ঢাকা, শুক্রবার   ০১ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৭ ১৪৩১

জবি হলে ছাত্রীকে ৩ ঘণ্টা হেনস্তার অভিযোগ

জবি প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১১:৫৪ এএম, ১৮ মে ২০২৩ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:৫৬ এএম, ১৮ মে ২০২৩ বৃহস্পতিবার

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলে এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে তিন ঘন্টা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের একাধিক কর্মীর বিরুদ্ধে। নির্যাতনে শিকার চারুকলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী।

এ ঘটনার পর বুধবার (১৭ মে) হল প্রভোস্টের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র দেয় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হাফসা বিনতে নূর।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগের কর্মীরা হলেন তন্মী (১৪ আবর্তন ), ইশিতা (১৪ আবর্তন), নিনজা শিকদার (১৫ আবর্তন), ফাল্গুনী আক্তার (১৫ আবর্তন), ইরা (১৫ আবর্তন ), নাজমুন নাহার স্বর্ণা পাটোওয়ারী (১৩ আবর্তন)। এরা একই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজীর সমর্থক এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রুমের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাফসা বিনতে নূরের সঙ্গে জুনিয়র রুমমেট রেবেকা খাতুনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এ পর্যায়ে রেবেকা খাতুন হলের অন্য রুমের মেয়েদের নিয়ে এসে রুম আটকে হাফসাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন ও হেনস্তা করে। প্রায় তিন ঘন্টা হেনস্তার পর হাফসা বিনতে নূর অজ্ঞান হয়ে যায়। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হলের এক শিক্ষার্থীরা জানান, হাফসাকে রুম থেকে বের করে নিয়ে যেতে চেয়েছি। কিন্তু রেবেকা, নিনজা, ফাল্গুনীসহ সকলে তাকে ঘেরাও দিয়ে ধরে যেন সে আসতে না পারে। একপর্যায়ে সে মোবাইল নিতে গেলেও তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে মোবাইল আনতে দেয়নি। শুধু তাই নয়, এরা রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখিয়ে হলে অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে হেনস্তা করে থাকে। শিক্ষার্থীরা এদের কাছে একপ্রকার জিম্মি। 

এ বিষয়ে অভিযোগকারী হাফসা বলেন, রুমের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নিয়ে বোটানি বিভাগের রেবেকা খাতুন হলের অন্য রুমের ৭-৮ জন মেয়েদের নিয়ে এসে আমাকে শারীরিক  লাঞ্চিত ও মারধর করে। তারা সকলে মিলে রাত সাড়ে আটটা থেকে রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত আমার উপর মানসিক নিপীড়ন চালায়। এ পুরো ঘটনা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে তারা। এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।

বিষয়টি  নাজমুন নাহার স্বর্ণার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি ম্যামকে সাথে নিয়ে ওদের রুমে যাই। গিয়ে ওদের শান্ত করার চেষ্টা করি। কিন্তু হাফসা আপুকে মারধরের বিষয় আমি কিছু জানি না। একপর্যায়ে আমি ওদের রুমে ম্যামকে রেখে নিচে চলে আসি। তারপর নাকি হাফসা আপু ছাত্রলীগের মেয়েদের গাঁয়ে হাত দেয়। 

ঘটনার সময় উপস্থিত হলের আবাসিক শিক্ষক মানসুরা বেগম বলেন, তুচ্ছ ঘটনার জেরে আবেগের বশবর্তী হয়ে এ কলহের সূত্রপাত। অবস্থা বেগতিক জেনে আমি সেখানে উপস্থিত হই। যাওয়ার পরও তারা আক্রমণাত্নক ছিল। হাফসাকে তারা রুমের বাইরে যেতে ও ফোনটাও ধরতে দিচ্ছিল না। মূলত অন্য রুমের মেয়েদের নিয়ে আসার কারণেই এ ঘটনা এতদূর পর্যন্ত গড়ায়। সকলকে বোঝানোর চেষ্টা করার পরও তারা আরও উত্তেজিত হয়ে যায়।

হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার বলেন, হলে বেশ কিছুদিন যাবৎ এ ধরনের ঘটনা ঘটেই চলছে। তাতে আমি শঙ্কিত। অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা আলোচনায় বসেছি। তারপর দু’পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি। এরপর থেকে যদি কেউ এরকম ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে তাহলে তাদের সিট বাতিল হবে।

এএইচ