ইউক্রেন যুদ্ধ: নোভা কাখভকা বাঁধ এলাকায় বিস্ফোরণের প্রমাণ মিলেছে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৪৪ পিএম, ৯ জুন ২০২৩ শুক্রবার
ইউক্রেনের যে এলাকায় কাখভকা বাঁধ সেখানে বিস্ফোরণ হয়েছিল বলে তথ্যপ্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, বাঁধ ভেঙে যেসময়ে পানি ভেতরে ঢুকতে শুরু করে, ঠিক সেই একই সময়ে এই বিস্ফোরণ ঘটেছিল।
জল্পনা কল্পনা ছিল যে বাঁধটি আগেই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে এর কাঠামো দুর্বল হয়ে গিয়েছিল এবং সে কারণে বাঁধটি ভেঙে গেছে।
কিন্তু এখন নরওয়ের বিজ্ঞানীদের একটি দল সাইসমিক বা ভূকম্পন-ঘটিত কিছু সংকেত পর্যালোচনা করে সেখানে বিস্ফোরণের তথ্য প্রমাণ পেয়েছেন। এসব সংকেত প্রতিবেশী রোমানিয়ায় শনাক্ত করা হয়েছে।
এর পাশাপাশি ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনী একটি অডিও রেকর্ডিং প্রকাশ করে বলছে যে তাতে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর দুজন কর্মকর্তাকে বাঁধে নাশকতা চালানোর ব্যাপারে আলোচনা করতে শোনা যাচ্ছে।
ইউক্রেন বলছে টেলিফোন আলাপের এই অডিওতে রুশ সৈন্যরা বাঁধটির ওপর আক্রমণ চালানোর কথা স্বীকার করেছে। এই অডিওর সত্যতা যাচাই করে দেখা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি।
মঙ্গলবার ভোর রাতে নোভা কাখভকা বাঁধ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কারণে ইউক্রেনের বিস্তৃত এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছে। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন এর ফলে সেখানকার পরিবেশ, কৃষি ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেখান থেকে কয়েক হাজার লোককে সরিয়ে নিতে হয়েছে।
কিয়েভ বলছে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা যাতে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে রুশ বাহিনীর ওপর পাল্টা-আক্রমণ চালাতে না পারে সেজন্য রাশিয়া এই বাঁধ গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এবং এর পক্ষে তাদের কাছে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে বলেও ইউক্রেন দাবি করছে।
তবে মস্কো এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে ইউক্রেনীয়রা বাঁধটি উড়িয়ে দিয়েছে। এবিষয়ে একটি তদন্তও শুরু করেছে রাশিয়া।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকফ এই ঘটনাকে “নাশকতা” বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলছেন বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার কারণে ক্রাইমিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই এলাকাটি রাশিয়া ২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে দখল করে নিয়েছে।
ইউক্রেনের বিশাল ও গুরুত্বপূর্ণ এই বাঁধটি কী কারণে ভেঙে গেল সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। এর মধ্যেই নরওয়ের বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে নতুন এই তথ্য পাওয়া গেল।
বিজ্ঞানীরা বলছেন নোভা কাখভকা বাঁধ থেকে ৬২০ কিলোমিটার দূরে রোমানিয়ার বুকোভিনায় ভূকম্পন-জনিত সঙ্কেত রেকর্ড করা হয়েছে।
বলা হচ্ছে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ভোর ২টা ৫৪ মিনিটে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে।
নরওয়েজিয়ান সাইসমিক সংস্থা নরসার এসব সঙ্কেত বিশ্লেষণ করে বলছে বাঁধটি যেসময়ে ও যেখানে ধ্বসে পড়েছে তার সঙ্গে এসব সঙ্কেতের মিল রয়েছে।
এছাড়াও বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটালেই এতো দূরে এধরনের সঙ্কেত পাওয়া যেতে পারে, বলছেন বিবিসির ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স সংবাদদাতা পল অ্যাডামস।
বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার কারণে যেসব এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছে সেখান থেকে লোকজনকে এখনও সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে।
নোভা কাখভকা বাঁধ ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন এলাকায়। কর্মকর্তারা বলছেন সেখানে শত শত লোক খাবার পানি ছাড়াই দিন কাটাচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
এসবি/