বিএনপি-জামাত গণতন্ত্রের শত্রু, সুষ্ঠু নির্বাচনের বাধা: শেখ পরশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:৪২ পিএম, ৩০ মে ২০২৩ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৭:৪৬ পিএম, ৩০ মে ২০২৩ মঙ্গলবার
আজ (৩০ মে) মঙ্গলবার, বেলা ১১টায়, শিল্পকলা একাডেমী, বরিশালে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, বরিশাল বিভাগীয় প্রতিনিধিবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন-বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আফজাল হোসেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ গোলাম কবির রাব্বানী চিনু, নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. এ কে এম জাহাঙ্গীর, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. তালুকদার মোঃ ইউনূস। সঞ্চালনা করেন-বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, এই দেশে যে নির্বাচনী পরিবেশ বিরাজমান তার আরেকটা প্রমাণ যে বিএনপি কোন রকম বাধা-বিপত্তি ছাড়াই সভা সমাবেশ করে চলেছে। তাদের রাজনৈতিক অধিকার তাঁরা চর্চা করছে। আমাদের কিন্তু সমাবেশ করতে দেয়া হত না। এমনকি আমাদের সমাবেশে পুলিশের লাঠি চার্জ করা ছিল নিত্ত-নৈমিত্তিক ব্যাপার। যারা ২১ আগস্ট সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশে বোমা মেরে ২৫ জন বিরোধী মতাদর্শের নেতা-কর্মীদের হত্যা করে তারা আবার সমাবেশ করার অধিকারের কথা বলে কোন মুখে বুঝি না। কাজেই এই বরিশাল নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। এই নির্বাচন শুধু একটা গতি, একটা সময় নির্ধারণ করবে না, একটা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বরিশালের এই নির্বাচনের গুরুত্ব অপরিসীম। এই নির্বাচনটা এমন একটা সময় হচ্ছে, মাত্র ৬ মাস পর জাতীয় নির্বাচন। বরিশালের এই নির্বাচনে নৌকার জয় জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করে। তাই আমরা বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিশেষ গুরুত্বের সাথে দেখছি। নির্বাচনী প্রচারণা কমিটিতে যাদেরকে রাখা হয়নি তাদের উদ্দেশ্যে বিনয়ের সাথে বলবো, মান অভিমান ভুলে গিয়ে, আপনারা দয়া করে নৌকার পক্ষে কাজ করবেন।
আমাদের ব্যক্তিগত মান-অভিমান, অনুভূতি অথবা কষ্টের জন্য, এই নৌকা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। নৌকা ক্ষতিগ্রস্ত হলে আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আওয়ামী লীগ ক্ষতিগ্রস্ত হলে জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সর্বোপরি বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই আপনাদের কাছে আমার বিনীত এবং হাত জোর করে অনুরোধ করছি, আপনারা সবাই নিঃস্বার্থভাবে এবং নিঃশর্তভাবে নৌকার পক্ষে কাজ করেন।
তিনি আরও বলেন, রাজনীতিতে আনুগত্য ও শৃঙ্খলা একটা বিরাট ব্যাপার। আমাদের আনুগত্য নৌকার প্রতি। নৌকা কিসের প্রতীক? নৌকা বঙ্গবন্ধুর প্রতীক, নৌকা মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক। নৌকা বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক। নৌকা আমাদের অনুভূতিরও প্রতীক। কারণ নৌকা আমাদের ভালোবাসার নাম। নৌকার সম্মান রাখার জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এই নির্বাচনে আমাদের নৌকার মান সমুন্নত রাখার শপথ নিতে হবে। ব্যক্তি স্বার্থ বা আত্মকেন্দ্রিক স্বার্থ ভুলে এখন আমাদের নৌকাকে তুলে ধরতে হবে। আপনাদের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা এই নির্বাচনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। আপনাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা নৌকার সম্মান রাখতে পারে। আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে পারি যে, অন্ততপক্ষে এই নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেবার পর থেকে সকল নির্বাচনই অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়ে চলেছে। আগামীর নির্বাচন আরও সুষ্ঠু এবং কঠিন নির্বাচন হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু এবং অবাধ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হয়। বিশেষ করে সাম্প্রতিক নির্বাচনসমূহ তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। সুতরাং আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু নির্বাচনের বাধা না, যারা নির্বাচন প্রত্যাহার করে, নির্বাচনের দিন হরতাল-অবরোধ ডাকে, নির্বাচনের দিন জনগণকে ভয়-ভীতি দেখায়, যারা অগ্নিসন্ত্রাস করে নির্বাচন বানচাল করতে চায়, তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়। বিএনপি-জামাত গণতন্ত্রের শত্রু, সুষ্ঠু নির্বাচনের বাধা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত একজন সজ্জন মানুষ। এদেশের ছাত্র সমাজ, যুব সমাজ, বৃদ্ধ-বনিতা সকলের কাছে জনপ্রিয় একজন মানুষ। তার জনপ্রিয়তার ধারে কাছে এই বরিশাল নগরীতে কেউ নেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা ঘরে বাহিরে এক ও অভিন্ন। আমাদের সকল নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ভোট চাইছেন। আমরা গাজীপুরের নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়েছি। আমরা জনগণের ভোটে হারি নাই। আমরা ষড়যন্ত্রের কাছে হেরেছি। গাজীপুর সিটি নির্বাচন থেকে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে নতুন করে কৌশল করে সামনের নির্বাচনগুলোতে কাজ করবো। গাজীপুরের নির্বাচনে আমাদের কোন ক্ষতি হয় নাই। আমাদের ক্ষতি হয়েছে আমরা একজন
