবিদ্ধের ঘটনাও ঘটতে পারে। ময়নাতদন্তের পর এর আসল কারণ জানা যাবে। স্কুল ও ইউনিয়ন পরিষদের সিসি ফুটেজ দেখা হচ্ছে। বিষয়টি উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এএইচ