প্রতি ১০ হাজার শিশুর মধ্যে ১৭ জনই অটিজমের শিকার (ভিডিও)
শিউলি শবনম, একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:২৫ এএম, ৩ এপ্রিল ২০২৩ সোমবার
দেশে অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু ৭৮ হাজারের উপর। দিন দিন বাড়ছে এ সংখ্যা। দ্রুত বিশেষ শিক্ষা ও উন্নত প্রশিক্ষণের আওতায় নেয়া গেলে অধিকাংশ শিশুকেই মূলধারায় ফেরানো যায়, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে প্রান্তিক পর্যায়ে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে সেবা বাড়ানো না গেলে অটিজম মোকাবেলা দুরূহ হয়ে পড়ার আশঙ্কা তাদের।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্টিক নিউরো ডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম-ইপনা’র সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, দেশে ১৬ মাস থেকে ৩০ মাস বয়সী শিশুর মধ্যে প্রতি ১০ হাজারে ১৭ জন অটিজমের শিকার।
২০১৩ সালে শুরু হওয়া সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ জরিপ বলছে, গত ১০ বছরে অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন শিশু মোট ৭৮ হাজার ২১৬ জন।
অটিজম কোনো রোগ নয়, মস্তিষ্কের বিকাশজনিত এই সমস্যাকে একসময় অভিশাপ ভেবে শিশুকে আড়াল ও চিকিৎসা থেকে দূরে রাখার প্রবণতা ছিল। তবে এখন মানুষের মধ্যে বাড়ছে সচেতনতা।
ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরো ডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম কনসালটেন্ট ডা. সানজিদা আহমেদ বলেন, “এখন দেখতে পাচ্ছি এই ধরনের সমস্যায় ১৫ থেকে ১৮ বয়সী শিশুকে নিয়ে আমাদের কাছে আসছে। যখন প্রথম শুরু করেছিলাম তখন অনেক বড় বড় বাচ্চাদের নিয়ে আসতো। কাজ অনেক দূর এগিয়েছে, এখন আর বাচ্চাকে কেউ লুকিয়ে রাখে না।”
অটিজম মোকাবেলায় নেই সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা। এজন্য চিকিৎসক, থেরাপিস্ট, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হয়।
ডা. সানজিদা আহমেদ বলেন, “শুধু ডাক্তার নয়, থেরাপিস্ট, সাইকোলজিস্ট- সবাইকেই লাগে। বিহেভিয়ার ম্যানেজমেন্ট লাগে। এখানে অভিভাবকদের বড় ভূমিকা রয়েছে। বাচ্চারা তাদের সঙ্গে যতোক্ষণ থাকবে একটা নিয়মের মধ্যে তাকে ম্যানেজমেন্ট দিতে হবে। এ জন্য অভিভাবকদের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।”
বিশেষ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ-সুবিধাকে তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়া বেশি জরুরি, এমনটা বলছেন উন্নয়নকর্মীরা।
মুনফ্লাওয়ার অটিজম ফাউন্ডেশন নির্বাহী পরিচালক মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, “শহরকেন্দ্রিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটা না করে বাংলাদেশের প্রতিটি ইউনিয়নে প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে সেগুলোতে শিশুদের জন্য একটা বা দুটা ক্লাস বিশেষ শিশুদের জন্য নির্ধারণ করা যেতো তাহলে বেশি ভালো হতো।”
অটিজমের জন্য বংশ ও পরিবেশগত কারণ, বাবা-মায়ের বয়স বেশি হওয়া, পরিবারের সদস্যদের কম সময় দেয়াসহ বিভিন্ন বিষয়কে দায়ী করা হলেও কোনো গবেষণাই নিশ্চিত করতে পারেনি প্রকৃত কারণ।
এএইচ