উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসায় পরীক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ
বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১:৪৮ এএম, ১১ মে ২০২৩ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:৪৯ এএম, ১১ মে ২০২৩ বৃহস্পতিবার
বরগুনার বামনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সাইতুল ইসলাম লিটুর বাসায় ডেকে নিয়ে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে মারধর ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার (১০ মে) এসএসসির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষা শেষে বন্ধুদের সঙ্গে উপজেলা পরিষদ পুকুরঘাটে ছবি তুলতে গেলে ওই শিক্ষার্থীকে উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসায় ধরে নিয়ে যায় কতিপয় কিশোরগ্যাং সদস্যরা। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান তার বাসায় ছিলেন না বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী মো. সানাউল্লাহ (১৬) বামনা উপজেলার আমতলী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ও বামনা সারওয়ারজান পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
এঘটনায় ওই এসএসসি পরীক্ষার্থী নিজে বাদী হয়ে বামনা থানায় ৫ জনকে নামীয় ও ৫-৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বামনা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আসামিরা হলেন বেবাজিয়াখালী গ্রামের কামাল গোলদারের ছেলে তালহা (১৮), কালিকাবাড়ী গ্রামের আজমল খানের ছেলে আবির খান (১৯), বুকাবুনিয়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে জুনায়েদ রিফাত (২০), ভাইজোড়া গ্রামের কবির খানের ছেলে নোমান খান হিমেল (৩০) ও আশফাক হোসেন (১৯)।
ভুক্তভোগী ওই এসএসসি পরীক্ষার্থী সানাউল্লাহ জানান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পরীক্ষা শেষে এক বড়ভাইয়ের জন্মদিন উদযাপনের জন্য বামনা উপজেলা পরিষদ পুকুরঘাটে ছবি তুলতে গেলে উপজেলা চেয়ারম্যানের অনুসারী কিশোরগ্যাং সদস্য তালহাসহ আরও কয়েকজন মিলে তাকে গলায় ছুরি ঠেকিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটুর বাসার মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে ওই কিশোরগ্যাং সদস্যরা উপজেলা চেয়ারম্যান বাসায় আছেন কিনা জানতে চায়। ভিতর থেকে একজন জানায় সে ঢাকায় আছে।
তখন চেয়ারম্যানের ভাগিনা নোমান খান হিমেল ওই শিক্ষার্থীকে মারধর ও তার হাত-পা বেধে চেয়ারে বসিয়ে রাখে। এসময় কিশোরগ্যাং সদস্য তালহা শিক্ষার্থীর কাছে থাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। জোর করে শিক্ষার্থীর ফোনের লক খুলে উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষে একটি পোস্ট দেয়। পোস্টটিতে লেখেন “লিটু ভাই ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’।
ওই শিক্ষার্থী আরও জানান, সম্প্রতি বামনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু একটি অনুষ্ঠানে সনাতন ধর্মালম্বীদের জাতিগত অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে গালাগালি করেন। ওই ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বরগুনা প্রেসক্লাবের সামনে তার বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেন কয়েকটি সংগঠন।
মানববন্ধনে ওই শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকার কারণে তাকে ধরে নিয়ে মারধর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এব্যাপারে বামনা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাইনুল হোসেন বলেন, ওই শিক্ষার্থীর একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বামনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু বলেন, “বর্তমানে ঢাকায় রয়েছি। এসে এই ঘটনার বিচার আমি করবো।”
এএইচ