ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২১ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

কালকিনিতে জমে উঠেছে ঈদের বাজার

কালকিনি (মাদারীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১২:২৯ পিএম, ৯ এপ্রিল ২০২৩ রবিবার

রোজার অর্ধেকের বেশি শেষ হয়ে গেছে। এখন ঈদের কেনাবেচায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগরম মাদারীপুরের কালকিনির প্রতিটি দোকান। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম এবার বেশি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।

রোববার (৯ এপ্রিল) সকালে কালকিনি উপজেলার বিভিন্ন মার্কেট, বিপণিবিতান ও শোরুম ঘুরে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রেতারা দর-কষাকষি করে ঈদের কেনাকাটা করছেন। 

মার্কেটের মালিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথম রোজার পর থেকে ঈদের কেনাকাটা করতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষজন বিপণিবিতানগুলোতে আসছেন। তবে গত কয়েকদিন ধরে পুরোপুরি জমে উঠেছে ঈদের বাজার। ঈদের সময় ঘনিয়ে আসলে বেচাকেনার চাপ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে বলে জানান তারা। 

সবচেয়ে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যায় মেয়েদের ও ছোট শিশুদের জামাকাপড়ের দোকানে। তবে এবার পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা বুঝেশুনে সময় নিয়ে কেনাকাটা করছেন।

একুশে টিভির প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয় কয়েকজন ক্রেতার। তারা জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা হতে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন। পরিবারের সবার জন্য ঈদের কেনাকাটা করবেন। তবে এবার প্রায় সকল কিছুরই দাম বেশি বলে অভিযোগ তাদের। 

ক্রেতাদের একজন দুই মেয়ে নিয়ে এসেছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। তিনি বলেন, মার্কেটে মানুষের অনেক ভিড়। সব জিনিসের দাম দ্বিগুণ। সকালে এসেছি দুই মেয়ে, শ্বশুর, শাশুড়ি ও নিজের জন্য জামা-কাপড় কিনতে। সবার পোশাকের দাম অনেক বেশি। এই পর্যন্ত ঘুরে শুধু মেয়েদের কেনাকাটা সেরেছি। বিকেলের মধ্যে সবার কেনাকাটা শেষ করে বাড়ি ফিরব। 

ক্রেতাদের আরেকজন বলেন, আমার নিজের ও দুই ছেলে-মেয়ে কেনাকাটা করতে ৮ হাজার টাকা নিয়ে এসেছিলাম। জামা-কাপড়, জুতার এতটাই দাম, বাচ্চাদের কেনাকাটা করতে গিয়ে সব টাকা শেষ। নিজের জন্য কোনো কিছু না কিনেই এখন বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। 

শহরের নাম করা কয়েকটি কাপড়ের দোকানের মধ্যে একটি তানিয়া বস্ত্রালয়। এখান থেকে নিয়মিত জামা, গজ কাপড় কেনেন শিক্ষক রাসিদা জামান রিক্তা। তিনি বলেন, দুই মাস আগে যে গজ কাপড় ১৫০ টাকায় কিনেছি, সেগুলোর দাম এখন ৩২০ টাকা দাম চাচ্ছে। গত মাসে পাকিস্তানের যেসব থ্রি পিছ ৪ হাজার টাকায় কিনেছিলাম, সেগুলো এখন ৬ হাজার টাকার কম বিক্রি করতে চাচ্ছে না। এমন দাম হলে মানুষ কীভাবে ঈদের কেনাকাটা করবে। সিন্ডিকেট করে দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তার।

পোশাক কেনা শেষে সবাই ঢুঁ মারছেন জুতা ও কসমেটিকসের দোকানে। ক্রেতারা তাদের পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে জুতা নিচ্ছেন। এখানেও দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের রয়েছে আক্ষেপ।

জুতার দোকানের এক মালিক বলেন, জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি। তিন মাস আগে যে জুতা ৫০০-৭০০ টাকায় পাইকারি কিনেছি, সেগুলো ঈদ উপলক্ষে ৮০০-১০০০ হাজার টাকায় কিনেছি। এতে বাধ্য হয়ে আমাদেরও বেশি দামে জুতা বিক্রি করতে হচ্ছে। ক্রেতারা দোকানে আসেন, দাম বেশি হওয়ায় দরদাম করে চলে যান। তবে আশা করছি, ঈদের আগে বিকিকিনি পরিমাণ অনেক ভালো হবে। 

পোশাকের রং ও ধরনের সঙ্গে মিল রেখে তরুণী ও নারীরা কিনছেন বিভিন্ন গয়না, গলার সেট, হাতঘড়ি, পায়েল, ব্রেসলেট, মাথার টিকলি, সানগ্লাস ও বাহারি রঙের চুড়ি। 

গত দুই বছর করোনার কারণে ঈদে বিপণিবিতানগুলোতে বিক্রির পরিমাণ একটু কম ছিল। এ বছর রমজানের শুরু থেকেই বেচাকেনা শুরু হয়েছে।

দাম একটু বেশি হলেও এবারের ঈদে বিক্রির পরিমাণ বাড়বে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

এএইচ