চোরাইপথে আসছে ভারতীয় কাতান-বেনারসি, বেকায়দায় উৎপাদকরা (ভিডিও)
মাখন দাস, নরসিংদী থেকে
প্রকাশিত : ০১:৫৬ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০২৩ সোমবার
ডলার সাশ্রয়ে আমদানি নিরুৎসাহিত করায় চোরাইপথে আসছে ভারতীয় কাতান-বেনারসি। আর এতে বেকায়দায় পড়েছেন নরসিংদীর জামদানি-কাতান শাড়ি উৎপাদকরা। সুষ্ঠু বাজার-ব্যবস্থাপনায় বাণিজ্য মন্ত্রণায়লসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জোরালো পদক্ষেপ দাবি ব্যবসায়ীদের।
তৈরি পোশাক বাদে দেশীয় কাপড়ের চাহিদার প্রায় ৭৫ ভাগ পূরণ করে নরসিংদী। জেলার মনোহরদীর দৌলতপুর, রায়পুরার হাসনাবাদ, আদিয়াবাদ, সদর উপজেলার করিমপুর, শ্রীনগরসহ আরও কিছু এলাকায় তৈরি হয় জামদানী ও কাতান শাড়ি। ভারতীয় বেনারসির আদলে বিপুল পরিমাণ তাঁতের শাড়ীও বুনেন নরসিংদীর কারিগররা।
কিন্তু চোরাইপথে আসা বিদেশি শাড়ি নরসিংদীর কারিগরদের সংকটের মধ্যে ফেলেছে। ভারতীয় শাড়ীর দাপটে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত জামদানী, কাতানসহ বেনারসির আদলে তৈরি তাঁতের শাড়ীর বেচাকেনা একেবারে কমে গেছে।
নরসিংদীর জামদানী-কাতান শাড়ী উৎপাদকরা বলেন, “ইন্ডিয়ার কাপড় আসার পর আমাদের কাজকর্ম একেবারেই কমে গেছে। যে কাপড়টার পেছনে সাড়ে ১১শ’ টাকা খরচ হয় সেটা এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ১ হাজার টাকা। দেড়শ’ টাকা লোকসান দিতে হয়।”
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, নরসিংদীর জামদানির খ্যাতি দেশ-বিদেশে। তবে ভিনদেশি পণ্যের প্রতিও ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়ছে।
নরসিংদী শাড়ী কাপড় বিক্রেতা বলেন, “ইন্ডিয়ান কাপড়টা কোনো অকেশন বা পার্বনে পড়া হয়। কিন্তু জামদানিটা সবসময়েই চলে, যে কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান। জামদানি বাংলাদেশী পণ্য, বাংলাদেশেই এটা তৈরি হয়।”
নরসিংদীর বাজারগুলোতে অবৈধ বিদেশি পণ্যের সয়লাবে চিন্তিত ব্যবসায়ী নেতারা। স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষায় চোরাই পণ্যের প্রবেশ ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ চান তারা।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস্ এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, “এসব অবৈধ পণ্য আনার ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থার তত্ত্বাবধান বাড়ানো উচিত।”
এফবিসিসিআই পরিচালক আলি হোসেন শিশির বলেন, “৫ হাজার পিসের এলসি করে কিন্তু দেখা যায় আনছে ১ লাখ পিস।”
নরসিংদী চেম্বর অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট মো: মোমেন মোল্লা বলেন, “এরা স্বাবলম্বি হতে পারে, এরা দিন দিন উন্নতি করতে পারে। তাদের সহযোগিতা করার জন্য বিশেষভাবে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
ঈদুল ফিতরকে ঘিরে ব্যবসায়ীরা আশান্বিত হলেও ভিনদেশী পণ্যে বাজার সয়লাব হওয়ায় চিন্তার ভাজ স্থানীয় উৎপাদক এবং বিক্রেতাদের কপালে। সুষ্ঠু বাজার-ব্যবস্থাপনায় বাণিজ্য মন্ত্রণায়লসহ সংশ্লিষ্টদের জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি ব্যবসায়ীদের।
এএইচ