ফিনল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার আবারিত সুযোগ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:২৯ পিএম, ২৭ জুন ২০২৩ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৬:৩৭ পিএম, ২৭ জুন ২০২৩ মঙ্গলবার
সেনজেন আওতাভুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশ ফিনল্যান্ড। ইউরোপ মহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে বিভিন্ন কারণেই এদেশটি বিখ্যাত। শিক্ষা একটি জন্মগত অধিকার ও রাষ্ট্রকর্তৃক প্রদত্ত সেবা হিসেবে বিবেচিত হয় ফিনল্যান্ডে। দেশটির শিক্ষাব্যবস্থা বিশ্বমানের হওয়ায় বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের বিশেষ আগ্রহ রয়েছে ফিনল্যান্ড পড়াশোনা করার। ফিনল্যান্ডের শিক্ষা ব্যবস্থা অন্যান্য দেশের তুলনার আধুনিক এবং অনেক এগিয়ে। উচ্চশিক্ষা আকাঙ্ক্ষীদের জন্য এটি স্বর্গ রাজ্যে পরিণত হয়েছে। দেশটিতে ২০১৭-এর পূর্ব পর্যন্ত পড়াশোনার জন্য টিউশন ফি লাগত না তবে ইউরোপের বাইরের দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য ২০১৭ সাল থেকে টিউশন ফি চালু হয়েছে।
বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের জায়গা হতে পারে ফিনল্যান্ড। আপনি যদি আন্ডারগ্রাজুয়েট অথবা গ্র্যাজুয়েট হয়ে থাকেন আজই উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ নিতে পারেন। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে গবেষণার কাজে রয়েছে অফুরন্ত সুযোগ।
ছবি- জসিম উদ্দিন সরকার
ফিনল্যান্ডে প্রতিষ্ঠিত একজন সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন সরকার সম্প্রতি একুশে টেলিভিশন অনলাইনকে জানান, ফিনল্যান্ডে লেখাপড়া করার খরচ আন্ডার গ্রাজুয়েট প্রোগ্রামে ব্যয় বছরে ৮ থেকে ১০ হাজার ইউরো। শিক্ষার্থী যদি স্কলারশি পায় তাহলে এক বছরের 'টিউশন ফি' কমে আসবে। স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামে খরচ পড়বে একই। তবে নির্ভর করছে শিক্ষার্থীর পড়াশোনার উপরে। শিক্ষার্থী চাইলে স্কলারশিপের মাধ্যমে সেটা কমিয়ে আনতে পারে।
যেসব বিষয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ রয়েছে-
শিক্ষা পদ্ধতি:
দুটি সেমিস্টারে ফিনল্যান্ডের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা হয়।
এগুলো হচ্ছে-শরৎকালীন সেমিস্টার : আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত
বসন্তকালীন সেমিস্টার : জানুয়ারি থেকে জুলাই
যেসব বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে
শিল্পকলার ইতিহাস, সামাজিক গবেষণা পদ্ধতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্র ও সমাজ, গণতন্ত্র ও বৈশ্বিক পরিবর্তন উন্নয়ন অধ্যয়ন, গণমাধ্যম ও বিশ্ব যোগাযোগ, সংবাদমাধ্যম অধ্যয়ন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক আইন, আন্তর্জাতিক গণআইন, মেডিকেল ফিজিক্স অ্যান্ড কেমেস্ট্রি, জনস্বাস্ত্য, প্যাথলজি, মহাকাশ গবেষণা, বায়োকেমেস্ট্রি, খাদ্যবিজ্ঞান, খাদ্য রসায়ন, জীব-প্রযুক্তি, জৈব তথ্যপ্রযুক্তি, বাস্তুবিদ্যা, পরিবেশবিজ্ঞান, জীববৈচিত্র্য, জৈব রসায়ন ও রাসায়নিক বিশ্নেষণ, জৈব রসায়ন ও রাসায়নিক জীববিজ্ঞান, তড়িৎ তথ্যপ্রযুক্তি, ফলিত গণিত পরিসংখ্যান ইত্যাদি।
শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যম
সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতক পর্যায়ের দু’একটি প্রোগ্রাম ইংরেজী মাধ্যমে হলেও বেশির ভাগ কোর্সই ফিনিস কিংবা সুইডিশ ভাষায় হওয়ায় এবং ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয় বলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ কিছুটা সীমিত। তবে কেউ যদি ফিনিস কিংবা সুইডিস ভাষায় পারদর্শী হয় তবে তার জন্য স্নাতক পর্যায়ে রয়েছে শিক্ষার অবারিত সুযোগ রয়েছে।
ভাষা গত দক্ষতা
ফিনল্যান্ডের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষার জন্য ইংরেজি কোর্স রয়েছে। তবে বেশিরভাগ কোর্সই ফিনিশ কিংবা সুইডিশ ভাষায় পড়ানো হয়, বিশেষ করে ব্যাচেলর পর্যায়ে। তবে এপ্লাইড সায়েন্স ইউনিভার্সিটিতে ফিনিশ ভাষার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষায়ও বেশ কয়েকটি ব্যাচেলর কোর্স রয়েছে। ভর্তির আবেদন করার আগে আপনি যে কোর্সটি করতে চাচ্ছেন তা ইংরেজি, সুইডিশ না ফিনিশ ভাষায় পড়ানো হয় তা জেনে নিতে হবে। এ ছাড়া ফিনল্যান্ডের মানুষের সঙ্গে ভালোভাবে মেলামেশা করা এবং চাকরির জন্য ফিনিশ ভাষার প্রয়োজন পড়ে।
স্নাতক স্তরে ভর্তির যোগ্যতা
এদেশের অধিকাংশ স্নাতক কোর্সই কর্মদক্ষতা তথা পলিটেকনিক ভিত্তিক। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, এখানে স্নাতক স্তরে ভর্তি হওয়ার জন্য ভর্তি পরিক্ষা দিতে হয়। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রথমে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। আবেদনপত্র পূরণের সময় পছন্দের ক্রমানুসারে ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নির্বাচন করা যায়। স্নাতক কোর্সে ভর্তির জন্য টোফেল এ ৫৫০ স্কোর কিংবা আইইএলটিএস-এ কমপক্ষে ৬.০ স্কোরসহ এইচএসসি বা এর সমমান শিক্ষাগত যোগ্যতার যেকোন ব্যক্তি আবেদন করতে পারবে।
আবেদনের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়
আবেদন করার সময় একজন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ চারটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চারটি বিষয় পছন্দ করতে পারবে। তবে যেহেতু দ’টার বেশি বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়, সে জন্য এক ও দুই নম্বর পছন্দের তালিকায় একটি বিষয় ও দু’টি ভিন্ন ভিন্ন ইউনিভার্সিটি এবং তিন ও চার নম্বর পছন্দের তালিকায় আরেকটি বিষয় ও দুটি ভিন্ন ভিন্ন ইউনিভার্সিটি পছন্দ করলে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
অনলাইনে আবেদন করার পর এসএসসি, এইসএসসি-এর মার্কশিট, সার্টিফিকেট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রসহ যে বিশ্ববিদ্যালয়টি পছন্দের তালিকায় প্রথম থাকবে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি অফিসের ঠিকানায় পাঠিয়ে দিতে হবে। তারপর ওই বিশ্ববিদ্যালয় আবেদনকারীকে ভর্তি পরিক্ষার তারিখ ও সময় জানিয়ে ইমেইল করবে কিংবা চিঠি পাঠাবে। ভর্তি পরীক্ষায় সাধারণত সাধারণ গণিত, আইকিউ (IQ), বিশ্লেষণাত্মক প্রশ্ন (Analytic Questions) এবং বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন থাকে। ভর্তি পরিক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের উপর ভিত্তি করে পছন্দের ক্রমানুসারে যেকোন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ দেয়া হয়। ভর্তি পরীক্ষা সাধারণত এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে হয়ে থাকে। আর অনলাইন আবেদন করার শেষ সময় সাধারণত ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ থাকে।
স্থায়ি বসবাসের সুযোগ
দেশটিতে পাঁচ বছর থাকার পর স্থায়ী বসবাসের উপযোগী হিসেবে বিবেচিত হবে। এ জন্য শিক্ষার্থীকে অবশ্যই ফিনিস ভাষা জানতে হবে। উচ্চ শিখার জন্য ফিনল্যান্ড গিয়ে আনুমানিক পাঁচ হাজার বাঙালি শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছে।এদের বেশির ভাগ ফিনল্যান্ডের রাজধানীর হেলসিংকিতে থাকেন।
আবেদনপত্র জমা ও ভর্তি প্রক্রিয়া
ফিনল্যান্ডের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি হওয়ার জন্য সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র ডাউনলোড করতে হবে। আবার কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি অনলাইনে আবেদন করতে হয়। তাছাড়া কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডাক যোগে মুদ্রিত আবেদন ফরমও সংগ্রহ করা যেতে পারে। প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্রসহ যথাসময়ে আবেদন করার পর অপেক্ষায় থাকতে হবে অফার লেটারের জন্য। তারা না জানানো পর্যন্ত অপেক্ষার পালা। তবে আবেদন করার পর থেকে ভিসা পাওয়া পর্যন্ত প্রায় বছর খানেক সময় লেগে যেতে পারে। আবেদন করার আগে ভালভাবে দেখে বুঝে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করতে হবে। কারণ কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার জন্য ফি পরিশোধ করতে হয়।
বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি
সাধারণত মাস্টার্স কোর্সে পড়াশুনার জন্য বৃত্তি পাওয়া যায় না একমাত্র ইউরোপীয় ইরাসমাস বৃত্তি ছাড়া। সরাসরি ডক্টরাল কোর্সে পড়াশুনা করার জন্যও বৃত্তি পাওয়া বেশ কঠিন এবং তীব্র প্রতিযোগিতামূলক। কিন্তু এইখানে মাস্টার্স করার পর ডক্টরাল কোর্সের জন্য আবেদন করলে বৃত্তি পাওয়া অনেকটা সহজ হয়ে যায়।
খাওয়া-দাওয়া, আবাসন ও অন্যান্য খরচ
বৃত্তি না পাওয়া গেলে শুধু থাকা খাওয়ার খরচ নিজে ব্যবস্থা করতে পারলেই পড়াশুনা চালিয়ে নেয়া সম্ভব এখানে। প্রতি মাসে থাকা খাওয়ার জন্য গড়ে ৩৫০- ৩৭০ ইউরো খরচ পড়ে। তবে শেয়ারে থাকলে খরচ অনেক কম পড়বে। সেক্ষেত্রে আবাসিক ভাড়া: ২২০-২৪০ ইউরো, খাওয়া খরচ: ৮০-৯০ ইউরো এবং
আনুসঙ্গিক খরচ
২০-৪০ ইউরোর মধ্যে রাখা যাবে। স্বাস্থ্যসেবার জন্য বাৎসরিক ২৫ থেকে ৭৫ ইউরো ব্যয় হতে পারে। এখরচের হিসেবটা আনুমানিক একজনের একা থাকার ক্ষেত্রে বিবেচ্য। তাছাড়া শহর ভেদে এ খরচ কম-বেশি হতে পারে। এদেশে শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য স্টুডেন্ট এপার্টমেন্ট আছে। সাধারণত শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই এধরণের আবাসনে বসবাস করে। আর স্টুডেন্ট এপার্টমেন্টগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের আশে পাশে হওয়াতে যাতায়াত খরচ অনেকটা কমে যায়। তবে এদেশে দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক যাতায়াত কার্ডের ব্যবস্থা রয়েছে। এগুলো অনেকটাই সাশ্রয়ী ও সবধরনের যানবাহনের জন্য ব্যবহার করা যায়।
খণ্ডকালীন চাকরির সুবিধা
সাধারণ সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজের আইনি বৈধতা রয়েছে। তবে চেনা পরিচিত লোকজন না থাকলে নতুন অবস্থায় এসে কাজ পেতে সমস্যা হয়। নূন্যতম ৬ মাসের খরচের অর্থ সঙ্গে নিয়ে এলে অনিশ্চয়তা অনেকটা কেটে যায়। কারণ তত দিনে একটা কাজ জুটে যায়।
ভিসা প্রক্রিয়া ও ব্যাংক ব্যালেন্স
