মোবাইল সারানো নিয়ে জাবি শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, আহত ৫
জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৯:২০ এএম, ১৪ জুন ২০২৩ বুধবার
মোবাইল সারানোকে কেন্দ্র করে সাভারের রাজ্জাক প্লাজায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর সংঘবদ্ধ হামলায় ৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় এনাম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সাভারের রাজ্জাক প্লাজা মার্কেটের তৃতীয় তলার মোবাইল ফোনের মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে।
উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে জানা যায়, গত রোববার (১১ জুন) প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী রাজ্জাক প্লাজার সিয়াম টেলিকমে মোবাইল সারাতে নিয়ে গেলে দোকানের লোকেরা মোবাইল অন্যত্র নিয়ে পার্টস খুলে রেখে দেয় বলে সন্দেহ হয় তাদের। পরবর্তীতে মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিকালে কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে দোকানদারদের সাথে কথা বলতে গেলে কথা কাটাকাটি হয় এবং এক পর্যায়ে আশপাশের কয়েকটি দোকানের কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে।
তারা অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র, রড, লাঠি নিয়ে শিক্ষার্থীদের এলোপাথাড়ি মারধর করে। এসময় ৫১ ব্যাচের এক শিক্ষার্থীর মাথায় ধারালো যন্ত্র দিয়ে কোপ দেয়া হয় এবং অপর এক শিক্ষার্থীর পিঠে উত্তপ্ত তাতাল দিয়ে আঘাত করা হয়।
গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের প্রথমে সাভার সুপার মেডিকেলে ও পরবর্তীতে এনাম মেডিকেলে নেয়া হয়।
এই ঘটনা জানতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা রাজ্জাক প্লাজার সম্মুখে আসলে মার্কেটের মূল ফটক আটকিয়ে দেয় মালিকপক্ষ। ফলে ভেতরে আটকা পড়ে যায় কিছু শিক্ষার্থী। সন্ধ্যা ৬টার দিকে সাভার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এক পর্যায়ে উদ্ভুত পরিস্থিতির সমাধানে রাজ্জাক প্লাজা দোকান মালিক সমিতির অফিস কক্ষে পুলিশের উপস্থিতিতে আলোচনায় বসে ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীরা। দুই ঘন্টার অধিক সময় ধরে আলোচনা চলে। এসময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান, সাভার থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা, রাজ্জাক প্লাজা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির হিমু, জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা শেষে রাত ১০টায় উপস্থিত সকলে এনাম মেডিকেলে আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে যান। গুরুতর আহত শিক্ষার্থীর বিষয়ে এনাম মেডিকেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মিঠুন বলেন, ‘ভিক্টিমের মাথায় চোট লেগেছে, রক্তক্ষরণ হয়েছে তবে সিটি স্ক্যান করে কোনো ইন্টার্নাল ড্যামেজ পাওয়া যায়নি, ওষুধের মাধ্যমেই ঠিক হয়ে যাবে আশা করছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘দোকান কর্তৃপক্ষ তাদের ভুল স্বীকার করেছেন। তারা আহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে চাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে, তাদের মতামত নিয়ে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
রাজ্জাক প্লাজা দোকান মালিক ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির হিমু বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করছি। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করবো। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যেসব ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’
সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) নয়ন কারকুন জানান, ‘মার্কেটে উত্তেজনার খবর শুনে আমরা ঘটনাস্থলে দ্রুত চলে আসি এবং ছাত্রদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করি। আমরা উভয় পক্ষের সমঝোতার চেষ্টা করছি এবং এ ব্যাপারে জাবি প্রশাসন খুবই সাহায্য করেছে। এ ব্যাপারে কেউ যদি আইনগত সহায়তা নিতে চায় তাহলে আমরা প্রস্তুত আছি এবং লিখিত অভিযোগ দিলে গ্রহণ করা হবে।’
এএইচ