যেসব কারণে পড়তে যাবেন জাপানে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:০৬ পিএম, ২ মে ২০২৩ মঙ্গলবার | আপডেট: ১২:১৭ পিএম, ২ মে ২০২৩ মঙ্গলবার
যারা বিদেশে লেখাপড়া করতে চান তাদের জন্য অন্যতম পছন্দের গন্তব্য হতে পারে জাপান। কিন্তু যে কোনো দেশে পড়তে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন কারণ থাকে। জাপান কেন অন্য সব দেশ থেকে আলাদা চলুন সেটি আগে জেনে নিই।
সাড়া দুনিয়ায় গণিত শেখার জন্য জাপানের হাই স্কুলগুলোর র্যাংকিং হচ্ছে ১ নম্বর আর বিজ্ঞান বিষয়ক পড়াশোনার জন্য স্কুলগুলোর র্যাংকিং হচ্ছে ২ নম্বর। জাপানে প্রায় ৭০০ বিশ্ববিদ্যালয় আছে। বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকার প্রথম ৫০টির মধ্যে আছে জাপানের দ্য ইউনিভার্সিটি অফ টোকিও আর কিয়োটো ইউনিভার্সিটি। সেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কেবল জাপানেরই আছে ১৬টি।
ব্রিটিশ দৈনিক পত্রিকা টেলিগ্রাফের তথ্যমতে, পড়াশোনার জন্য সেরা শহরগুলোর মধ্যে টোকিওর অবস্থান ৩ নম্বরে। আর এশিয়ার মধ্যে পড়াশোনার জন্য শ্রেষ্ঠ জায়গা হচ্ছে জাপান। টাইমস হায়ার এডুকেশনের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি র্যাংকিংয়ে সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় ২০টিই জাপানের। এর মধ্যে এক নম্বর হচ্ছে ইউনিভার্সিটি অব টোকিও।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী জাপানে স্নাতক পর্যায়ে পড়তে যান। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করেই জাপানের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি আবেদন করা যায়। বাংলাদেশে অবস্থিত জাপানের দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করা যায়। জাপানের বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও বৃত্তির সুযোগ আছে। আরও জানা যাবে এই লিংকে- https://www.bd.emb-japan.go.jp/itpr_en/education.html।
বৃত্তির সুযোগ
জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ে বৃত্তির পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। জনপ্রিয় বৃত্তিগুলোর মধ্যে মেক্সট বৃত্তি উল্লেখযোগ্য। এই বৃত্তিপ্রাপ্তদের কোনো টিউশন ফি বা ভর্তি ফি দিতে হয় না। থাকা-খাওয়ার খরচ, আসা-যাওয়ার বিমানভাড়াও বৃত্তির অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া ‘এডিবি-জাপান স্কলারশিপ প্রোগ্রাম’ এ শিক্ষার্থীরা টিউশন ফি ছাড়া পড়ার সুযোগ পান। আরেকটি জনপ্রিয় বৃত্তি হলো জাপান-বিশ্বব্যাংক বৃত্তি। এর মাধ্যমে মাস্টার্স, পিএইচডি ডিগ্রিসহ নানা প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক অফিসে ই-মেইল করে এসব বৃত্তি ও ফেলোশিপের সুযোগ সম্পর্কে জানা যাবে।
বৃত্তির জন্য যোগ্যতা
জাপানে পড়াশোনার পরিবেশ প্রতিযোগিতামূলক ও সৃজনশীল। বৃত্তি পেতে হলে ভালো স্কোর থাকতে হবে, গবেষণা ও উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী হতে হবে। মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ে পড়ার জন্য পরিশ্রম করার মানসিকতা থাকতে হবে। বৃত্তির জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সনদপত্রের পাশাপাশি ‘স্টেটমেন্ট অব পারপাস’, গবেষণা করতে কেন আগ্রহী- এসব নিয়ে অনুচ্ছেদ লিখতে হয়। এ ছাড়া আগের গবেষণার অভিজ্ঞতা, বিভিন্ন সামাজিক কাজে অংশগ্রহণের সনদও গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হয়।
জাপানের একেক বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশন ফি একেক রকম। বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ হাজার ডলার থেকে ফি শুরু হয়। বেসরকারি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে ন্যূনতম ৮ হাজার ডলার ফি নেওয়া হয়। জাপানে বৃত্তি ছাড়াও পড়ার সুযোগ আছে। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিক খরচের সঙ্গে প্রতি সেমিস্টারে ৫ লাখ ৩২ হাজার ইয়েন বা প্রায় ৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা যুক্ত হয়।
ভাষা
স্নাতক পড়ার সময় জাপানি ভাষা জানতে হবে। মাস্টার্স ও পিএইচডি পর্যায়ে ইংরেজি ভাষায় পাঠ্যক্রম থাকায় জাপানি ভাষা না জানলেও খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয় না। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জাপানি ভাষা শেখার সুযোগ অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই থাকে। এছাড়া ইউটিউবসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ভাষা শেখানোর প্ল্যাটফর্ম থেকে যে কেউ জাপানি ভাষা শিখতে পারেন।
কাজ করার সুযোগ
জাপানি ভাষা জানলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ পাওয়া সহজ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গবেষণাগার ও সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে কাজের সুযোগ থাকে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে সাধারণত ২৮ ঘণ্টার মতো কাজের সুযোগ পান।
অন্য দেশে চাকরির সুযোগ
বাংলাদেশের শিক্ষার্থী বা গবেষকদের জাপানে চাকরির নানা সুযোগ আছে। ভাষা জানলে সুযোগ বেশি। বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোয় কাজ করতে পারেন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান, গবেষণাগার, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানেও কাজ করেন অনেকে। জাপান থেকে সরাসরি ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়ে যাচ্ছেন অনেক শিক্ষার্থী।
এই হলো জাপানে উচ্চশিক্ষার জন্য মূল তথ্য। তবে জাপানে পড়তে যাওয়ার আগে ভালোভাবে জেনেবুঝে আবেদন করতে হবে। আপনার যদি আগ্রহ থাকে, তাহলে আজ থেকেই শুরু করে দিন প্রস্তুতি।