বাংলাদেশে ফিনল্যান্ডের কোন দূতাবাস না থাকায় স্নাতক স্তরে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিংবা স্নাতকোত্তর স্তরে অফার লেটার পাওয়া শিক্ষার্থীদের ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিস্থ ফিনিস দূতাবাসে ভিসার আবেদনপত্র জমা দিতে হয়। ভিসা আবেদনপত্র এই ওয়েব সাইট http://www.migri.fi থেকে সংগ্রহ করা যায়। স্টুডেন্ট ভিসার জন্য নিরধারিত ফর্ম ডাউনলোড করে স্পস্ট অক্ষরে প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী পূরণ করে জমাদানের সময় শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট ও মার্কশিটগুলোর আসল কপি, বীমাপত্রের (Insurance Paper) আসল কপি, জন্মনিবন্ধন সনদপত্র, ইংরেজী ভাষা দক্ষতার সনদপত্র (টোফেল অথবা আইইএলটিএস-এর স্কোর), ব্যাংক সার্টিফিকেট ও তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্টের মূলকপি দেখাতে হবে। আবেদনপত্র এবং অন্যান্য কাগজপত্রের ২ সেট ফটোকপি ভিসার জন্য নির্ধারিত সাইজের ৪ কপি ছবিসহ জমা দিতে হবে। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের নিজ নামে খোলা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৬,০০০ (ছয় হাজার) ইউরো সমমান টাকা এক থেকে তিন মাস পর্যন্ত জমা রাখার প্রয়োজন হতে পারে। সব রকমের শিক্ষার্থীর জন্য ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া একই ধরনের।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম ও তাদের ওয়েব ঠিকানা
এখানে ফিনল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম ও তাদের ওয়েব ঠিকানাগুলো তুলে দেওয়া হলো যাতে বিস্তারিত জানার জন্য নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব ঠিকানায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা যায়-
1. University of Helsinki (http://www.helsinki.fi/university/)
2. Aalto University (http://www.aalto.fi/en/)
3. Arcada University of Applied Sciences (http://arcada.fi/en)
4. Haaga-Helia University of Applied Sciences (http://www.haaga-helia.fi/en)
5. Helsinki Metropolia University of Applied Sciences (http://www.metropolia.fi/en/)
6. Diaconia University of Applied Sciences
(http://www.diak.fi/en/Pages/default.aspx)
7. Laurea University of Applied Sciences
(http://www.laurea.fi/en/Pages/default.aspx)
8. University of Turku (http://www.utu.fi/fi/Sivut/home.aspx)
9. Turku University of Applied Sciences
(http://www.tuas.fi/public/default.aspx?nodeid=7563)
10. University of Tampere (http://www.uta.fi/english/)
11. Tampere University of Technology (http://www.tut.fi/en/)
12. Tampere University of Applied Sciences (http://www.tamk.fi/en)
13. University of Jyvaskyla (https://www.jyu.fi/en/)
14. Jyvaskyla University of Appliied Sciences (http://www.jamk.fi/english/)
15. University of Oulu (http://www.oulu.fi/english/)
16. Oulu University of Applied Sciences (http://www.oamk.fi/english/)
17. Abo Akademi University (http://www.abo.fi/?lang=en)
18. Lappeenranta University of Technology (http://www.lut.fi/web/en/)
19. University of Eastern Finland (http://www.uef.fi/en/home)
20. Satakunta University of Applied Sciences (http://www.samk.fi/english)
21. Centria University of Applied Sciences
(http://web.centria.fi/Default.aspx)
22. Hamk University of Applied Sciences
(http://portal.hamk.fi/portal/page/portal/HAMK/In_English)
23. Kajaani University of Applied Sciences (http://www.kamk.fi/en)
24. Karelia University of Applied Sciences (http://www.karelia.fi/en/)
25. Kemi-Tornio University of Applied Sciences
(http://www.tokem.fi/In-English/Home)
26. Kymenlaakson Unive
কেআই//