প্রস্তাবিত বাজেট সার্বিকভাবে গ্রামীণবান্ধব: পরিকল্পনামন্ত্রী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:৩৫ পিএম, ৩ জুন ২০২৩ শনিবার
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সার্বিকভাবে গ্রামীণবান্ধব হয়েছে। গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভাতার সংখ্যা ও পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি কৃষিখাতে উৎপাদন বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়ায় গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।
শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে চেম্বার ভবনে বাজেট পরবর্তী এক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এবং গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট (পিআরআই) যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এমসিসিআই’র ভাইস প্রেসিডেন্ট হাবিবুল্লাহ এন করিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে পিআরআই ভাইস চেয়ারম্যান ড. সাদিক আহমেদ, এমসিসিআই পরিচালক আদিব এইচ খান, এমসিসিআই সাবেক সভাপতি আনিস উদ দৌলা, আইসিএবির সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসেন প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জাহিদী সাত্তার ‘বাজেট ২০২৩-২৪ এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষিত’ বিষয়ক বিশ্লেষণধর্মী একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, কোভিড মহামারি মোকাবিলায় আমরা সারাবিশ্বে প্রশংসা কুঁড়িয়েছি। এবারের বাজেট যখন দেওয়া হচ্ছে, তখন আমরা একটা খারাপ সময় পার করছি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক পর্যায়ে খাদ্য সরবরাহে অনিশ্চয়তা রয়েছে। এমন সময়ে বাজেট দেওয়া কঠিন কাজ। আমরা চেষ্টা করছি কিভাবে মানুষকে স্বস্তিতে রাখা যায়।
তিনি বলেন, শস্য বা ধান উৎপাদন যাই বলুন, সার্বিক বিবেচনায় গ্রাম এখনও আমাদের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে। তাই গ্রামীণ অর্থনীতিকে কিভাবে চাঙ্গা রাখা যায়, সেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘আমার ব্যক্তিগত মত হলো বাজার সম্পূর্ণভাবে মসৃণ রাখতে হবে। কোন হস্তক্ষেপ সেখানে থাকবে না। তবে মোদ্দা কথা হলো, সরবরাহ শক্তিশালী করা ছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।’
আয়কর খাতে রাজস্ব আয় বাড়াতে আগামী অর্থবছরে ট্যাক্স রিটার্ন প্রিপেয়ার বা টিআরপি এজেন্ট নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি এজেন্ট আয়কর বিবরণী প্রস্তুত ও জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে করদাতাদের সহযোহিতা করবে। এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এটি প্রোগ্রেসিভ ব্যবস্থা। যাকে-তাকে টিআরপি এজেন্ট দেওয়া যাবে না। সাবধানে এটি পরিচালনা করতে হবে।’
মন্ত্রী মনে করেন, সারাদেশে একবারে টিআরপি নিয়োগ না দিয়ে প্রথমবছর পরীক্ষামূলকভাবে প্রতিটি বিভাগে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।
কৃষি, শিল্প ও রেমিটেন্স-এই তিন খাতের উপর বাংলাদেশের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদের কৃষি এখন উড্ডীয়ন অবস্থায় রয়েছে, তাই সরকার কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সার, বীজসহ অন্যান্য উপকরণ নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করেছে।
আয়কর যোগ্য নয়, এমন টিআইএনধারীদের রিটার্ন দাখিলের সঙ্গে ২ হাজার টাকা কর জমাদানের প্রস্তাবের সমালোচনা করেন অর্থনীতিবিদ ড. সাদিক আহমেদ ও আদিব এইচ খান। তারা উভয়েই বলেন, করযোগ্য নয়, এমন ব্যাক্তিদের নিকট থেকে এই টাকা আদায় করা নৈতিকভাবে ঠিক নয়।
আলোচকরা বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানান তারা।
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন। (বাসস)
এএইচ