টেকনাফে কব্জি কেটে কিশোরকে ফেরত, বাকী ৪ রোহিঙ্গার ‘মুক্তিপণ’ দাবি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৫৯ পিএম, ৪ জুন ২০২৩ রবিবার
কক্সবাজারের টেকনাফের আলীখালী ক্যাম্প থেকে অপহৃত রোহিঙ্গা কিশোর জাহাঙ্গীর আলম (১৬) এর বাম হাতের কব্জির উপর দিয়ে বিচ্ছিন্ন করে ফেরত পাঠিয়েছে অপহরণকারিরা। জিন্মি থাকা অপর ৪ জনের জন্য মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে ২০ লাখ টাকা।
জাহাঙ্গীর আলম টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের আলীখালীস্থ ২৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সামসু আলমের ছেলে। তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার (২ জুন) রাতে আলীখালী ক্যাম্প থেকে অপহৃত ৫ রোহিঙ্গার একজন জাহাঙ্গীর আলম। এতে অপহৃত অপর ৪ জন হলেন, একই ক্যাম্পের নুর হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ ইউনুস (৩২), মোহাম্মদ রফিকের ছেলে মোহাম্মদ সুলতান (২৪), আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ (১৬) ও মোহাম্মদ সৈয়দের ছেলে আনোয়ার ইসলাম (১৮)।
ওই ক্যাম্পের কমিউনিটি নেতা (মাঝি) নুরুল আমিন জানান, শুক্রবার রাতে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা ৫ রোহিঙ্গাকে অপহরণ করে পাহাড়ের ভেতরে নিয়ে যায়। শনিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পের কাঁটাতারের পাশের পাহাড়ের পাদদেশে জাহাঙ্গীর আলমকে একটি বিচ্ছিন্ন করে কেটে হাত সহ ফেলে রাখে। খবর পেয়ে ক্যাম্পের লোকজন তাকে উদ্ধার করে এনজিও হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
নুরুল আমিন জানান, অপহরণকারী চক্রটি অপহৃত অপর ৪ জনের পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা করে ২০ টাকা মুক্তিপণের দাবি করছে। না দিলে তাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. আশিকুর রহমান বলেন, শনিবার রাতে বাম হাতের কব্জি কাটা অবস্থায় টেকনাফ থেকে এক রোহিঙ্গা কিশোরকে হাসপাতালের আনা হয়েছে। তার হাতের কব্জি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় হয়েছে।সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
টেকনাফ থানার ওসি মো. আবদুল হালিম জানান, ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনকারী এপিবিএন সদস্য ও থানা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং অপহরণের শিকার রোহিঙ্গাদের উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক পুলিশ সুপার জামাল পাশা বলেন, ‘আলীখালী ক্যাম্প থেকে ৫ রোহিঙ্গাকে অপহরণ ঘটনাটি জানার পর উদ্ধারের তৎপরতা চলছে। এর মধ্যে একজনকে হাত কেটে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে শুনেছি।
টেকনাফের পাহাড় যেন অপহরণকারির ভয়ংকর আস্তানায় রূপ নিয়েছে। গেল আট মাসে টেকনাফে ৬৫ জন ব্যক্তি অপহরণের ঘটনা ঘটে। যেখানে গত ২৮ এপ্রিল পাত্রী দেখতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন কক্সবাজার চৌফলদন্ডী উত্তরপাড়ার মোহাম্মদ আলমের ছেলে জমির হোসেন রুবেল, তার দুই বন্ধু ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ সওদাগর পাড়া এলাকার মোহাম্মদ ইউছুপ ও কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া এলাকার ইমরান অপহরণ হন। ২৪ মে টেকনাফ পাহাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে গলিত মরদেহ ৩টি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা এখন পুলিশের রিমান্ডে রয়েছে। অপহৃত অন্যান্যরা মুক্তিপণ দিয়ে বাড়ি ফেরেন।
কেআই//