কিয়েভে এ মাসের নবম ক্ষেপণাস্ত্র হামলা রাশিয়ার
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:২১ পিএম, ১৮ মে ২০২৩ বৃহস্পতিবার
এ মাসে অর্থাৎ গত ১৮ দিনের মধ্যে নবমবারের মত ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
কিয়েভের কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছে সবগুলো ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার আগেই আকাশে ধ্বংস করে দেওয়া গেছে। তবে বিধ্বস্ত ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ এসে পড়ায় রাজধানীর দুটো মহল্লায় কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী বন্দর শহর ওডেসাতেও রাতের বেলা ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করেছে। শহরের কর্মকর্তারা বলছেন একজন নিহত এবং আরও দুজন আহত হয়েছে।
এছাড়াও, কেন্দ্রীয় এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় ভিনিতসিয়া, কেলনিতস্কি এবং জিতোমিরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে রাশিয়ার ছোঁড়া ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ২৯টিই আকাশে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ক্রাইমিয়ার সিমফারোপোলের কাছে বিষ্ফোরণের পর একটি মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়।
ওদিকে, ক্রাইমিয়ায় একটি খাদ্যশস্য ভর্তি মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হলে সেভাস্তোপোল থেকে আঞ্চলিক রাজধানী সিমফারোপোল পর্যন্ত রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া দখল করে অঞ্চলটিকে নিজেদের অংশ করে দেয়।
ক্রাইমিয়ার আঞ্চলিক পার্লামেন্টের প্রধান ভ্লাদিমির কোনস্তানতিনভ রুশ মিডিয়াকে বলেছেন একটি বিস্ফোরণের পরই ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। ঘটনার তদন্ত চলছে।
কিয়েভের সামরিক প্রশাসন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে গতরাতের হামলায় রাশিয়া দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং নজরদারী ড্রোন ব্যবহার করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, “নজিরবিহীন শক্তি প্রয়োগ করে কিয়েভের ওপর হামলা অব্যাহত রয়েছে।"
মঙ্গলবার ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয় ছটি রুশ কিনজাল হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
বুধবার গভীর রাতে বিপদ কাটার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিস্তস্কো বলেন শহরের দারনিতসিয়া এলাকায় একটি গাড়ির গ্যারেজে আগুন ধরে যায়, কিন্তু কেউ হতাহত হয়নি।
কিয়েভের পূর্বাঞ্চলীয় জেনিয়ানস্কি এলাকার একটি বহুতল ভবনেও আগুন ধরে যায়, তবে হতাহতের কথা জানানো হয়নি।
কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের প্রধান বলেন কাস্পিয়ান সাগরের ওপর থেকে রুশ যুদ্ধবিমান থেকে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। সেরহি পোপকো বলেন এসব হামলায় সম্ভবত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়।
ওদিকে, বুধবার খেরসনে দুই পক্ষের মধ্যে গোলা বিনিময়ের সময় আট জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। বেসামরিক এলাকায় গোলাবর্ষণের জন্য দুপক্ষ পরস্পরকে দায়ী করেছে।
বিবিসির সংবাদদাতারা বলছেন রুশ সৈন্যদের ওপর পাল্টা হামলা চালানোর জন্য ইউক্রেনীয় বাহিনী কিছুটা ধীর গতিতে হলেও যে প্রস্তুত হচ্ছে তা নিশ্চিত।
পশ্চিমা কয়েকটি দেশের কর্মকর্তারা বলছেন কিয়েভের সামরিক সক্ষমতা এখন বেশ শক্ত ট্যাংক মোতায়েন থেকে শুরু করে মাইন সরানো, নদীর ওপর দ্রুত সেতু তৈরি এবং দূরের লক্ষ্যবস্তুতে টার্গেট করার সক্ষমতা এখন তাদের অনেক বেড়েছে।
তবে, তারা বলছেন, ইউক্রেনে রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বেশ শক্ত এবং তা প্রচুর মাইন দিয়ে সুরক্ষিত।
সুতরাং, ইউক্রেন তাদের পাল্টা হামলায় কতটা এলাকা পুনর্দখল করতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে পশ্চিমা কর্মকর্তারা বলছেন মি. পুতিন তার বর্তমান কৌশল ধরে রাখতে পারছেন কি পারছেন না সেটাই ইউক্রেনের পাল্টা-হামলার সাফল্যের প্রধান মাপকাঠি হবে।
বুধবার ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা কিয়েভে চীনা দূতের সাথে কথা বলেন। সেসময় তিনি বলেন যে শান্তি ফর্মুলায় ইউক্রেনকে রাশিয়ার দখলকৃত জমি ছেড়ে দেওয়ার কথা থাকলে তা তারা মানবেন না।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
এসবি/