ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

বেশিরভাগ দূতাবাসে নেই ইকোনমিক উয়িং, বাণিজ্যে পিছিয়ে দেশ

মুহাম্মদ নূরন নবী, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১৯ পিএম, ১৮ মে ২০২৩ বৃহস্পতিবার

বাংলাদেশের অনেক পণ্যের চাহিদা রয়েছে বিশ্বের অনেক দেশে। তাছাড়া, কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এমন দেশগুলোর মধ্যে ইকোনমিক ডিপ্লোম্যাসি বা অর্থনৈতিক কূটনীতির কথা বরাবরই বলা হয়। কিন্তু ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার থেকে শুরু করে নতুন বাজার খুঁজতে বেশিরভাগ দূতাবাসে নেই ইকোনমিক উয়িং। আর যেগুলো আছে সেগুলো বলতে গেলে কম বাণিজ্যিক গুরুত্ব আছে এমন দেশে।

প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ হোক, সব কূটনৈতিক সম্পর্কের আড়ালে গুরুত্ব পায় ব্যবসা-বাণিজ্য স্বার্থ। ধরণ বা রকমফের থাকলেও বিশ্বের সব প্রান্তে প্রায় একই অনুশীলন চলে। কূটনৈতিক মুন্সিয়ানা যার যতভালো, বলতে গেলে সেদেশ ততই রপ্তানী বাণিজ্যে এগিয়ে। 

ভৌগলিকভাবে দক্ষিণ-এশিয়ায় বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকার পরও পণ্যের বাজারের বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে যাচ্ছেনা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, ১৯টি মিশনে কমাশিয়াল উয়িং আছে, আর ৪২টিতে নেই। 

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব স্ট্যাটেজিক স্টাডিস গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির বলেন, “আমরা প্রোডাক্টিভ বাস্কেটটা বাড়াতে পারছিনা, আবার একইসঙ্গে আমাদের গ্লোবাল ফুটপ্রিন্ট, সেটাও প্রচার করতে পারছিনা। বেশ কিছু অঞ্চল আছে যেখানে এই মুহূর্তে পণ্য রপ্তানি করতে পারছিনা, মূলত ওই জায়গাগুলোতে আমাদের কমার্শিয়াল উইং নেই।”

বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বড় অর্থনীতির দেশ হবার পরও দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, পেরু, চিলি, মেক্সিকোর মত দেশে এদেশীয় পণ্য ও সেবা রপ্তানী বাজার ধরা যাচ্ছে না। 

তেমনি, কমনওয়েথ অব ইন্ডপেন্ডেন্ট স্টেট-সিআইএস ভুক্ত দেশসহ মধ্যপ্রাচ্য, পূর্ব-মধ্য ইউরোপ, পূর্ব এশিয়া, এমনকি আফ্রিকার দেশগুলোয় গ্লোবাল ফুটপ্রিন্ট নেই বাংলাদেশী পণ্যের। প্রতিবেশী চীনের মত বড় বাজার থাকলেও আধা বিলিয়ন ডলারের রপ্তানী বাণিজ্যে সন্তুষ্টু থাকতে হচ্ছে। 

ড. মাহফুজ কবির বলেন, “একইসঙ্গে আফ্রিকাতেও আমাদের ফুটপ্রিন্টটা রাখতে পারছিনা। এখানে অনেক দেশ আছে বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকাতে বাংলাদেশী পণ্যের বড় সম্ভাবনা আছে কিন্তু সেটা কাজে লাগাতে পারছিনা আমরা। পূর্ব এশিয়া দেশগুলোতে বড় সম্ভাবনা আছে।”

গবেষকদের মত হলো, নতুন বাজার খুঁজতে মিশনগুলোর কার্যক্রম মূল্যায়ন জরুরি। সাথে সাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে উদ্যোগ নিতে হবে দূতাবাসগুলোকেই।

ড. মাহফুজ কবির আরও বলেন, “৪২টিতে কমার্শিয়াল উইং নেই কিন্তু সেই জায়গাগুলোর মধ্যে যারা ভালো করছে বিশেষ করে হংকংয়ের মতো জায়গায় কমার্শিয়াল উইং খুলতে পারি। বা ইউরোপের অনেকগুলো জায়গায় এই মুহূর্তে অনেক ভালো রপ্তানি হচ্ছে পণ্য ও সেবার। সেখানে কিন্তু আমাদের কমার্শিয়াল উইং নেই। কিন্তু তেহরান বা মিয়ানমারের মতো জায়গায় আমাদের কমার্শিয়াল উইং আছে, তবে সেখানে সফলতা নেই।”

কূটনীতির সব পর্যায়েই নিবিড় প্রচেষ্টা থাকলে তবেই বিশ্বের সব প্রান্তে সরব উপস্থিতি থাকবে এদেশের পণ্য ও সেবার। 

এএইচ