ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

বিএনপি-জামায়াত অগ্নিসন্ত্রাসের প্রবর্তক: শেখ পরশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩৩ পিএম, ১৮ এপ্রিল ২০২৩ মঙ্গলবার

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, সাম্প্রতিক আগুনের ঘটনা আমাদের ব্যথিত করছে। জনমনে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই ঘটনা নাশকতার ষড়যন্ত্র কি না সেটা সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করছি।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে ভাসানটেক সরকারি কলেজ মাঠে (বিআরপি সংলগ্ন) পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে শেখ হাসিনার ঈদ উপহার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ফখরুল সাহেবরা ২০০৪ সালেও বলেছিলেন, ২১ এ আগস্ট শেখ হাসিনা নাকি ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে এসেছিলেন। এখন তিনি বলছেন, আমরাই নাকি আগুন লাগিয়েছি। আমি অবাক হইনি, তাদের এ রকম অসংলগ্ন এবং অসংবেদনশীল কথা শুনে। যে দলের নেত্রী ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করেন তাদের রুচি সম্পর্কে আমার জানা আছে। জনগণ অনুমান করে যে, বিএনপি দায়ী। তারা যাদের সঙ্গে শরিক করেছে জামায়াত তারা-তো আগুন দেওয়ার প্রবর্তক;
১৯৭১ সাল তার প্রমাণ। ৭১ সালে এই জামায়াত আমাদের গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে। ২০১৪ সালেও এই জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে তারা অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। সুতরাং তাদের সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আছে।

শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ১৭ এপ্রিল ছিল মুজিবনগর সরকার দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য দিন এ ১৭ এপ্রিল। এই দিন মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কিন্তু বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুজিবনগর সরকারের অধীনে যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। যেখানে বিদেশি রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি সৃষ্টি করার পেছনে
এই মুজিবনগর সরকার অসাধারণ কূটনৈতিক সফলতা প্রদর্শন করেছিল। তিনি কেন অস্বীকৃতি জানিয়েছিল সে ব্যাপারে যথেষ্ট প্রশ্ন থাকে।

তিনি আরও বলেন, ভোটে জিততে পারবে না বলে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে বিএনপি। নির্বাচনে আসার তাদের যোগ্যতা নেই। নির্বাচনে জিততে পারবে না সেটা তারা জানে। কারণ তারা গত ১৪ বছর মানুষের পাশে যায়নি। এই যে এত বড় করোনা গেল, সারা বিশ্বে মহামারির, এ যে রমজান গেল কিন্তু জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি। তাই তারা নির্বাচনে ভয় পায়। বিএনপি মনে করে তারা নির্বাচনে না গেলে সংসদ নির্বাচন বৈধতা পাবে না। আমি বিএনপিকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই এর আগেও তারা নির্বাচন বয়কট করেছিল। কিন্তু তাতে বৈধতার কোনো সংকট হয়নি। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, যারা সংসদ মানে না, আইন মানে না, গণতন্ত্র মানে না, তাদের সঙ্গে কোনো আপোষ নাই। নির্বাচন হবে এ বছরের শেষের দিকে, এই নির্বাচনে যারা আসবে ভালো, কাউকে আমরা দাওয়াত দিয়ে আনব না। যারা আসবে তাদের নিয়ে নির্বাচন হবে, সংবিধান মোতাবেক নির্বাচন হবে, সময় মত নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশনার নির্বাচন পরিচালনা করবে। আমরা তাদের সহযোগিতা করব। আর যদি বিএনপি নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করে তাহলে জনগণ আর বসে থাকবে না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, করোনার মহামারিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে যুবলীগের নেতাকর্মীরা যেভাবে সাধারণ মানুষের পাশে ছিল, ঠিক সেই একইভাবে এখনো তারা মানুষের পাশে রয়েছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের ফলে যখন ইউরোপসহ অন্যান্য দেশে দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। তারধাক্কা আমাদের দেশেও লেগেছে। কিন্তু  বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘২০০১-২০০৬ সালের বিএনপি আমলের সন্ত্রাসীরা আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। ঈদের পর থেকে এলাকাভিত্তিক বিএনপির তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। আজকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যে অগ্নিকাণ্ড ঘটছে তাতে আমি মনে করি বিএনপি-জামায়াতের হাত রয়েছে। কারণ বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি মানেই অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষের জানমালের ক্ষতি, মানুষের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করে। আওয়ামী লীগ হচ্ছে এদেশের মাটির শিকড় থেকে গড়ে ওঠা সংগঠন। মানুষের সেবা করাই আমাদের ধর্ম, আমাদের শিক্ষা।’

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এনামুল হক খান, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা।

আরও উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নবী নেওয়াজ, তাজউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, মো. রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জহির উদ্দিন খসরু, মশিউর রহমান চপল, অ্যাডভোকেট ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, ধর্ম সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান সরদার, উপ-গ্রন্থনা ও
প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. রাশেদুল হাসান সুপ্ত, উপ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সামছুল ইসলাম পাটোয়ারী, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মো. গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতারা।
কেআই//