গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন খামারিরা
বেনাপোল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০২:৫৯ পিএম, ১৫ মে ২০২৩ সোমবার
বাজারে গো-খাদ্যের দাম বাড়ছে। এতে লোকসানের মুখে যশোরের শার্শায় অনেক খামারি ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে গবাদি পশুর সংখ্যা কমে আসায় চাহিদার বিপরীতে দুধ উৎপাদনও ঘাটতির মুখে পড়েছে।
দুধ উৎপাদন এবং গরু মোটাতাজাকরণে কয়েক বছর ধরেই বেশ সাফল্যের সঙ্গে চলছিল শাশায় খামার ব্যবসা। দুগ্ধ এলাকা হিসেবে পরিচিতি বাড়ায় এখানে দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্রও গড়ে ওঠে। মিল্কভিটার দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্র দুই শতাধিক খামারির কাছ থেকে দৈনিক গড়ে দুই হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করছিল।
তবে গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় এই এলাকায় একের পর এক খামার বন্ধ হচ্ছে। সম্প্রতি ভুষি, বাইপ্রো, গম, চালের খুদ, চালের পালিস, খৈলসহ অন্যান্য খাদ্যের দাম দ্বিগুণ বেড়ে যাওয়ায় খামারিরা ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ৬ মাস আগে যে খামারে ৭০০ গরু ছিল সেই খামারিরা ২০০ গরু লোকসানে বিক্রি করে দিয়েছেন।
খামারিদের অভিযোগ, বাজার নিয়ন্ত্রণ না থাকায় মুনাফালোভীরা ইচ্ছেমতো গো-খ্যাদ্যের দাম বাড়িয়ে চলেছে। এক খামারি বলেন, ৬ মাস আগে এক বস্তা ভূষির দাম ছিল ১ হাজার ৭৫০ টাকায়। এখন তার দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩০০ টাকা। বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় দিন দিন গো-খাদ্যের দাম বাড়ছে।
আরেক গরু খামার ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা মো. নাসির উদ্দীন বলেন, আমার খামারে ৭০০ গরু ছিল আর ১০০ কর্মচারী ছিল। তবে খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমি ২০০ গরু বিক্রি করে দিয়েছি।
এদিকে খামারিদের গরু বিক্রি করে দেয়ার কারণে দেখা দিয়েছে দুধের ঘাটতি।
এ বিষয়ে শার্শার উপজেলা দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্রের ম্যানেজার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘খামারিদের গরু বিক্রি করে দেয়ার কারণে এই এলাকায় দুধের উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যার প্রভাব আমাদের মিল্ক ভিটাতেও পড়েছে।’
বর্তমান সংকট মোকাবিলায় খামার ব্যবসায়ীদের ঘাস চাষ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে যশোরের জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাশেদুল হক। তিনি বলেন, ‘কাঁচা ঘাস উৎপাদন করলে খাদ্যের দাম সহনীয় পর্যায় চলে আসবে। তাতে উৎপাদন খরচ কমে আসবে।’
উল্লেখ্য, যশোরের শার্শায় বর্তমানে ৮৮ হাজার ৭৩৪টি গরু রয়েছে। আর লোকসানে পড়ে ইতোমধ্যে খামারিরা বিক্রি করেছেন প্রায় ২০ শতাংশ গরু।
এএইচ