ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

সুইজারল্যান্ডে নতুন নতুন খাত সৃষ্টি হচ্ছে বাঙালিদের জন্য (ভিডিও)

ফারজানা শোভা, জুরিখ থেকে

প্রকাশিত : ০৩:২২ পিএম, ১৭ জুন ২০২৩ শনিবার | আপডেট: ০৩:২৬ পিএম, ১৭ জুন ২০২৩ শনিবার

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি সুইজারল্যান্ড ক্রমশ হয়ে উঠছে বাংলাদেশী অভিবাসীদের পছন্দের স্থান । ইউরোপের সেনজেনভুক্ত যে কোন দেশের বৈধ অবস্থানের অনুমতিপত্র বা পাসপোর্ট থাকলেই একজন বাঙালি সুইজারল্যান্ডে প্রায় তিনগুণ আয় করতে পারেন। এই সুযোগ কাজে লাগাতে বাংলাদেশিরা ভীড় করছেন এই দেশে। আর তাই হুন্ডি বা অবৈধ পথের আশ্রয় না নিয়ে বৈধ পথে সুইজারল্যান্ড থেকে আসা রেমিটেন্সের পরিমাণ বাড়ছে, প্রশস্ত হচ্ছে বাণিজ্যের পথও। 

সেনজেনভুক্ত দেশ হলেও সুইজারল্যান্ড অভিবাসীদের জন্য ততটা প্রচলিত নাম নয়। জীবনযাত্রা বেশ দামী হওয়ায় সাধারণ পর্যটকের তালিকাতেও এ দেশের নাম তেমন স্থান পায় না। কিন্তু প্রকৃতিপ্রেমীরা শত বাধা পেরিয়ে ঠিকই খুঁজে নেন এই ভুস্বর্গকে। 

সবুজ বন, রহস্যময় পাহাড় , শান্ত জলাধার আর শীতল আবহাওয়ার এই দেশে আশির দশকের শুরু থেকেই বৈধভাবে বসবাস করছেন বাংলাদেশীরা। নজরুল ইসলাম প্রথম দফায় ৮৬ সালে একমাত্র বাংলাদেশী যিনি সুইজারল্যান্ডে বৈধভাবে বসবাসের স্বীকৃতি পান। 

সুইজারল্যান্ড প্রবাসী নজরুল ইসলাম বলেন, “অনেকে বলেন কেউ আসবেন না, কেউ আসবেন না সুইজারল্যান্ডে। কিন্তু আমরা বলি, আসলে একটা ব্যবস্থা হবেই।”

ইউরোপের কয়েকটি দেশে প্রায় ত্রিশ বছর কাটিয়ে জুরিখে থিতু হয়েছেন মশিউর রহমান। আবহাওয়া, জীবনযাত্রার উচ্চ মান আর উন্নত পেনশন স্কীমের কারণে বাকীটা জীবন এখানেই কাঠাতে চান। তবে দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের জোড়ালো ভূমিকা রাখার আহ্বান তাঁর। 

সুইজারল্যান্ডের স্থায়ী বাসিন্দা মশিউর রহমান বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আড়াই শতাংশ লাভ বেশি পাবার সুযোগ করে দিয়েছেন, তাই সবার কাছে অনুরোধ হুন্ডির মাধ্যমে না পাঠিয়ে রেমিট্যান্স ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠান।”

নিম্ন মজুরির কাজ নয়, এখানে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা সুইস সরকার, প্রশাসনে সম্মানজনক কাজ করছেন। এমনকি জনপ্রতিনিধিও নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু হৃদয়ে ধারণ করেন নিজ দেশকে। দেশীয় সংস্কৃতি, সম্পদকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে কাজ করে যাচ্ছেন। 

ফটোগ্রাফার আমান আব্দুল গাফফার বলেন, “৫টি এক্সিভিশন করেছি, উদ্দেশ্য আমাদের সংস্কৃতি তুলে ধরা।”

জুরিখে বাংলা স্কুলের কো-প্রেসিডেন্ট সুলতানা খান তানজি বলেন, “প্রতি শনিবারে বাচ্চাদের এবং অভিভাবকদের নিয়ে বসি। যারা নতুন এসেছে তারা কোথায় যাবে ভাষা শিখতে, কম পয়সায় কিভাবে ভাষা শেখা যায়- এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি।”

ফ্যাশন ট্রেড ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠাতা রাহমান মনজিল বলেন, “আইটি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেক্টরে পড়াশুনা করে তারপর যেন দেশের বাইরে আসেন। এখানে সুযোগ রয়েছে, ব্যাংকিং থেকে শুরু করে বিভিন্ন সেক্টরে জব করার অনেক সুযোগ আছে।”

তবে প্রবাসীরা বলছেন, ইউরোপে বাংলাদেশী দূতাবাসগুলো প্রবাসীদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতে আরও আন্তরিক হলে লাভবান হবে বাংলাদেশ। 

ইউরোপের স্বর্গ সুইজারল্যান্ডে শুধু পর্যটনই নয় বাংলাদেশিদের জন্য সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন অভিবাসন খাত। এদেশের বৈধ প্রবাসীরা ক্রমশ রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখায় সুইজারল্যান্ডের সরকার আগ্রহী হচ্ছে বাংলাদেশীদের প্রতি। 

এএইচ