ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের অপচিকিৎসা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১২:৫২ পিএম, ৮ জুন ২০২৩ বৃহস্পতিবার
মৃত্যুপথযাত্রী একজন রোগীর সঙ্গে চিকিৎসা নিয়ে যা করা হয়েছে-তা অপচিকিৎসা বলব, না প্রতারণা বলব। একজন রোগী হাসপাতালে যান নিশ্চয়ই বাঁচতে, মরার জন্য নয়। আর বাঁচার জন্য রোগীকে লাখ লাখ টাকাও ব্যয় করতে হয়। কিন্তু একজন অর্থলোভী, অমানবিক-হৃদয়হীন ডাক্তার যদি এমনটি করেন তাহলে প্রতারণা বলা কি বেশি বলা হবে। আর এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে ৬২ বছরের বয়োজ্যেষ্ঠ একজন রোগীর সঙ্গে। তিনি যদি হন সাংবাদিক এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী সদস্য কাঞ্চন কুমার দের সঙ্গে। এ ঘটনা ঘটিয়েছেন রাজধানীর শাহবাগস্থ ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের ডা. প্রফেসর মাছুম সিরাজ। তার এই প্রতারণার সুবিচার চেয়ে গত ৫ মে (৫-০৬-২০২৩) কাঞ্চন কুমার দে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্টার বরাবর আবেদন করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক কাঞ্চন কুমার দে (৬২) রাজধানীর শাহবাগস্থ ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে অপচিকিৎসার শিকার হয়ে জীবন সংকটের মুখোমুখি হয়েছেন। তিনি অভিযোগে বলেন, আমি গত ২২ ডিসেম্বর বুকে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে রাতে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি হই। পরে ‘এনজিওগ্রাম’-এর মাধ্যমে জানতে পারি আমার হার্ট-এ ৫টি ব্লক আছে। সেই অনুযায়ী গত ৩১ ডিসেম্বর এই হাসপাতালের সিনিয়র কন্সালটেন্ট এন্ড হেড অফ কার্ডিও সার্জারি প্রফেসর ডা. মাছুম সিরাজ-এর নেতৃত্বে এক দল ডাক্তার আমার ওপেন হার্ট সার্জারি করে। তারপর থেকে প্রথমে ডা. শাহনূর আজিজ এবং পরে প্রফেসর ডা. রেজাউল করিমের অধীন নিয়মিত চেকআপ করে আসছি।
কিন্তু গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে আমি বুকে মাঝে মধ্যে ব্যথা অনুভব করি-এমন অবস্থায় গত ১ এপ্রিল রাত ১১টায় বুকে প্রচণ্ড ব্যথা হয়-এরপর ‘স্প্রে নিডোকার্ড’ নেই, এতে বুক ব্যথা কমে যায়। এরপর প্রফেসর ডা. রেজাউল করিমকে মোবাইলে ফোন করলে তিনি পরের দিন সকালে হাসপাতালে যেতে বলেন। তার পরামর্শ অনুযায়ী আমি গত ২ এপ্রিল হাসপাতালে গেলে তিনি একটি টেস্ট করতে দেন-টেস্ট রিপোর্টে দেখা যায় ওই দিন রাতে ১ এপ্রিল আমার ‘মাইল্ড স্টোক’ হয়। ডা. রেজাউল করিম হার্টের সর্বশেষ অবস্থা দেখার জন্য পরের দিন ৩ এপ্রিল ‘এনজিওগ্রাম’ করান। এতে দেখা যায় ওপেন হার্ট সার্জারির পর ২টি ব্লক-এর ১টি ৯০ শতাংশ অপরটি ৮০ শতাংশ (যা প্রথম এনজিওগ্রাম রিপোর্ট-এ ছিল) আর এই এনজিওগ্রাম-এর সময়ই এই ২টি ব্লক-এ রিং (stent) পরানো হয়। এখন প্রশ্ন হলো-ওপেন হার্ট সার্জারিতে ৫টি ব্লক-এর মধ্যে ৩টি কেন ক্লিয়ার করা হলো আর ২টি কেন ক্লিয়ার করা হলো না-মাত্র ৩ মাসের মধ্যে আমি তো মৃত্যুর মুখে চলে যাচ্ছিলাম। ডা. মাছুম সিরাজের এহেন অপচিকিৎসার (এক ধরনের প্রতারণা) কারণে আমার জীবন মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়ে।
এ ধরনের প্রতারণায় আমি শুধু বিপুল অংকের আর্থিক ক্ষতির মুখেই পড়িনি-শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে বলতে গেলে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসলেও বর্তমানেও জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছি।