ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৭ ১৪৩১

পাটপণ্যের উন্মুক্ত বাজার ধরতে ব্যর্থ দেশের উদ্যোক্তারা (ভিডিও)

মুহাম্মদ নূরন নবী, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২৬ পিএম, ২ এপ্রিল ২০২৩ রবিবার

পরিবেশবান্ধব বৈচিত্র্যময় পাটপণ্যের চাহিদা বিশ্বের সব প্রান্তেই রয়েছে। অথচ বাস্তবতা হলো এসব উন্মুক্ত বাজারে বাংলাদেশি পাটপণ্যের উপস্থিতি হতাশাজনক। এমনকি, দেশের বাজার ধরতেও ব্যর্থতা দেখা যাচ্ছে উ দ্যোক্তাদের।

সম্ভবত পাট-ই এক মাত্র ফসলী উদ্ভিদ, যার প্রত্যেকটি অংশই কাজে লাগানো যায়। 

পাট থেকে বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ, শাড়ি, লুঙ্গি, জুতা, ব্লেজার, টুপি, ব্যাগ, ঘরের পর্দা, চেয়ার, টেবিল, আসবাবপত্রসহ পরিবারের নিত্য ব্যবহার্য সব কিছুই বানানো যায়। 

পাটজাত পণ্যগুলোর ধারণা দিতে ২শ’৮২টি বৈচিত্র্যময় নমুনা রাখা আছে বাংলাদেশ জুট ডাইভারসিফাইড প্রমোশন সেন্টারে। এসব পণ্যের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশও করেছে সরকার। 

তারপরও নেই আশাব্যঞ্জক সাড়া। আর উদ্যোক্তারা হতাশ ক্রয়াদেশ না পেয়ে। 

সোনালী আঁশ গ্রুপের প্রজেক্ট ইনচার্জ মজিবুর রহমান বলেন, “ইউরোপে পাটপণ্যের ব্যাপক চাহিদা। কারণ ওরা অনেক সচেতন, এটা পরিবেশবান্ধব পণ্য। আমাদের দেশে এই সচেতনতা আরও বৃদ্ধি করা দরকার।”

সোনালী আঁশ গ্রুপের ম্যানেজার (মার্চেন্টডাইজার) শামিম হোসেন বলেন, “বেশি রপ্তানি করছে চীন, কিন্তু তারা ব্যবহার করছে ফেক জুট। উৎপাদনে সময় বেশি লাগার কারণে পিছিয়ে যাচ্ছি আমরা।”

এসব প্রত্যেকটি পণ্যের বেশিরভাগই তৈরি হয় হাতে বা হালকা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে। বড় বিনিয়োগকারীরা কারখানায় তৈরি করলেও ব্যক্তি পর্যায়ে বাড়িতেও বানানো যায় এসব পণ্য। 

বাংলাদেশ জুট মিলস এসোসিয়েশন চেয়ারম্যান আবুল হাসান বলেন, “এডিশনাল প্রোডাক্ট ছালা-বস্তা বানালে চলবে না। এর বিকল্প ২৮২টি বের করা হয়েছে, গবেষণা করলে আরও বের হবে।”

পরিবেশবান্ধব বলে ইউরোপের বাজারে পাটজাতপণ্য কিনতে ক্রেতাদের রীতিমত লাইন পড়ে যায়। কিন্তু, এ দেশে সেভাবে এগিয়ে আসছেন না উদ্যোক্তারা। 

অন্যান্য সাধারণ পণ্যে ৭ থেকে ১২ ভাগ ভর্তুকি হলেও বৈচিত্র্যময় পাটপণ্যে ২০ ভাগ সরকারি ভর্তুকি। এসব পৃষ্ঠপোষকতার পরও শুধু বাজার ধরতে না পারায় এগুতে পারছেন না উদ্যোক্তারা।

সারাবিশ্বে এখন পরিবেশবান্ধব পণ্যের দিকে মানুষের বেশি আগ্রহ। কিন্তু বাংলাদেশে সেভাবে সচেতনতা তৈরি করা যায়নি। পাট আমাদের নিজস্ব পণ্য, এই পাটকে ব্যবহার করে এরকম পরিবেশবান্ধব অসংখ্য বহুমুখী পাটপণ্য তৈরি করা যায়। আর এগুলো যদি প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছানো যায় তাহলে একদিকে পাটের চাহিদা যেমন বাড়বে তেমনিভাবে বাংলাদেশও অনেক বেশি পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে। সুদিন ফিরে আসবে পাটের।

এএইচ