ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

সুদানে সংঘাত বন্ধে দুই জেনারেলের ওপর চাপ প্রয়োগের আহবান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:০৮ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০২৩ সোমবার

সুদানে সামরিক বাহিনীর দুই গ্রুপের মধ্যে সশস্ত্র লড়াই শুরু হওয়ার এক সপ্তাহেরও বেশি সময় পর দেশটি থেকে বিদেশী নাগরিক ও কূটনীতিকদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং কানাডা রোববার ঘোষণা করেছে যে তাদের কূটনীতিকদের ইতোমধ্যেই বের করে নেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ নিশ্চিত করেছেন রোবি ও সোমবার- এই দুদিনে প্রায় চারশ’ নাগরিক ও কূটনীতিককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও জার্মানি, ইতালি, স্পেন, আর্জেন্টিনা কলম্বিয়া, আয়ারল্যান্ড, পর্তুগাল, পোল্যান্ড, মেক্সিকো, তুরস্ক, ভেনিজুয়েলার নাগরিক ও কূটনীতিকদেরও সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

এই তালিকায় আরো রয়েছে - চীন, জাপান, আজারবাইজান, ইয়েমেন, মিশর, পাকিস্তান এবং উপসাগরীয় কয়েকটি দেশ।

সুদানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার ডেপুটি ও আধা-সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস আরএসএফের প্রধান জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালোর মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিয়ে এই সংঘাত চলছে।

যুদ্ধ বন্ধে এই দুই জেনারেলের ওপর চাপ সৃষ্টির আহবান জানিয়েছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন।

সুদানি সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে এই সংঘাতে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও নাগরিকরা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দেশটিতে আটকা পড়ে আছেন।

এক সপ্তাহ পর বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের রাজধানী খার্তুম থেকে সরিয়ে নেওয়া হলেও এসব দেশের সাধারণ নাগরিকদের অনেকেই এখনও দেশটিতে আটকা পড়ে আছেন।

বলা হচ্ছে যুদ্ধের কারণে তাদেরকে সরিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যেসব ব্রিটিশ এখনও আটকা পড়ে আছেন, যুদ্ধবিরতি না হওয়া পর্যন্ত তাদের “সীমিত সাহায্য” দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

তিনি বলেন, “কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে সুনির্দিষ্ট হুমকি ও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে” এবং সে কারণেই রাজধানী খার্তুমে ব্রিটিশ দূতাবাস থেকে তাদেরকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সুদানে বসবাসকারী ব্রিটিশ একজন ব্যবসায়ী বিবিসিকে বলেছেন, দেশটিতে “এখনও যারা রয়ে গেছেন তাদের অবস্থা ভয়াবহ।”

খার্তুমে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাদের টুইটার ফিডে বলা হয়েছে এখনও যেসব মার্কিন নাগরিক রয়ে গেছে, সরকারের পক্ষে তাদেরকে সরিয়ে নেওয়া বর্তমানে নিরাপদ নয়।

খবরে বলা হচ্ছে বিদেশি নাগরিক ও কূটনীতিকদের যখন সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে তখন দেশটিতে যুদ্ধের তীব্রতাও কমে গেছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল জানিয়েছেন যে সোমবার এক হাজারেরও বেশি ইউরোপিয়ান নাগরিককে সুদান থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেছেন, এই সংঘাতের কোনো সামরিক সমাধান নেই।

বর্তমান সঙ্কট সমাধানে রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছাতে বিবদমান দুই জেনারেলের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য তিনি আন্তর্জাতিক বিশ্বের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

বোরেল জানান, তিনি দুই জেনারেলের সঙ্গেই যোগাযোগ করেছেন এবং তাদেরকে তিনি পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেন।

সুদানে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে জেনারেলদের একটি কাউন্সিল দেশটি পরিচালনা করছে। এই কাউন্সিলের শীর্ষ দুই সামরিক নেতাকে ঘিরেই এই লড়াই।- বিবিসি বাংলা