ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

এনআইডি থাকলে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার দাবি পররাষ্ট্রমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৪৪ পিএম, ২৭ মে ২০২৩ শনিবার | আপডেট: ০৭:৪৮ পিএম, ২৭ মে ২০২৩ শনিবার

যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) রয়েছে, তাদের রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, যার এনআইডি থাকবে তাকেই বাধ্যতামূলকভাবে রিটার্ন দাখিল করতে হবে। আর বর্তমান সব কিছু ডিজিটাল হওয়ারে কারণে এটা সহজেই করা সম্ভব। প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এর আমলে এনআইডি থাকলে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার চেষ্টা করা সত্ত্বেও কঠিন আমলাতন্ত্রের কারণে তা করা সম্ভব হয়নি। এটা দ্রুত সময়ে করলে দেশে কর আহরণের হার বাড়বে। 
  
শনিবার (২৭ মে) ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এসব কথা বলেন। 

ইআরএফ‘র উদ্যোগে আয়োজিত স্বরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মৃধা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফজলে কবির ও সাবেক অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে করের হার  অনেক বেশি, আর এই কারণে কর ফাঁকি দেয়ার প্রবণতাও বেশি।ট্যাক্স একটা সহনীয় আওতায় থাকলে কর আহরণের পরিমাণ বাড়বে। আবার কর ফাঁকি দেয়ার প্রবনতাও কমে আসবে। 

তিনি বলেন, দেশে কর ফাঁকি দেয়ার অন্যতম কারণ করের হার বেশি। পাশাপাশি যে কর দেয় তাকেই বেশি অত্যাচার করে ছাড়ে। ফলে সাংবাদিকদের এই বিষয়টি তুলে ধরতে হবে। প্রয়োজনে এই বাজেটেই করতে পারে।

ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের দেশে করদাতার সংখ্যা অনেক কম। এটা মাত্র সাড়ে সাত থেকে ৮ শতাংশ। ১৭ কোটি লোকের দেশে মাত্র সাড়ে ৭ শতাংশ লোক সরাসরি কর দেয়। অথচ আমেরিকাতে যারই স্যোসাল সিকিউরিটি কার্ড আছে, তাকেই কর দিতে হয়, রিটার্ন দাখিল করতে হয়। তবে বছরে তিন হাজারর ডলারের নীচে বার্ষিক আয় হলে কর দিতে হয় না। তকে রিটার্ন দাখিল করতে হয়। তিন হাজার ডলারের বেশি আয় হলেই সেটা যদি গিফটও হয় তাকে কর দিতে হয়। ফলে কর ব্যবস্থা অত্যান্ত শক্তিশালী। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শুধু টিন নাম্বারের ভিত্তিতে কর দেন। এ বিষয়ে আমি অর্থমন্ত্রীকে বলেছিলাম কোম্পানি এবং বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানটিন নাম্বারের মাধ্যমে কর দেয়ার ব্যবস্থা রেখে ব্যক্তিশ্রেণীর কর এনঅআইডির মাধ্যমে আদায় করা হউক। এই ক্ষেত্রে যার এনডি নাম্বার আছে, তিনিই অবশ্যই রিটার্ন দাখিল করবেন। এটা সম্ভব। এতে করে করের আওতায় বাড়বে। তখন আর করের হার সাড়ে সাত শতাংশ থাক্বে না। এটা ২০ শতাংশের ওপরে উঠবে। মোট রাজস্ব আয় অনেক বেড়ে যাবে। 

তিনি বলেন, এনআইডি থাকলে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা যায় কিনা তা যাচাই বাচাই করতে আমলাদের নির্দেশ দিযেছিলেন। কিন্তু আমাদের আমলাতনন্ত্র এমন কঠিন এভখনো করা হয়নি। এটা আমাদের দাবি, কারণ আমাদের ট্যাক্সের আওতায় বাড়াতে হবে। 

তিনি বলেন, সিলেট শহর থেকে আমার নানাবাড়ি (জগন্নআথপুরে সৈয়দপুর গ্রাম) গ্রামে যেতে ২০ থেকে ২৪ ঘন্টা লাগতো কেবল নৌকায়। আর শীতকালে হাতি কিংবা ঘোড়ায় করে যেতে সমান সময় লাগতো। আর কোন উপায় ছিলো না যাতাযাতের। আর এই কারণে আমি নানাবাড়ি অনেক কম যেতাম। কারণ অনেক কষ্ট হতো। ফলে ১৯৭৪ সালের পর আমি ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে ৩৮ বছর পর আমি নানা বাড়ি যায়। এই সময় সিলেট শহর থেকে নানাবাড়িতে গিয়েছি মাত্র ৪৫ মিনিটে। এটাই আজকের বাংলাদেশ। এটাই উন্নয়ন। 

তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের একটা মাত্র লক্ষ্য ছিল মানুষের মঙ্গল। দেশের মঙ্গল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের জুটিটা অত্যান্ত ভালো জুটি ছিল। শেখ হাসিনা মানুষের মঙ্গল চান, আর অর্থমন্ত্রী কিভাবে মানুষের মঙ্গলটা অর্জন করা যায় সেই প্রক্রিয়াগুলো জানতেন। সেভাবে বাস্তবায়ন করতেন। এই দুই জুটি কঠোর পরিশ্রম করে বাংলাদেশের চেহারা বদলে দিয়েছেন।  
কেআই//