ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আদালতে হাজির করার প্রস্তুতি চলছে
একুশে টেলিভিশ
প্রকাশিত : ০১:১১ পিএম, ১ এপ্রিল ২০২৩ শনিবার
ডোনাল্ড ট্রাম্পের মামলার শুনানি হবে মঙ্গলবার দুপুরে আর মিস্টার ট্রাম্প যখন ফ্লোরিডা থেকে নিউইয়র্কের আদালতে যাবেন তখন তাকে ঘিরে থাকবে ফেডারেল এজেন্টরা।
তিনি ফ্লোরিডা থেকে তার ব্যক্তিগত বিমানে করে যাবেন বলে মনে করা হচ্ছে এবং তার সুরক্ষার দায়িত্বে থাকবে ওই এজেন্টরা।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ যে তিনি স্টর্মি ড্যানিয়েলস নামের এক নারীর সাথে তার সম্পর্ক গোপন রাখার বিনিময়ে এক লাখ ৩০ হাজার ডলার অর্থ প্রদান করেছেন। মি. ট্রাম্প, তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিষয়টি তদন্তের পর যুক্তরাষ্ট্রের গ্র্যান্ড জুরি ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করার পক্ষে ভোট দিয়েছে।
মিস্টার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে তার একজন আইনজীবী শুক্রবার বলেছেন তিনি নিজেও এগুলো এখনো দেখেননি।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন মি. ট্রাম্পের আদালতে যাওয়ার প্রক্রিয়ার সঙ্গে সিক্রেট সার্ভিসের কয়েক ডজন বা সম্ভবত একশরও বেশি সদস্য জড়িত থাকবেন।
একজন কর্মকর্তা বলেছেন মি. ট্রাম্পকে হাতকড়া পড়ানো হবে না। কারণ এটা সাধারণত তাদেরকেই পড়ানো হয় যাদের ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়।
স্থানীয় সময় বেলা সোয়া দুইটায় শুনানি শুরু হবে।
এবিসি টেলিভিশনকে মি. ট্রাম্পের আইনজীবী জো ট্যাকোপিনা বলেছেন যে ‘মি.ট্রাম্প সম্ভবত মঙ্গলবার আদালতে যাবেন। কিন্তু কিছুই নিশ্চিত নয়”।
অবশ্য তিনি যোগ করেন যে, “প্রেসিডেন্টকে হাতকড়া পড়ানো হবে না”।
মি. ট্রাম্পের আদালতে আত্মসমর্পণকে ঘিরে নিরাপত্তার পুরো বিষয়টি দেখভাল করছে এফবিআই, এনআইপিডি, সিক্রেট সার্ভিস ও নিউইয়র্ক সিটি কোর্ট কর্মকর্তারা।
সিবিসি টেলিভিশনকে একটি সূত্র জানিয়েছে যে এসব সংস্থা এখন মিস্টার ট্রাম্প, বিচারক ও আইনজীবী সহ সংশ্লিষ্টদের ওপর হামলাসহ সম্ভাব্য নানা কিছু বিশ্লেষণ করছে।
ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিস ইতোমধ্যেই ‘অনেকগুলো হুমকি’ পেয়েছে বলে জানিয়েছে ওই সূত্র।
শুক্রবার সকালে আদালত এলাকা ছিলো স্বাভাবিক। কিন্তু পরবর্তী সপ্তাহের কথা চিন্তা করে ব্যারিকেড দেয়া হচ্ছিলো। টহল দিচ্ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
অনেকে মনে করছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট যখন আদালতে আসবেন তখন আসলে পুরো এলাকা লকডাউন করে দেয়া হতে পারে।
এর আগে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিস মিস্টার ট্রাম্পকে শুক্রবারে আত্মসমর্পণ করতে বলেছিলো কিন্তু সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে নিরাপত্তার জন্য সময় দরকার বলে।
মিস্টার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মোট কতগুলো অভিযোগ আনা হয়েছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। কারণ সেগুলো প্রকাশ করা হয়নি।
তার আইনজীবী জো ট্যাকোপিনা বলেছেন মোট কত অভিযোগ আনা হচ্ছে সেটি এখনো তাদের জানা নেই।
ওদিকে শুক্রবারও মি. ট্রাম্প বিচারকদের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
এদিকে রিপাবলিকান স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থি ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে আগামী নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমকে ব্যবহারের অভিযোগ করে তীব্র সমালোচনা করেছেন।
জর্জিয়ার কংগ্রেস সদস্য মারজরি টেইলর গ্রিন তার অনুসারীদের প্রতিবাদ করার আহবান করেছেন। তিনি নিজেও আদালতে উপস্থিত থাকার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।
ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি আলভিন ব্রাগ বলেছেন নিউইয়র্কের নাগরিকরা অভিযোগগুলো এনে তাদের নাগরিক দায়িত্ব পালন করেছেন- সাবেক প্রেসিডেন্ট বা কংগ্রেস কেউই বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারেন না।
ওয়াশিংটনে ইউএস ক্যাপিটল পুলিশ বলেছে তারা মনে করছে যে সারাদেশেই প্রতিবাদ বিক্ষোভ হতে পারে এবং সে কারণে রাজধানীতে নিরাপত্তা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে তারা।
এদিকে হোয়াইট হাউজ থেকে মিসিসিপি যাওয়ার সময় সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করলেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
যদিও জো ট্যাকোপিনা বলেছেন অভিযোগগুলো নিয়ে মি. ট্রাম্প মোটেও উদ্বিগ্ন নন।
মি. ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি প্রাক্তন পর্ণ অভিনেত্রী এবং স্ট্রিপার স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে অর্থ প্রদানের জন্য তার তৎকালীন আইনজীবী মাইকেল কোহেনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
দুই হাজার ষোল সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই সপ্তাহেরও কম সময় আগে এই ঘটনা ঘটে। যেন মি. ট্রাম্পের সাথে ওই নারীর কথিত সম্পর্কের বিষয়টি ধামাচাপা দেয়া যায়। মূলত এই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু হয়।
মিসেস ড্যানিয়েলস বলেছেন যে, মি. ট্রাম্প ২০০৬ সালে লেক তাহো হোটেলে তার সাথে যৌন মিলন করেছিলেন -এটি ট্রাম্পের বর্তমান স্ত্রী মেলানিয়াকে বিয়ে করার পরের বছরের ঘটনা।
কোহেন আদালতে বলেছেন যে, তিনি 'সাবেক প্রেসিডেন্টের নির্দেশনায়' এক লাখ ৩০ হাজার ডলারের বিষয়টি দফারফা করেছেন। মি. কোহেন ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত একাধিক অভিযোগে জেলে ছিলেন।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
এসবি/