মেয়রকে হারিয়েছি। কাজেই আমরা গাজীপুর থেকে শিক্ষা নিয়েছি। গাজীপুরের পুনরাবৃত্তি আর অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচনে হবে না বলে বিশ্বাস করি। আমরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ সকল সহযোগী সংগঠন নিয়ে বরিশালে কাজ করছি। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বরিশালের মানুষের কল্যাণ করা, বরিশাল সিটির উন্নয়ন করা, জাতির পিতার বাংলাদেশে, শেখ হাসিনার বাংলাদেশে কোন দুর্বৃত্তদের জায়গা নাই। আমরা শেখ হাসিনার উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। এটাই হোক আমাদের শপথ।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত) বলেন, পরশের নেতৃত্বে যুবলীগ সুসংগঠিত হবে এবং শক্তিশালী হবে। যে কর্মযজ্ঞ দেশরতœ শেখ হাসিনা বাংলাদেশে শুরু করেছেন সেই উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ থেকে বরিশাল বঞ্চিত। এই বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি আধুনিক, উন্নত-সমৃদ্ধ, স্মার্ট বরিশাল সিটি গঠনের লক্ষ্যে আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়ে পাঠিয়েছেন। যুবলীগ এমন একটি সংগঠন
যেটা আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে পারবে। আমাদের অভিভাবক জননেত্রী শেখ হাসিনা। তার নির্দেশে যদি আমরা উপেক্ষাা করি তাহলে সেটা হবে আত্মঘাতি। আওয়ামী লীগ একটি গণমানুষের দল। আমি যদি মেয়র হতে পারি তাহলে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনকে উন্মুক্ত করবো। আমি এই পরিণত বয়সে বিত্ত-বৈভব কামাতে আসিনি। জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে যে অঙ্গিকার করেছি তা পালন করতে এসেছি। আমি মানুষের বন্ধু হতে চাই, মানুষের সেবা করতে চাই, মানুষের ভালোবাসা পেতে চাই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আফজাল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জন্য যা কিছু করেছেন তা অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের কাছে বিষ্ময়কর। স্বপ্নের পদ্মাসেতুসহ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, পায়রা বন্দর, পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, অসংখ্য রাস্তা-ঘাট তৈরি করে দিয়েছেন। এতসব উন্নয়ন দেখে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ এ অঞ্চলের মানুষের নৌকায় ভোট দেওয়া উচিত। শুধু তাই নয় সারা বাংলাদেশে যে
অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আমরা বিশ্বাস করি আগামী ১২ জুন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনসহ সকল নির্বাচনে নৌকার জয় হবে। সঞ্চালকের বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, আমরা যুবলীগের নেতা-কর্মীরা অনেক স্থানীয় নির্বাচনকে গুরুত্বের সাথে দেখি না। ফলে নির্বাচনে অনেক ক্ষেত্রে খারাপ বয়ে আনে। আমাদের দায়িত্বহীনতা আর গুরুত্বহীনতার কারণে অযোগ্য প্রার্থী, বিএনপি-জামাতের লোক জয় লাভ করে। তাই আমাদের শপথ নিতে হবে আগামী ১২ জুন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকা মার্কা প্রতীকে ভোট দিয়ে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতকে জয় লাভ করিয়ে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, উন্নত বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার কোন বিকল্প নাই। আমি বিশ্বাস করি আগামী ১২ জুনের নির্বাচনে নৌকাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ গোলাম কবির রাব্বানী চিনু, নির্মল কুমার চ্যাটার্জী, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. এ কে এম জাহাঙ্গীর, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. তালুকদার মোঃ ইউনূস।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু আহমেদ নাসিম পাভেল, যুগ্ম-আহ্বায়ক ও বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বদিউল আলম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোঃ মাজহারুল ইসলাম।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, তাজউদ্দিন আহমেদ, মোঃ জসিম মাতুব্বর, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, মোঃ সাইফুর রহমান সোহাগ, জহির উদ্দিন খসরু, আবু মুনির মোঃ শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, অ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন পাভেল, স্বাস্থ্য জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. মোঃ ফরিদ রায়হান, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মীর মোঃ মহি উদ্দিন, ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ নিজাম উদ্দিন চৌধুরী পারভেজ, ধর্ম সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান সরদার, মহিলা সম্পাদক অ্যাড. মুক্তা আক্তার, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক কাজী খালিদ আল মাহমুদ টুকু, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. মোঃ গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন জেলা-উপজেলা যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।
কেআই//