ঢাকা, শুক্রবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪,   আশ্বিন ৫ ১৪৩১

সীতাকুণ্ডে গৃহহীন দুই পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:১৪ পিএম, ২০ মে ২০২৩ শনিবার | আপডেট: ০৭:২১ পিএম, ২০ মে ২০২৩ শনিবার

সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নে দুই প্রতিবন্দী গৃহহীন ভিক্ষুককে ব্যক্তিগত অর্থে ঘর তৈরি করে দিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ছাদাকাত উল্লাহ মিয়া।  এতে পরিবার দুটি এখন নিজের ঘরে নিশ্চিন্তে রাতযাপন করতে পারছে। 

চেয়ারম্যানের কাছ থেকে অকল্পনীয় এ সহযোগিতা পেয়ে আবেগাদ্ভূত দুই পরিবারের সদস্যরা, তার জন্য দুহাত তুলে দোয়া করছেন। চেয়ারম্যান বলছেন, এটি পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে পারাটাই তার জন্য বিশাল অর্জন বলে মনে করছেন তিনি। এর বেশি আর কিছুই চাওয়ার নেই।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীতাকৃত উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড মিয়াজীপাড়ার মৃত এবাদুল হবেনা ছেলে নূরুল আলম (৬৫) অনুগতভাবে প্রতিবন্ধী। শারীরিক অসুস্থতায় কাজ করতে পারেন না। তার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৪ শতক জায়গা আছে। কিন্তু সেখানে ঘর তৈরির মতো কোন অর্থ না থাকায় প্রতিবেশিদের ঘরের বাইরে, বারান্দায় ও রান্নাঘরে ঘুমিয়ে রাত কাটাতেন জাতে নিয়ে। গত সংসদ নির্বাচনে এমপি প্রার্থীর পক্ষে ওই এলাকায় প্রচারণায় গিয়ে আমাকে খোলা আকাশের নিচে কয়ে থাকতে দেখেন বাড়বকুণ্ডের ইউপি চেয়ারম্যন ছাদাকাত উল্লাহ মিয়াজি। এ সময় তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন তার কোন ঘর নেই। ভিক্ষা করে জীবনধারণ করছেন তারা। সেদিনই তিনি তাদেরকে ঘর তৈরি করে দেয়ার উদ্যোগ নেন। এমন টিন ও কাঠের সুদৃশ্য বাড়ির মালিক আলম।

একইভাবে পার্শ্ববর্তী ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ইব্রাহিমও অর্থের অভাবে একটি ঘর তৈরি করতে পারছিল না। পুরোনো তার বাপ বেড়ার ঘরটি জরাজীর্ণ হয়ে বিলীন হবার অবস্থা হয়েছিল। এতে ঝড়-বৃষ্টি ও শীতে প্রচণ্ড কষ্ট করলেও কিছুই করার ছিল না তার। কিন্তু তাদের দুঃখের কথাও সম্প্রতি জানতে সাথে সাথে তিনি জরাজীর্ণ ঘরটি ভেঙে সেখানে নতুন ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন ব্যক্তিগত অর্থে। এখন নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। লোকমুখে এসব তথ্য পেয়ে সরেজমিনে বাড়বকুণ্ডে চলে প্রতিবন্ধী নূরুল আনোয়ার ইব্রাহিমের বাড়িতে গিয়ে চেয়ারম্যান কর্তৃক নির্মিত সুদৃশ্য ঘর দুটি দেখা যায়। 

নুরুল আলমের বাড়িতে গিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিবন্ধী আলম ও তার বলেন, নিজেদের শতক জায়গা থাকলেও ঘর নির্মাণের টাকা ছিল না। তাই অন্যের ঘরের দরজায় বারান্দায় রাত কাটিয়েছি শীত-বর্ণনা। কিন্তু এখন আর বাইরে রাত কাটায় না। চেয়ারম্যান উল্লাহ মিয়াজী নিজের টাকায় আমাদের শত্রু একটি ঘর বানিয়ে দিয়েছেন। প্রায়ই টাকা পাঠান। তা নিয়ে সংসার চালাই। এখন ভিক্ষা করা বন্ধ করে দিয়েছি। এই দম্পত্তি ঘরটি পাবার আগের কষ্টের কথা বলতে বলতে আবেগাপ্লুত হয়ে চেয়ারম্যান ছাদাকাত উন্নাহর জন্য দোয়া করেন।

দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রি ইব্রাহিম বলেন, আমিও মানুষের কাছ থেকে চেয়ে চিন্তে সংসার চালাতাম। অনেক আগের বেড়ার ঘরটি ভেঙে পড়তে পড়তে বিলীন হয়ে যাওয়ার পরও নির্মাণ করার মতো টাকা ছিল না। চেয়ারম্যান আমার ঘরটি তৈরি করে দেবার উদ্যোগ নিলে আমি ঘর পেলাম। 

ইব্রাহিমের স্ত্রী সাফিয়া খাতুন বলেন, চেয়ারম্যানের এই দান আমার মাথার ওপরে থাকবে। শুধু ঘর নয় পাশের রান্না ঘরটিও করার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।   তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই।

কেআই//